মাত্র ১২ বছর বয়সেই চোরদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল মো. বিল্লাল হোসেন (২২)। শারীরিক গঠনে পাতলা এবং ছোটখাটো হওয়ায় তার কাজ ছিল বহুতল ভবন বেয়ে উঠে ঘরের ভেতরে ঢুকে সহযোগীদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া। দেয়াল বেয়ে বহুতল ভবনে অনায়াসে উঠতে পারার দক্ষতার জন্য তার নাম হয় “স্পাইডারম্যান”। চুরির কাজে বিশেষজ্ঞ হওয়ার পর ওই দল ছেড়ে নিজেই দল গড়ে বিল্লাল।
সম্প্রতি চুরির একটি মামলার তদন্ত করতে নেমে ময়মনসিংহ থেকে বিল্লাল ও তার সহযোগী মো. নুরুল্লাহ রাকিবকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে চুরি করা বিভিন্ন মালামাল ও তাদের কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামও উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, বিল্লাল গত ১০ বছরে পাঁচ শতাধিক চুরির সঙ্গে জড়িত ছিল।
উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন জানান, শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের নভোএয়ারের ফ্লাইট অপারেশন অফিসে চুরি হয়। বিল্লাল ও রাকিবকে গ্রেপ্তারের পর তাদের কাছ থেকে অফিস থেকে চুরি যাওয়া একটি ল্যাপটপ ও গ্রিল কাটার গিয়ার পাওয়া যায়।
পুলিশ জানায়, সিঁড়ি ছাড়াই বহুতল ভবনে উঠতে পারদর্শী বিল্লাল। দেয়াল কিংবা পাইপ বেয়ে সে অনায়াসেই যেকোনো ভবনের অন্তত পাঁচতলা পর্যন্ত উঠে যেতে পারে।
মোহাম্মদ মহসীন জানান, বিভিন্ন অফিসই মূলত বিল্লালের টার্গেট। রাতের বেলা অফিসে লোকজন থাকে না। তাই এসব অফিসে গিয়ে ল্যাপটপ চুরি করাই তার প্রধান উদ্দেশ্য। অনেক সময় ল্যাপটপের ক্রেতা না পাওয়ায় ২০০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যেও সে ল্যাপটপ বিক্রি করেছে।
এছাড়া, বিল্লালের দলে আরও ১০ জন সদস্য আছে বলেও জানায় পুলিশ।
ওসি মোহাম্মদ মহসীন জানান, বিল্লালের কাছ থেকে কারা ল্যাপটপ কিনেছে সেটিকে অগ্রাধিকার দিয়ে তার ওপর ভিত্তি করে পুলিশ চোরাই মালামাল ক্রেতাদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি বিল্লালের এই চোর চক্রের সঙ্গে আর কারা জড়িত তাদের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।