যুক্তরাষ্ট্রের স্টার্ট আপ ওপেন এআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে ভারতের বৃহৎ সংবাদমাধ্যমগুলো। তাদের লেখা ও কন্টেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে চ্যাটজিপিটির মূল উদ্যোক্তা কোম্পানির বিরুদ্ধে।
গত বছরের নভেম্বরে ভারতের সবচেয়ে বড় সংবাদ সংস্থা এসিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল (এএনআই) প্রথম ওপেন এআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করে। ভারতে এরকম মামলার প্রথম ঘটনা ছিল এটি। এখন অন্যান্য সংবাদমাধ্যমগুলোও এএনআইয়ের সঙ্গে যুক্ত হতে যাচ্ছে।
মামলায় এএনআইয়ের অভিযোগ করেছে যে, ওপেন এআই তাদের কপিরাইটযুক্ত লেখা অবৈধভাবে ব্যবহার করছে। ক্ষতিপূরণ হিসেবে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানটির কাছে দুই কোটি রুপি দাবি করেছে।
বিট্রিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, চ্যাটজিপিটি যখন ভারতে নিজেদের ব্যবসা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে, তখনই তাদের বিরুদ্ধে এই মামলার বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। জরিপ অনুসারে, ভারতে চ্যাটজিপিটির সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ব্যবহারকারী রয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কন্টেন্ট চুরির দায়ে ওপেন এআইকে বিচারের মুখোমুখি করতে চাচ্ছে ভারতের সবচেয়ে পুরোনো দৈনিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, দ্য হিন্দু, দ্য ইন্ডিয়ান টুডে গ্রুপ, ধনকুবের গৌতম আদানির মালিকানাধীন এনডিটিভিসহ আরও এক ডজনের বেশি সংবাদমাধ্যম।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ওপেন এআই দাবি করছে, সর্বত্র গ্রহণযোগ্য আইন ও দৃষ্টান্ত মেনে ইন্টারনেটে সচরাচর পাওয়া যায় এমন উপাত্তই কেবল তারা ব্যবহার করছেন।
এদিকে, ৬ জানুয়ারি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ছিলেন ওপেন এআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্যাম অ্যাল্টম্যান। সেখানে তিনি স্বল্প-খরচের এআই বাস্তুসংস্থান তৈরিতে ভারতীয় পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন দেশটির আইটিমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে।
স্যাম অ্যাল্টম্যান বলেন, “ভারতের উচিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিপ্লবের নেতৃত্ব দেওয়া দেশের একটি হওয়া। কারণ দেশটি কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার একটি বড় বাজার।”
ইন্টারনেট চষে উপাত্ত এবং তথ্য সংগ্রহের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় চ্যাটজিপিটির মতো চ্যাটবটকে। সেক্ষেত্রে ভারতের ৪৮৫টি সংবাদভিত্তিক চ্যানেল ও খবরের কাগজ যেসব লেখা ও কন্টেন্ট প্রকাশ করে, সেগুলো চ্যাটজিপিটির উপাত্ত সংগ্রহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বলতে গেলে, চ্যাটবটের জন্য একটি উর্বর ভূমি হচ্ছে ভারত।
কিন্তু কী কী তথ্য চ্যাটজিপি সংগ্রহ করে বৈধভাবে ব্যবহার করতে পারবে, সে সম্পর্কে কোনো পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত এক ডজন মামলা রয়েছে চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে। বিভিন্ন প্রকাশক, শিল্পী ও সংবাদসংস্থা এসব মামলা করেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের মতো তাদের অভিযোগও একই।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে মামলা করে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস। ওপেন এআই ও মাইক্রোসফটের কাছে তারা কোটি কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে।