আগামী নির্বাচনে সাফল্যের জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। বিএনপির বর্ধিত সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় বিএনপির বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে খালেদা জিয়া ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। তিনি বর্তমানে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন।
খালেদা জিয়া বলেন, “দেশ আজ এক সংকটময় সময় অতিক্রম করছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা রাষ্ট্র মেরামতের ন্যূনতম সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার জন্য সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা।”
দলের নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি আপনারা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে আরও উজ্জীবিত হয়ে আগামী নির্বাচনে সাফল্যের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন। এমন কোনো কাজ করবেন না যাতে আপনাদের এত দিনকার সংগ্রাম আত্মত্যাগ বিফলে যায়।”
খালেদা জিয়া বলেন, “আমাদের সবসময় শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সেই উক্তি মনে রাখা দরকার। ব্যক্তির চেয়ে দল বড় দলের চেয়ে দেশ। বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ বিশেষ করে তরুণ সমাজ আজ ইতিবাচক গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে।'
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ বিশেষ করে তরুণ সমাজ আজ এক ইতিবাচক গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সংকীর্ণতা ভুলে বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে একযোগে দেশ ও জাতির স্বার্থে আমাদের কাজ করতে হবে।”
বিএনপির চেয়ারপার্সন বলেন, “দীর্ঘ ৬ বছর পর আপনার আবারও ফ্যাসিস্ট মুক্ত বাংলাদেশে একত্রিত হতে পেরেছেন। আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া আদায় করছি। দীর্ঘ ফ্যাসিবাদের আন্দোলনে যারা শহিদ হয়েছেন এবং সম্প্রতি জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শাসকদের নির্মম দমন-নীপড়নের কারণে গণহত্যায় শহিদ হয়েছেন তাদের প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আহতদের প্রতি জানাচ্ছি আন্তরিক সমবেদনা।”
চিকিৎসার কারণে যুক্তরাজ্যে থাকলে আমি সব সময় আপনাদের সঙ্গে আছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “দীর্ঘ ১৫ বছর যারা গণতন্ত্রের জন্য ও আমার মুক্তির জন্য আমাদের অসংখ্য সহকর্মী প্রাণ দিয়েছেন, জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং প্রায় সোয়া লক্ষ্ মিথ্যা মামলায় জর্জরিত হয়ে এখনও আদালতের বারান্দায় ন্যায় বিচারের জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আপনাদের এ ত্যাগ শুধু দল নয়, জাতি চিরকাল স্মরণে রাখবে।”
পতিত সরকার গণঅভ্যুত্থানের অর্জনকে নস্যাৎ করার গভীর ষড়যন্তে লিপ্ত রয়েছে উল্লেখ করে তিনি সবাইকে নিয়ে এই চক্রান্ত ব্যর্থ করে দিতে আহ্বান জানান।
দেশবাসীকে প্রতিহিংসা, প্রতিশোধ ভুলে বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন।
