Friday, June 20, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

বায়ার্নের মুলার, মুলারের বায়ার্ন

যুগে যুগে জার্মানিতে অনেক তারকা ফুটবলার এলেও খুব কম খেলোয়াড়ই এককভাবে মহাতারকা হয়ে উঠেছেন

আপডেট : ১৬ মে ২০২৫, ০৪:৫৮ পিএম

মিউনিখ শহরটি জার্মানি থেকে আল্পস পর্বতমালা অঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত। ইজার নদীর তীরবর্তী শহরটি শিল্প, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও পরিবহনের দিক থেকে জার্মানির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নগরী। ব্যাভারিয়ার রাজধানী মিউনিখের বাৎসরিক অক্টোবর ফেস্ট (অক্টোবর উৎসব) নামের বিয়ার পানের উৎসবটি তো পৃথিবী বিখ্যাত।

এসব পরিচয় ছাপিয়ে ফুটবলে মিউনিখের খ্যাতি পৃথিবীজোড়া। আল্পস পর্বতমালার উত্তরের এ শহরটির ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ কেবল জার্মানিরই না, গোটা ইউরোপীয় ফুটবলেরই বড় নাম। ঘরোয়া, মহাদেশীয় আর বৈশ্বিক সাফল্যের বিচারে ক্লাবটিকে নির্দ্বিধায় পরাশক্তি আখ্যায়িত করা যায়।

প্রশ্ন হতে পারে, আলাপটা যখন ফুটবলের তখন শুরুতে মিউনিখ নিয়ে বেরসিক বুলি আওড়ানো কেন? কারণ হলো আমরা এখন যার কথা বলব তিনি কেবল বায়ার্নেরই না, গোটা মিউনিখ শহরটিরই প্রতীক হয়ে আছেন। বলছিলাম টমাস মুলারের কথা। যিনি হয়ে উঠেছেন বায়ার্ন মিউনিখ ক্লাবেরই প্রতিচ্ছবি। গত দেড় দশকে জার্মান জাতীয় দলের স্কোয়াডেও মুলারের থাকাটা হয়ে উঠেছিল নিয়ম।

ক্লাব কিংবা জাতীয় দল- জার্মান ফুটবল বরাবরই দলগত খেলার জন্য বিখ্যাত। সে কারণে যুগে যুগে জার্মানিতে অনেক তারকা ফুটবলার এলেও খুব কম খেলোয়াড়ই এককভাবে মহাতারকা হয়ে উঠেছেন। তবুও সবকিছু ছাপিয়ে কেউ কেউ হয়ে ওঠেন উজ্জ্বল নক্ষত্র। টমাস মুলার তেমনই একজন।

১৯৮৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর মিউনিখের উইলহেইমে জন্ম নেওয়া মুলারের ফুটবলের হাতেখড়ি টিএসভি পাহল ইউথের একাডেমিতে। ১০ বছর বয়সে পাড়ি জমান ৫০ কিলোমিটার দূরের মিউনিখ শহরে। বায়ার্ন মিউনিখের সঙ্গে মুলারের বন্ধন আর পথচলার সেই ছিল শুরু। অল্পদিনেই বনে যান ক্লাবটির যুব প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

ইউরোপীয় ক্লাবগুলোর অ্যাকাডেমি থেকে উঠে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে প্রতিভাবান খেলোয়াড়। তাদের মধ্যে খুব কমই নিজেদের ক্লাবে সামর্থ্যের জানান দেওয়ার সুযোগ পান। কারণ ক্লাবগুলো প্রতিযোগিতামূলক খেলায় প্রমাণিত কাউকে ছাড়া ভরসা করতে চায় না। তাই শীর্ষ পর্যায়ের দলগুলো উঠতি খেলোয়াড়দের দেশি-বিদেশি অপেক্ষাকৃত ছোট ক্লাবগুলোতে ধারে পাঠিয়ে প্রতিভা ঘষামাজা করে নেয়।

গত দেড় দশকে জার্মান জাতীয় দলের স্কোয়াডেও মুলারের থাকাটা হয়ে উঠেছিল নিয়ম/সংগৃহীত

পরিশ্রমী মুলারের বেলায় অবশ্য তেমনটি ঘটেনি। ২০০৮ সালে বায়ার্নের রিজার্ভ দলে অভিষিক্ত এই ফরোয়ার্ড পরের মৌসুমেই ক্লাবের মূল দলে পাকাপাকিভাবে জায়গা করে নেন। ব্যাভারিয়ানদের মূল দলে তার অভিষেক হয়ে যায় আগের বছরই। বায়ার্নের মূল দলে থিতু হয়ে প্রথম মৌসুমেই বাজিমাত করেন মুলার। ২০০৯-১০ মৌসুমে তিনি করেন ১৯ গোল; অ্যাসিস্ট করেন ১৬টি গোলে। মাত্র ২০ বছর বয়সেই বেশিরভাগ ম্যাচ খেলে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন ঘরোয়া লিগ আর কাপের ট্রফিজয়ে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ইন্টার মিলানের কাছে না হেরে গেলে হয়ত বায়ার্নের সিনিয়র দলে মুলারের অভিষেক মৌসুমকে ‘এলাম, দেখলাম, জয় করলাম’ বিশেষণে বিশেষায়িত করা যেত।

‘বায়ার্নের মুলার’ হোক অথবা ‘মুলারের বায়ার্ন’ উপাখ্যানের সেই শুরু। সময়ের সঙ্গে আরও শানিয়েছেন নিজেকে। পরের দুই মৌসুমে তিনি করেন যথাক্রমে ১৯ আর ১১ গোল। কেবল গোল করার ক্ষেত্রেই না, করানোর ক্ষেত্রেও সিদ্ধহস্ত ছিলেন মুলার; যার প্রমাণ এ সময়ে তার নামের পাশে থাকা ৩৯ (১৯+২০) অ্যাসিস্ট।

২০১২-১৩ মৌসুম মুলার আর বায়ার্নের এক সোনালি অধ্যায়। সেবার বায়ার্ন বুন্দেসলিগা, ডিএফবি পোকাল আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জিতে ঐতিহাসিক শিরোপাত্রয়ীর (ট্রেবল) স্বাদ পায়। নিজে ২৩ গোল করার সঙ্গে সঙ্গে আরও ১৭টি গোল করিয়ে অবিস্মরণীয় সেই মৌসুমে মুলার রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

ব্যক্তিগতভাবে বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে মুলার সবচেয়ে বিধ্বংসী ছিলেন ২০১৩-১৪ থেকে ২০১৫-১৬ মৌসুমে। এই তিন মৌসুমে ব্যাভারিয়ানদের হয়ে যেমন ৮৭ বার বল জালে জড়ান, তেমনি গোল করান আরও ৬১টি। এ সময়ের মৌসুমপ্রতি পরিসংখ্যানে মুলারের প্রভাব আরও ভালোভাবে বোঝা যাবে। ২০১৩-১৪, ২০১৪-১৫ আর ২০১৫-১৬ মৌসুমে তিনি সবমিলিয়ে যথাক্রমে ৪০, ৩৯ ও ৪৫ গোলে সরাসরি অবদান রাখেন।

২০১২-১৩ মৌসুম মুলার আর বায়ার্নের এক সোনালি অধ্যায়/সংগৃহীত

সাধারণত ফুটবলাররা ফর্মের চূড়ান্তে থাকেন ২৭-২৮ এর আশেপাশে। সেই বয়সে পৌঁছানোরবহু আগেই সাফল্য আর অর্জন বিবেচনায় মুলার নিজেকে নিয়ে যান অনন্য উচ্চতায়। একসময় মনে হচ্ছিল মুলার বুঝি সবদিক দিয়েই নিজেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যাবেন।

কিন্তু হুট করেই ফর্ম আর খেলার ছন্দে ভাটা লাগে। ২০১৬ সালের পরে ধীরে ধীরে ম্রিয়মান হতে থাকেন মুলার। পরিসংখ্যান দেখে অবশ্য সে কথা বলার উপায় নেই। সর্বশেষ ৯ মৌসুমে বায়ার্নের জার্সিতে নিজে যেমন ৯৪ বার বল জালে জড়িয়েছেন, তেমনি প্রত্যক্ষ অবদান রেখেছেন সতীর্থদের ১৫৭ গোলেও। অর্থাৎ গত ৯ মৌসুমে গড়ে ২৮টি গোলে সরাসরি জড়িত ছিলেন এই জার্মান ফরোয়ার্ড।

কিন্তু একজন মুলারের জাত চেনাবে, পরিসংখ্যানের সেই সাধ্য কোথায়! তাই যারা তরুণ মুলারকে দেখেছেন, তাদের কাছে পরিণত মুলারকে খানিকটা অচেনাই লাগবে। এর পেছনে যেমন প্রতিপক্ষের কৌশলের কৃতিত্ব আছে, তেমনি আছে দলের প্রয়োজনে নিজের পজিশনে না খেলতে পারাটাও। তবে জার্মান ফুটবল আর বায়ার্ন মিউনিখের জীবন্ত কিংবদন্তি হওয়া থেকে মুলারকে কেউ বঞ্চিত করতে পারেনি।

বায়ার্ন মিউনিখের মূল দলে অভিষেকের পর ক্লাব ক্যারিয়ারে সর্বমোট ১৪ জন কোচের অধীনে খেলেছেন মুলার। তাদের মধ্যে লুই ফন গাল, কার্লো অ্যানচেলত্তি, ইয়ুপ হেইঙ্কেসদের মতো পুরোনো ধাঁচের কোচেরা যেমন আছেন; তেমনি আধুনিক যুগের পেপ গার্দিওলা, টমাস টুখেল, হ্যান্সি ফ্লিক, হুলেন নাগেলসম্যানের মতো আধুনিক যুগের ট্যাকটিকাল মাস্টারমাইন্ডরাও আছেন। ব্যাভারিয়ানদের ডাগআউটের কোনো গুরুই মুলারকে বাদ দিয়ে কৌশল সাজাননি। এখানেই বোঝা যায় কতটা কার্যকর ফুটবল খেলতেন মুলার।

বায়ার্ন মিউনিখের মূল দলে অভিষেকের পর ক্লাব ক্যারিয়ারে সর্বমোট ১৪ জন কোচের অধীনে খেলেছেন মুলার/সংগৃহীত

কারণ মুলার কখনোই নিজেকে নির্দিষ্ট ছক বা গণ্ডিতে নিজেকে আটকে রাখেননি। বায়ার্নের বয়সভিত্তিক দলে খেলতেন মাঝমাঠে। কিন্তু মূল দলে এসে বনে যান পুরোদস্তুর আক্রমণভাগের খেলোয়াড়। তাতেও তার নৈপুণ্য কিংবা বৈচিত্র্য ছিল অটুট। কখনো তিনি অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার তো আবার কখনো হয়ে যেতেন সেকেন্ড স্ট্রাইকারও।

সর্বোপরি ফুটবল মাঠে মুলারের মূল পজিশন নির্দিষ্ট করা ছিল খুবই কঠিন। ইউরোপীয় ফুটবলারদের মাপে তিনি হয়ত অতটা লম্বা-চওড়া বা শক্তপোক্ত নন। কিন্তু ট্যাকটিকাল বুদ্ধিমত্তা, নিখুঁত ফিনিশিং এবং সঠিক সময়ে একেবারে সঠিক জায়গায় থাকার ক্ষমতায় তিনি অনন্য। বায়ার্নের ডাগআউটে আসা অনেক কোচও এসব কারণে মুলারকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন।

প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগকে ঠাণ্ডা মাথায় ছিন্নভিন্ন করে দিতে পারতেন মুলার। মাঠে নিজের ভূমিকাকে সুন্দর একটি নামও দিয়েছিলেন- রমডয়টার। শব্দটির আভিধানিক অর্থ না থাকলেও সহজ ভাষায় বলা যায়- প্রতিপক্ষের অর্ধে ফাঁকা জায়গা খুঁজে বের করে নিয়েই দলের আক্রমণ তৈরিতে অংশ নেওয়া।

খুব কম খেলোয়াড়ই ক্লাবের প্রতীক বা প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠতে পারেন। আধুনিক ফুটবলের পেশাদারিত্ব আর প্রতিযোগিতার যুগে সেটি আরও কঠিন। কিন্তু মুলার পেরেছেন। তাকে লিভারপুলের স্টিভেন জেরার্ড, রোমার ফ্রান্সেস্কো টট্টির সঙ্গে তুলনা করা তাই সম্ভবত অত্যুক্তি নয়।

বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে মুলার সবমিলিয়ে ৭৫০টি ম্যাচ খেলেছেন। ক্লাবের ইতিহাসে এর আগে এতগুলো ম্যাচ খেলেননি কোনো খেলোয়াড়। ব্যাভারিয়ানদের জার্সিতে ২৪৮ বার যেমন নিজে বল জালে জড়িয়েছেন, তেমনি সতীর্থদের দিয়েও করিয়েছেন ২৭৪টি গোল। বুন্দেসলিগার ইতিহাসে মুলারই একমাত্র খেলোয়াড় যার নামের পাশে ১০০+ গোল ও ২০০+ অ্যাসিস্ট রয়েছে। সোজা কথায় মুলার যেন স্ট্রাইকার-প্লেমেকার কম্বো প্যাকেজ! এমনকি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কোনো জার্মানই মুলারের (৫৬) চেয়ে বেশি গোল করতে পারেননি। বুন্দেসলিগায় নিজ দলের হয়ে সর্বোচ্চ জয়ের মালিকও তিনি।

মুলারকে কেন বায়ার্ন মিউনিখের প্রতীক বলা হয়, তার প্রমাণ পাওয়া যাবে আরও কিছু তথ্যে। বুন্দেসলিগায় বায়ার্নের হয়ে তার চেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেননি আর কেউই। তাছাড়া উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে একটি নির্দিষ্ট ক্লাবের জার্সিতে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড মুলারের দখলে। শুধু তাই না, প্রতিযোগিতা দুটিতে একটি নির্দিষ্ট ক্লাবের জার্সিতে সর্বোচ্চ ম্যাচ জয়ের কীর্তিও তার। 

বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে মুলার সবমিলিয়ে ৭৫০টি ম্যাচ খেলেছেন/সংগৃহীত

বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে ক্লাব ক্যারিয়ারে রেকর্ড ১৩টি বুন্দেসলিগা ট্রফি ছুঁয়েছেন মুলার। এছাড়া ব্যাভারিয়ানদের হয়ে ছয়টি ডিএফবি পোকাল, আটটি ডিএফএল সুপারকাপ আর দুটি করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, উয়েফা সুপার কাপ ও ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ জিতেছেন। সবমিলিয়ে বায়ার্নের হয়ে জিতেছেন ৩৩টি শিরোপা, যার মধ্যে ছিলেন ঐতিহাসিক দুবার ট্রেবল আর একবার সিক্সটুপলের অংশীদারও। শুধু তাই না, এক টনি ক্রুস ছাড়া আর কোনো জার্মান ফুটবলারই শিরোপা সংখ্যায় মুলারকে (৩৪) ধরতে পারেননি।

মুলার হয়ত কখনোই অন্য ক্লাবে পাড়ি যাওয়ার কথা ভাবেননি। এত ভালোবাসা, এমন অংশীদারিত্ব ছেড়ে যেতে হবে সে কথাও হয়ত ভুলে বসেছিলেন। কিন্তু সময় বড় নিষ্ঠুর। চুক্তি নবায়ন না হওয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে থেমে গেল মুলার-বায়ার্নের ২৫ বছরের পথচলা। 

বায়ার্নের সঙ্গে পথচলা শেষ হলেও ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের একক ক্লাবে সবচেয়ে বেশিদিন খেলার রেকর্ডটাও নিজের করেই নিলেন মুলার। কাকতালীয় ব্যাপার হলো বায়ার্নের হয় মুলার মাঠে মাতাতেন ২৫ নম্বর জার্সিতে। বায়ার্নের মূল দলের অনুশীলনে প্রথমবার আগমনের সময় একজন কিটম্যান তাকে ২৫ নম্বর জার্সিটি দিয়েছিলেন।

মুলারের কথায়, “সম্ভবত তিনি (কিটম্যান) আশা করেছিলেন যে আমি এখানে খুব বেশি সময় থাকব না। তিনি ভুল ছিলেন।”

এমন সাফল্য আর ধারাবাহিকতা যার- সেই মুলার কি ততটা মিডিয়ার নজরে ছিলেন? ঈর্ষণীয় সাফল্যের পরেও তিনি কি একটু আড়ালেই ছিলেন না? উত্তর ‘হ্যাঁ’ হয়ে থাকলেও মুলারের আক্ষেপ থাকবে না। কারণ মুলারের নামটি প্রতিধ্বনিত হবে অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনার প্রতিটি কোণে। কয়েক দশক পরেও হয়ত মুলারকে ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ৭৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামে ভেসে উঠবে ‘ডানকে টমাস’ লেখা বিশাল ব্যানার। আর স্মরণীয় বায়ার্ন অধ্যায়ের দিকে তাকিয়ে ভালোবাসা জানিয়েও দর্শকরা গগনবিদারী কণ্ঠে গেয়ে উঠবে- “তুমি সারাজীবন আমাদের হৃদয়ে থাকবে মুলার”। প্রচার আর পাদপ্রদীপের ঝলকানির চেয়ে এগুলো নিশ্চয়ই বেশি মূল্যবান হবে আজন্ম এক বাভারিয়ানের জন্য!

   

About

Popular Links

x