Friday, April 18, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

সুন্দরবনের আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে, পর্যবেক্ষণ চলছে

স্থানীয়দের মতে, শাপলার বিল ও কলমতেজী এলাকার প্রায় ১০ একর বনভূমি পুড়ে গেছে

আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৫, ১১:৪৪ এএম

পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের তেইশের ছিলা-শাপলার বিল এলাকায় লাগা আগুন নিভেছে। তবে ফায়ার সার্ভিস ও বন কর্মীরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে এখনও বনে রয়েছেন। তবে আগুনে বনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও কতটুকু এলাকা পুড়ছে সে বিষয়ে বন বিভাগ সুস্পষ্ট জানায়নি। তবে স্থানীয়রা বাসিন্দারা বলছেন, শাপলার বিল ও কলমতেজী এলাকার প্রায় ১০ একর বনভূমি পুড়ে গেছে।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, “বনের কোথাও জ্বলন্ত আগুন নেই। রাতভর কাজ করে ভোররাতে আগুন সম্পূর্ণ নেভানো হয়েছে। তারপরও ফায়ার সার্ভিস ও বন কর্মীরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে এখনও বনে রয়েছেন৷ গাছের গোড়ায় গোড়ায় পানি দেওয়া হচ্ছে। আর কোথাও ধোয়া ওঠে কি না তা দেখা হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “সোমবার সন্ধ্যার পর বনের বিভিন্ন স্থানে ধোঁয়া দেখা গেছিল। যার কারণে সম্পূর্ণ নেভাতে রাতভর কাজ করতে হয় ফায়ার সার্ভিস ও বন বিভাগকে। ভাটায় নদী শুকিয়ে যাওয়ার কারণে দুপুর দেড়টা থেকে পাম্প চালানো যায়নি। নদীতে জোয়ার আসায়, রাত ৮টার পর আবারও পানি ছেটানো শুরু হয়।”

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন বাগেরহাটের উপ-সহকারী পরিচালক সাকরিয়া হায়দার বলেন, “আগুন নেভাতে খুলনা ও বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট কাজ করে। এখানে বড় সংকট হচ্ছে শুধু জোয়ারের সময় পাম্প চালানো যায়। সোমবার দুপুর দেড়টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পাম্প বন্ধ রাখতে হয়। জোয়ার আসার পর রাতে পাম্প চালু হয়। রাতভর পানি ছেটানো হয়। ভোররাত নাগাদ আগুন ও ধোয়া ওঠা বন্ধ হয়। ভোর রাতে সম্পূর্ণরূপে আগুন নেভানো সম্ভব হয়। তারপরও আমরা বনে থেকে সার্বিক পরিস্থিতি মনিটরিং করছি।”

সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে/ঢাকা ট্রিবিউন

চাঁদপাই রেঞ্জের তেইশের ছিলা-শাপলার বিল শাপলারবিল এলাকায় আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিরুপণে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষক (এসিএফ) দিপন চন্দ্র দাসকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে বনবিভাগ। কমিটিকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এই নিয়ে বনের আগুনের ঘটনা তদন্তে দু’টি কমিটি গঠন করলো বনবিভাগ। গত ২২ মার্চ সুন্দরবনের কলমতেজী এলাকার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায়ও চাঁদপাই রেঞ্জের এসিএফকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি করা হয়। তদন্ত কমিটিকে আগুন বনের কতটা এলাকায় ছড়িয়েছে এবং আগুনের উৎস্যের বিষয়ে বন বিভাগের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করাসহ সামগ্রিক বিষয়ে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

উল্লেখ, গত ২২ মার্চ সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজী বন টহল ফাঁড়ির টেপার বিলে আগুন লাগে। এরপর আগুন ছড়িয়ে পরা বন্ধে পায়ার লাইন কাটা ও আগুন নেভানোর কাজ করা হয়। ২৩ মার্চ সকালে সেই আগুন নেভানো হয়। সুপ্ত আগুন ও ধোয়ার কুন্ডলী খুঁজতে বন বিভাগ ড্রোন ব্যবহার করে। তখন কলমতেজী এলাকা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে তেইশের ছিলা-শাপলার বিলে আগুনের অস্তিত্ব দেখতে পায় বন বিভাগ। তাৎক্ষণিকভাবে বন বিভাগ, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক, ভিটিআরটি, সিপিজি সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। সেখানে আগুন ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে ফায়ার লাইন তৈরি করা হয়। আগুনের  উৎপত্তিস্থল থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে ভোলা নদীতে পাম্প বসিয়ে রাতেই পানি ছিটানো শুরু করে ফায়ার সার্ভিস ও বন বিভাগ। তবে ভোলা নদীতে পানি কম থাকা এবং ভাটার সময় শুকিয়ে যাওয়ায় নিরবিচ্ছন্নভাবে পানি ছেটানো যায়নি। এ কারণে ২৪ মার্চ রাতভর কাজ করতে হয় বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের।

   

About

Popular Links

x