সিলেট ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। বুধবার (২১ জুন) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। দুই সিটিতেই ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে।
রাজধানী ঢাকার আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবন থেকে এই দুই সিটির ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোটের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মাঠে নামানো হয়েছে। মাঠে আরও রয়েছেন নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরা।
এদিকে, দুই সিটিতে নিজ নিজ কেন্দ্রে ভোট দিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীরা। এ সময় জয়ের ব্যাপারেও আশাবাদী বলে জানান তারা।
বুধবার সকাল ৯টার দিকে নগরীর উপশহর স্যাটেলাইট টাউন হাইস্কুল কেন্দ্রে ভোট দেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।
ভোট দেওয়া শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন লিটন। শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হচ্ছে জানিয়ে এই নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি ভুল করেছে বলে এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।
লিটন বলেন, “নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতে কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছে। তাদের নিজস্ব কিছু ভোটার রয়েছে। তাদের ভোটগুলো কোন খাতে যাবে সেটা জানি না। তবে উন্নয়নের দিকে তাকিয়ে হলেও তাদের নৌকায় ভোট দেওয়া উচিত।”
সিটি নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি ভুল করেছে উল্লেখ করে লিটন বলেন, “রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ না নেওয়া বিএনপির অবশ্যই ভুল হয়েছে। তাদের নির্বাচনে অংশ নিতে হতো। সে ক্ষেত্রে তারা তাদের অবস্থান বুঝতে পারতো। আমরাও বুঝতে পারতাম। এ নির্বাচনটি প্রকৃত অর্থে ভালো হতো। তবে তারা না এলে কিছু করার নেই।”
নির্বাচনে ৬০% এর ওপরে ভোট পড়বে বলেও আশা প্রকাশ করেন ক্ষমতাসীন দলের এই মেয়র প্রার্থী।
অন্যদিকে, বুধবার সকাল ৯টার দিকে বুধবার নগরীর পাঠানটুলায় শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা ভোটকেন্দ্রে ভোট দেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
তিনিও ভোটকেন্দ্র থেকে বের হয়ে নিজের জয়ের ব্যাপারে আশার কথা জানান সাংবাদিকদের।
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, “সুন্দর পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলছে। জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। বিপুল ভোটের ব্যবধানে সিলেটবাসী অবশ্যই নৌকার জয় নিশ্চিত করবেন।তবে শেষ পর্যন্ত যদি হেরেও যায়, ভোটের ফল মেনে নেব। জয়ী প্রার্থীকে ফুল দিয়ে বরণ করবো।”
ইভিএমে ভোট দেওয়া নিয়ে আনোয়ারুজ্জামান বলেন, “ইভিএম পরিষ্কার একটি পদ্ধতি। ইভিএমে সবাই খুব সুন্দরভাবে ভোট দিতে পারবে, একটা খুব সহজ পদ্ধতি।”
সিলেট সিটিতে পঞ্চমবারের মতো নির্বাচন হচ্ছে। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ৫৪ হাজার ৩৬০ এবং নারী দুই লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৭ জন। মেয়র পদে আট, সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৭৩ এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৮৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মেয়র পদে আট প্রার্থী হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (নৌকা); জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল (লাঙ্গল); ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা); জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম (গোলাপ ফুল) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু (ঘোড়া); মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন (ক্রিকেট ব্যাট); মো. শাহজাহান মিয়া (বাস) ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা (হরিণ)।
রাজশাহী সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী চারজন। সাধারণ ৩০টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ১১২ জন এবং সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ৪৬ জন। তবে সাধারণ ওয়ার্ডের একটিতে কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
রাজশাহী সিটিতে ভোটার রয়েছেন ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৭১ হাজার ১৬৭ জন এবং নারী ১ লাখ ৮০ হাজার ৮০৯ জন, হিজড়া ৬ জন। ভোটকেন্দ্র ১৫৫টি এবং ভোটকক্ষ ১ হাজার ১৫৩টি।