Wednesday, July 09, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ‘বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি: শিল্পী, লেখকদের করণীয়’ শীর্ষক সাহিত্য আলোচনা

আয়োজনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কবি, সাংবাদিক ও সাহিত্যপত্র ‘খনন’-এর সম্পাদক বাদল শাহ আলম

আপডেট : ২১ জুন ২০২৫, ১২:৩৭ পিএম

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়েছে শানু মোস্তাফিজের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংগঠন ‘‘পার’’-এর ব্যতিক্রমধর্মী সাহিত্য আলোচনা।

শুক্রবার (২০ জুন) ‘‘বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি: শিল্পী, লেখকদের করণীয়’’ শীর্ষক এই আয়োজনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কবি, সাংবাদিক ও সাহিত্যপত্র ‘‘খনন’’-এর সম্পাদক বাদল শাহ আলম।

প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী উপস্থাপিত প্রবন্ধে তিনি বিশ্ব রাজনীতি, অর্থনীতি এবং ইতিহাসের নানা বাঁক ধরে শিল্প-সাহিত্যের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করেন। প্রবন্ধটি ছিল তথ্যমূলক, গভীরভাবে চিন্তা উদ্রেককারী এবং উপভোগ্য।

বর্তমানে দেশে সাহিত্যভিত্তিক আলোচনা অনুষ্ঠান ক্রমেই যেন কমে যাচ্ছে। সেই প্রেক্ষাপটে ‘‘পার’’-এর এই ঘরোয়া আয়োজন বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।

আয়োজকদের ভাষ্য অনুযায়ী, সৃজনশীল মানুষদের ভাবনা ও চর্চা সক্রিয় করতে এবং সময়ের প্রেক্ষিতে শিল্পের ভূমিকা পুনর্বিবেচনার জন্যই এই আয়োজন। বাদল শাহ আলমের উপস্থাপিত প্রবন্ধ সেই প্রয়োজনকে অনেকাংশে পূরণ করেছে।

প্রবন্ধে বাদল শাহ আলম সাহিত্যের আদিপর্ব থেকে শুরু করে মধ্যযুগ, রেনেসাঁ, ফরাসি বিপ্লব, মার্কসবাদ, রুশ ও চীনা বিপ্লব পর্যন্ত ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় সমাজ ও শিল্প-সাহিত্যের পারস্পরিক প্রভাব তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “একজন লেখক-শিল্পীকে তার শিল্পকর্ম তৈরির আগে সমাজ, রাজনীতি ও অর্থনীতি গভীরভাবে জানতে হবে এবং বুঝতে হবে। রাজনীতি ও অর্থনীতি জানা না থাকলে কেউ প্রকৃত লেখক হতে পারেন না।”

শেক্সপিয়ারের ‘‘হ্যামলেট’’ ও ‘‘ম্যাকবেথ’’ নাটকের উদাহরণ টেনে তিনি দেখান, কীভাবে সাহিত্যে সময় ও সমাজের চিত্র প্রতিফলিত হয়। তিনি বলেন, “শেক্সপিয়ার রাজতন্ত্র ও ক্ষমতার দ্বন্দ্ব যেভাবে উপস্থাপন করেছেন, তা আজও আমাদের সমাজে ঘটছে।”

আন্তর্জাতিক সমসাময়িক পরিস্থিতির বিশ্লেষণে বাদল শাহ আলম বলেন, “ফিলিস্তিন-ইসরায়েল, ইরান-ইসরায়েল, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এসব আসলে খনিজ সম্পদ ও ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্যের লড়াই। এই পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের বোঝা দরকার, না হলে তাদের মূল্য চুকাতে হবে।”

ভারতের আদিবাসী ও মাওবাদীদের ওপর নিপীড়নের প্রেক্ষাপটে তিনি অরুন্ধতি রায়ের লেখনী ও সক্রিয়তার কথা উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের বায়ান্ন, একাত্তর এবং সাম্প্রতিক গণ-আন্দোলনের সময়ে লেখক-শিল্পীদের সক্রিয় অবস্থানও তুলে ধরেন।

রুশ বিপ্লবের প্রভাব নজরুল ইসলামের কবিতা ও গানে কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে এবং তিরিশের পঞ্চপাণ্ডব কীভাবে সেই প্রভাব আত্মস্থ করে নতুন সাহিত্যধারা তৈরি করেন, তা ব্যাখ্যা করেন তিনি। বিষ্ণু দের কবিতা ও তিরিশের আন্দোলনের প্রসঙ্গও ওঠে আসে তার আলোচনায়।

তিনি বলেন, “২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের সময়ও কিছু গান ও কবিতা রচিত হয়েছে, যদিও পরিমাণে তা অল্প। কিন্তু এই সময়েই সৃষ্টি হতে পারে কালজয়ী সাহিত্য, গান, চলচ্চিত্র।”

   
Banner

About

Popular Links

x