অফিসের বস টানা ৩ বছর নির্ধারিত সময়ের ৫ মিনিট আগে আসতে বাধ্য করায় ওভারটাইমের জন্য মামলা দায়ের করেন কর্মীরা। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে দায়ের করা এই মামলায় জাপানের ফেয়ার ট্রেড কমিশনে, দাবি জানান যাতে তাদের ৩ বছরের ওভারটাইম দেওয়া হয় তাদের। পরে গত বছর নভেম্বর মাসে কর্মীদের উদ্দেশ্যে জাপানের সরকার ৫৯ লাখ টাকা ওভারটাইম হিসেবে দেওয়ার ঘোষণা দেয়।
কোনো সংস্থায় কাজে যোগ দিলে কর্মীদের বেশ কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়। বেসরকারি সংস্থায় চাকরির ক্ষেত্রে কিছু কিছু নিয়মে শিথিল থাকলেও সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে নিয়মের বাঁধন অনেকটাই কড়া থাকে। আর সেই সরকারি সংস্থার অফিসের নিয়মের ফাঁক নজরে এনেই মোটা টাকা আদায় করে নিলো এক কর্মী। জাপানের একটি সরকারি সংস্থার অফিসে যথাযোগ্য চাকরির নিয়ম মানার কারণে মোটা টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হলো ওই সংস্থার বসকে।
আশ্চর্যের বিষয় সেই অফিসের এক কর্মী মামলা করেছিলেন অফিসের বসের বিরুদ্ধে। কারণ কর্মীর বস তাদের অফিসের নির্ধারিত সময়ের ৫ মিনিট আগে আসতে বাধ্য করতেন। জানা যায়, টানা ৩ বছর ধরে এই নিয়ম চলতে থাকে। এরপরে এক নতুন বস আসেন সেই অফিসে। আর তিনিই কর্মীদের মদত দেন যাতে তারা সংস্থার থেকে ওভারটাইম দাবি করেন।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, জাপানের বিভিন্ন শহরে সরকারি কর্মীদের দৈনিক মিটিংয়ের ক্ষেত্রে অফিসের নির্ধারিত সময়ের ৫ মিনিট আগে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ২০২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি একটি নির্দেশিকা অনুযায়ী জাপানের জিন্নান টাউন এবং হোনসু দ্বীপে ১৪৬ জন কর্মী এর শিকার হন। তাদের অফিসে আসার নির্ধারিত সময় ৮টা ৩০ মিনিট হলেও তাদের ৮টা ২৫ মিনিটে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
সেই সময়ের মেয়র হিডিও কোজিমা এই নীতি চালু করেছিলেন। এমনকী বলা ছিল যে আগে না আসতে পারলে চাকরিও চলে যেতে পারে। ২০২১ সালের ১ মার্চ থেকে এই নির্দেশিকা কার্যকর হয়েছে। পরে গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে মেয়র কোজিমা পদত্যাগ করেন। আর তারপরই কর্মীরা তাদের এই দৈনিক ৫ মিনিট করে আগে হাজিরা দেওয়াকে ওভারটাইম হিসেবে তাদের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে তারা এই মামলা দায়ের করেন জাপানের ফেয়ার ট্রেড কমিশনে, দাবি জানান যাতে ৩ বছরের ওভারটাইম দেওয়া হয় তাদের।
গত বছর নভেম্বর মাসে কর্মীদের উদ্দেশ্যে জাপান সরকার ৫৯ লাখ টাকা ওভারটাইম হিসেবে দেওয়ার ঘোষণা করেন। তবে এখনও ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হয়নি কর্মীদের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘটনা ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। শ্রমের নিয়ম ও নীতির যথাযথ অভ্যাসের দাবি জানানো হয়েছে নেটিজেনদের পক্ষ থেকে এবং কর্মীদের অধিকার রক্ষার কথাও বলা হয়েছে।