ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন রেখে সরকারকে আইন প্রণয়নের পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ।
বিচারপতি রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের বেঞ্চ মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সাইবার নিরাপত্তা আইনের একটি মামলায় জামিন আবেদন নিষ্পত্তি করে এ মতামত দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, “ধর্মীয় অবমাননার বিষয়ে আদেশটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু এ বিষয়ে দণ্ডের কোনো বিধান নেই, তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবনসহ জামিন অযোগ্য আইন প্রণয়নের জন্য মতামত দিয়েছেন হাইকোর্ট।”
তিনি জানান, আদালত পর্যবেক্ষণে ২০২৩ সালের সাইবার নিরাপত্তা আইনে কোরআন শরিফ, নবি-রাসুলসহ সব ধর্মগ্রন্থের বিষয়ে কটূক্তি করলে এই আইনের ধারায় জামিন অযোগ্যসহ সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান করতে মত দিয়েছেন আদালত।
আদালত বলেছেন, পূর্ববর্তী আইনে জামিন অযোগ্য ধারা ছিল। বর্তমান আইনে ধর্মীয় অনুভূতির বিষয়ে কটূক্তি করলে জামিনযোগ্য ধারা হওয়ায় অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে।
মামলার বরাতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক জানান, ফেসবুকে নবিকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে গত বছরের নভেম্বরে মো. সেলিম খান নামে কুষ্টিয়ার এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেই মামলায় নাফিসা চৌধুরী নামে এক নারীর কথা আসে, যদিও তাকে আসামি করা হয়নি।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থানায় ওই মামলা দায়ের করেন হানিফ শাহ নামের এক ব্যক্তি। তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক শেখ লুৎফর রহমান গত ৩১ ডিসেম্বর সেলিমের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।
গত ১৩ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ার অবকাশকালীন দায়রা জজ রুহুল আমীন আসামির জামিন আবেদন নাকচ করলে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন সেলিম। তাকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে হাই কোর্ট গত ৮ জানুয়ারি রুল জারি করেন।
মঙ্গলবার সেই রুল নিষ্পত্তি করে সেলিমকে জামিন দেন হাইকোর্ট। আর নাফিসার বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ থাকায় তাকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দিতে তদন্ত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন আদালত।
আদালত পর্যবেক্ষণে এই আইনের ধারা জামিন অযোগ্য করাসহ সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান করার মতামত দেন।