গত বছর অ্যাপল তাদের স্মার্টফোনের সাথে চার্জ করার এডাপ্টার (চার্জার) না দেওয়ার ঘোষণা দিলে স্যামসাং এর পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে ওই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করা হয়েছিল। কিন্ত বছর ঘুরতেই খোদ স্যামসাংও সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল।
ফলে বাজারে নতুন আত্মপ্রকাশ করা গ্যালাক্সি এস সিরিজ এর এস২১, এস২১+ এবং এস২১ আল্ট্রার কোনোটির বক্সেই চার্জার এডাপ্টার ও হেডফোন থাকছে না।
বিশেষত উপমহাদেশের স্বল্প বাজেটের ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখেই স্যামসাং এই পরিকল্পনা নিয়েছে। বক্সে একটি “সি-টাইপ” চার্জিং তার দেওয়া থাকলেও সেটির এডাপ্টার দেওয়া হবে না। অর্থাৎ যদি ক্রেতা পূর্ব থেকে একজন স্মার্টফোন ব্যবহারকারী না হয়ে থাকেন তাহলে তাকে একটি চার্জার এডাপ্টার পৃথকভাবে কিনে নিতে হবে।
আন্তর্জাতিক বাজারে স্যামসাং তার পৃথক দ্রুত চার্জ করার ক্ষমতা সম্পন্ন ২৫ ওয়াটের এডাপ্টার খুচরা বিক্রয়মূল্য হ্রাস করলেও ভারতীয় ওয়েবসাইটে এখনো পূর্বতন মূল্যই প্রদর্শিত হচ্ছে।
স্যামসাং এর ব্যয় সংকোচন নীতি
বিগত ১২-১৮ মাস যাবৎ কোনো ঘোষণা ছাড়াই স্যামসাং তাদের ফোন বক্সের সাথে দেওয়া সহায়ক যন্ত্রাংশ কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এই তালিকায় প্রথমেই আছে তথ্য আনাদ প্রদানের জন্য দে্রয়া সহায়ক ওটিজি ক্যাবল। যদিও কোম্পানির প্রযুক্তিগতভাবে শীর্ষমানের ফোনগুলোর মূল্য ক্রমশই বৃদ্ধি পেয়েছে।
ওটিজির পর ফোনে পেছনের বর্ণিল কভার ছাড়াই বাজারে ছাড়া হয় স্যামসাং এর স্বল্প থেকে উচ্চ বাজেটের সব ফোন। কিন্ত এক্ষেত্রেও ফোনে দাম পূর্বের মতোই ছিল স্থির।
অবশেষে টেক বিশেষজ্ঞদের ধারণাকে সত্যি করে দিয়ে আইফোন ১২ সিরিজের মতো চার্জার ও হেডফোন ছাড়াই বাজারে এল এস সিরিজ।
কেন গুরুত্বপূর্ণ এই সিদ্ধান্ত
অ্যাপল কোম্পানির ক্ষেত্রে চার্জার না দেওয়ার সিদ্ধান্ত ব্যাপক সমালোচিত হলেও স্যামসাং এর এই সিদ্ধান্তের একটি ইতিবাচক দিক রয়েছে। স্যামসাং এর এই সিদ্ধান্তের পেছনে অন্যতম কারণ প্রযুক্তির সার্বজনীনতা অর্জন। অ্যাপল তার চার্জিং প্রযুক্তি এবং দ্রুত চার্জ করার সুবিধার বিষয়টিকে খুব গুরুত্বের সাথে প্রচার না করলেও এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারকারী ব্র্যান্ডসমূহ এক্ষেত্রে ছিল অগ্রগামী।
অন্যান্য ব্র্যান্ডের মতো স্যামসাংও এক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিল না। কিন্ত এতদিন দ্রুত চার্জ করার সুবিধা উচ্চমূল্যের ফোন ব্যবহারকারীদের জন্য অনেকটা সংরক্ষিত সুবিধা হিসেবে বিবেচিত হলেও এখন সেটি সবার জন্য সার্বজনীর প্রয়োজন হিসেবে বিবেচিত হবে।
একজন ব্যবহারকারী মডেল পরিবর্তন করে স্যামসাং ফোন ক্রয় করলে তার বাড়তি খরচও বেঁচে যাবে।
এই সিদ্ধান্তের পেছনে পরিবেশগত দিকটিও লক্ষ্যণীয়। প্রতিবছর প্রচুর ই-বর্জ্য পরিবেশে নিক্ষিপ্ত হচ্ছে। স্যামসাং সহ অন্যান্য মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারণ প্রতিষ্ঠানগুলো চেষ্টা করে যাচ্ছে এই ই-বর্জ্য কমিয়ে আনার।
স্যামসাং এর মতে চার্জার এবং হেডফোন বাড়তি তৈরি করতে না হলে পৃথিবী বেঁচে যাবে বিপুল পরিমাণ বর্জ্যের হাত থেকে।
আবার ক্রেতার দিক থেকে প্রতিবার ফোনের সাথে একটি বাড়তি চার্জার ক্রয়ের ফলে পূর্বের চার্জারটি পড়ে থাকতে হচ্ছে না। তবে চার্জার না দেওয়ার পরেও মূল্য আগের মতোই উর্ধ্বগামী থাকার বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে কিছুটা সমালোচনা হয়ে