Tuesday, April 22, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

বাসরঘরে বরকে বসিয়ে রেখে দেনমোহরের টাকা নিয়ে ‘পালালেন’ নববধূ!

তামান্নার বিরুদ্ধে চন্দ্রিমা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন মোস্তাফিজুর

আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২১ পিএম

বিয়ের পর ফুলশয্যার জন্য হোটেলকক্ষ ভাড়া নিয়েছিলেন নবদম্পতি। নববধূর হাতে দেনমোহরের টাকাও তুলে দিয়েছিলেন বর। ফুলশয্যার আগে সেই বাসায় রেখে আসার কথা বলে বের হন নববধূ। তবে তারপর আর ফিলে আসেননি তিনি। ঘটনার চার দিন পর পাঠিয়ে দেন তালাকের নোটিশ।

ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহী নগরীতে। এ ঘটনায় গত ২৯ নভেম্বর নগরের চন্দ্রিমা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী বর। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

দেনমোহরের টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়া নববধূর নাম তামান্না আক্তার ওরফে ফেন্সি (৩১)। তার বাড়ি নগরের মেহেরচণ্ডী পূর্বপাড়ায় ভুক্তভোগী ব্যক্তির নাম মোস্তাফিজুর রহমান (৫৮)। তার বাড়ি নওগাঁয়, তবে চাকরির সূত্রে থাকতেরন রাজশাহীতে। মোস্তাফিজুর রহমানের রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের মশক শাখার মাঠকর্মী হিসেবে চাকরি করেন তিনি।

স্বজন ও পুলিশের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো জানিয়েছে, মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন তামান্না আক্তার।

মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, তিনি আগেও একটি বিয়ে করেছেন। তার স্ত্রী অসুস্থ। তাই তিনি দ্বিতীয় বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন।

প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নিয়েছেন কি না—জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আনুষ্ঠানিকভাবে তার কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নেয়নি। কিন্তু এই বিয়ের ব্যাপারে সে সবই জানে।”

অন্যদিকে, তামান্না আক্তারের বিবাহবিচ্ছেদ হয় ১৪ বছর আগে। তারা ১৩ বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে।

বছর দুয়েক আগে তামান্নার সঙ্গে পরিচয় হয় মোস্তাফিজুরের। সম্প্রতি তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন বলে জানান মোস্তাফিজুর।

মোস্তাফিজুর রহমান দাবি করেন, দেনমোহরের ৩ লাখ ৩ হাজার টাকা তিনি নগদ পরিশোধ করেছেন। বাজার করার জন্য ৬০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এমনকি বাড়ির বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার জন্যও টাকা নিয়েছেন। সব মিলিয়ে তার কাছ থেকে চার লাখ টাকার কিছু বেশি নিয়েছেন তামান্না।

দেনমোহরের টাকা নিয়ে বাড়িতে রাখতে গিয়ে তামান্না আর ফিরে না আসায় চার দিন অপেক্ষার পর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, “পাঁচ লাখ টাকা দিলে তামান্না আমাকে বিয়ে করবে এমন শর্ত দিয়েছিল। এ টাকায় সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন বাজারে দোকান করতে চায়। তার প্রস্তাবে আমি রাজি হয়ে যাই। এরপর গত ২০ নভেম্বর রাতে তামান্না আমাকে মেহেরচণ্ডী এলাকার একটি কাজি অফিসে নিয়ে যায়। সেখানে আমি নগদ ৩ লাখ ৩ হাজার টাকা দেনমোহরে বিয়ে করি। বিয়ের পর শহরের একটি তিন তারকা হোটেলে ফুলশয্যার কথা ছিল। বাড়িতে অসুস্থ স্ত্রী আছে এই জন্য আমি হোটেলে ফুলশয্যা করতে চেয়েছিলাম। ১০ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে হোটেলে রুম ভাড়া করেছিলাম। তামান্না বাড়ি যাওয়ার পর অসংখ্যবার ফোন দিলেও সে আমার ফোন ধরেনি।”

তিনি জানান, বিয়ের চার দিন পর তামান্নার পাঠানো তালাকের নোটিশ হাতে পেয়েছেন। তামান্না এই তালাকে সই করেছেন।

মোস্তাফিজুর দাবি করেন, এখন তিনি শুনতে পাচ্ছেন যে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এভাবে টাকা হাতিয়ে নেওয়া তামান্নার ব্যবসা।

তবে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা বলে প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন তামান্না আক্তার।

বিষয়টি নিয়ে চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান প্রথম আলোকে বলেন, “একজন অফিসারকে এ ঘটনা তদন্ত করছেন। যতটুকু জানা গেছে, ঘটনা সত্য। তবে একটা মেয়ে বিয়ে করতেও পারেন, আবার তালাকও দিতে পারেন। এখন দেখা যাক তদন্ত শেষে কী দাঁড়ায়, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

   

About

Popular Links

x