হাসি অনেক রকমের হয়, ভদ্র হাসি থেকে শুরু করে আনন্দের সময় চিৎকার করে হাসি পর্যন্ত। কিন্তু উপযুক্ত পরিস্থিতিতে হাসতে জানে না রোবট। তাই বিজ্ঞানীরা রোবটকে সঠিক সময়ে হাসার জন্য একটি এআই সিস্টেম তৈরির চেষ্টা করছেন, যার মাধ্যমকে সে সঠিক সময়ে সঠিক উপায়ে হাসার মতো সূক্ষ্ম বিষয়গুলোকে বুঝতে পারে।
“হাস্যোজ্জ্বল রোবট”-এর পেছনের কাজ করছে “এরিকা” নামের একটি দল। তারা বলছেন, “এই সিস্টেমটি মানুষ এবং এআই সিস্টেমের মধ্যে স্বাভাবিক কথোপকথনকে আরও উন্নত করতে সহায়তা করবে।”
“এরিকা” দলের প্রধান এবং কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টর কোজি ইনোউ দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, “আমরা মনে করি কথোপকথনমূলক এই এআই প্রযুক্তির গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে সহানুভূতি। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, শুধুমাত্র একটি উপায়েই রোবট তার ব্যবহারকারীর প্রতি সহানুভূতিশীল হতে পারে, সেটি হচ্ছে তাদের সঙ্গে হাসি ভাগ করে নেওয়া।”

ন্যু এবং তার সহকর্মীরা তাদের তৈরি এআই সিস্টেমকে কথোপকথনমূলক হাসি শেখানোর চেষ্টা করছেন। তাই তারা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং রোবটের মধ্যে ৮০ টিরও বেশি স্পিড-ডেটিং ডায়ালগ থেকে প্রশিক্ষণের তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এগুলোর মাধ্যমেই তারা রোবটকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।
তাদের কথোপকথন থেকে নেওয়া তথ্যের মধ্যে ছিল- একক হাসি, সামাজিক হাসি (যেখানে হাস্যরস জড়িত নয় বা ভদ্র বা বিব্রত হাসি) এবং আনন্দের হাসি। এই তথ্যগুলো মেশিন লার্নিং সিস্টেমকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। যাতে রোবট এবং মানুষের কথোপকথনের মধ্যে কখন হাসতে হবে এবং কি ধরণের হাসি হাসতে হবে তা বেছে নিতে পারে।
ডক্টর কোজি ইনোউ বলেন, “এই কাজে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল হাসি ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য সঠিক বিষয়টা চিহ্নিত করা। এই কাজটি আসলে সহজ নয়। কারণ বেশিরভাগ হাসির আসলে কোনো ভাগ করা হয় না।”
তিনি আরও বলেন, “হাসি রোবটকে একটি স্বতন্ত্র চরিত্র দিতে সাহায্য করবে। আমরা মনে করি রোবট তাদের কথোপকথন এবং আচরণের মাধ্যমে হাসি, চোখের দৃষ্টি, অঙ্গভঙ্গি এবং কথা বলার ধরন দেখাতে পারবে। আর একটি রোবটের সঙ্গে স্বাভাবিক কথোপকথন শুরু হতে ২০ বছরের মতো সময় লাগে। যেমনটা আমরা একজন বন্ধুর সঙ্গে করি।”