প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিপুল রপ্তানি সম্ভাবনা কাজে লাগাতে আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পাটজাত পণ্যের বহুমুখীকরণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
পাটকে পরিবেশবান্ধব পণ্য হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, “বিশ্বে পাটজাত পণ্যের বিশাল সম্ভাবনাময় বাজার রয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত পাট কৃষিপণ্য বা রপ্তানিমুখী পণ্য হিসেবে সুযোগ-সুবিধা পায় না। তবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কৃষিপণ্য ও রপ্তানি পণ্য হিসেবে পাটের জন্য প্রণোদনা নিশ্চিত করব।”
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় পাট দিবস উপলক্ষে ৬টি পাটকল ও ৩ দিনব্যাপী বহুমুখী পাটপণ্য মেলা-২০২৪ উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতি বছর ৬ মার্চ জাতীয় পাট দিবস পালিত হয়। এ বছর “বঙ্গবন্ধুর সোনার দেশ, স্মার্ট পাট শিল্পের বাংলাদেশ” প্রতিপাদ্যে দিবসটি উদযাপিত হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ যদি পাট ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন যতটা সম্ভব বাড়াতে পারে, তাহলে দেশে পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাড়ানোর পাশাপাশি বিপুল রপ্তানি সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “পাটের নতুন রপ্তানি বাজার অনুসন্ধানে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে, বিভিন্ন দেশে কী ধরনের পণ্যের চাহিদা রয়েছে তা মূল্যায়ন করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন করতে হবে।”
পাটকে সোনালি আঁশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই সোনালি আঁশ বাংলাদেশের জন্য সোনালি দিন বয়ে আনতে পারে। তাই আমাদের এর যথাযথ ব্যবহার করতে হবে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা যদি আমাদের রপ্তানি ঝুড়িতে বৈচিত্র্য আনতে চাই, আমি মনে করি পাট ও পাটজাত পণ্য এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।”
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) ইজারা নেওয়া পাটকলগুলো নতুন পণ্য উৎপাদন, নতুন বাজার অনুসন্ধান এবং পাটজাত পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধিতে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী পাট খাতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১১টি ক্যাটাগরিতে ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এবং পাট সংশ্লিষ্ট ৯টি সমিতির মাঝে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি গোলাম দস্তগীর গাজী এবং বাংলাদেশ পাটকল সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন বক্তব্য দেন। সূচনা বক্তব্য রাখেন বস্ত্র ও পাট সচিব আব্দুর রউফ।
বিজেএমসির ইজারা নেওয়া নতুন ৬টি পাটকল হলো- চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় কেএফডি জুট মিলস লিমিটেড, নরসিংদীর ঘোড়াশালে বাংলাদেশ জুট মিলস লিমিটেড, সিরাজগঞ্জের রায়পুরে জাতীয় জুট মিলস লিমিটেড, যশোরের রাজঘাটে যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও কার্পেটিং জুট মিলস লিমিটেড এবং খুলনার খালিশপুরের দৌলতপুর জুট মিলস লিমিটেড।