সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান দেশের রাজনীতির অন্যতম পরিচিত মুখ নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। সেখানে তার সঙ্গে ঘটে এক অপ্রীতিকর ঘটনা। এরপরই ফের আলোচনায় তিনি।
বুধবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের লিটল বাংলাদেশ, জ্যাকসন হাইটসে যান শামীম ওসমান। সেখানেই তিনি নিউইয়র্কে অবস্থানরত বাংলাদেশি প্রবাসী বিএনপি নেতাদের একটি দলের মুখোমুখি হন।
ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে সংসদ সদস্য শামীমের সঙ্গে মার্কিন বিএনপির সদস্য বাদল মির্জা, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রিয়াজ মাহমুদসহ কয়েকজন বিএনপি সমর্থককে কথোপকথন করতে দেখা যায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, শামীম ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বিএনপি নেতা ও তাদের অনুসারীরা “ভুয়া, ভুয়া, ভুয়া” স্লোগান দেয়।
সম্প্রতি ভিডিওটি নিয়ে ঢাকা ট্রিউনের সঙ্গে আলাপকালে শামীম ওসমান বলেন, “এক জুনিয়র আমাকে একা সেখানে নিয়ে যান। হঠাৎ দেখি গাড়ি থেকে একদল লোক আমাদের দলের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছে।”
“প্রথমে আমি বিষয়টি উপেক্ষা করেছিলাম, কিন্তু যখন তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করে তখন আমি গাড়ি থেকে নেমে তাদের জিজ্ঞাসা করি তাদের উদ্দেশ্য কী?”
“তখন আমি তাদের বলেছিলাম, এখানে নিউইয়র্কে, আপনারা সবাই আপনাদের দেশ, বাংলাদেশ ও আপনাদের পরিবারের প্রতিনিধিত্ব করছেন। আপনাদের কর্মকাণ্ডই দেখায়, আপনারা কারা। আপনারা দেশের সুনাম নষ্ট করবেন না।”
এতে বিএনপির ওই কর্মীরা তার ওপর উত্তেজিত আচরণ করলে ভিডিও ক্লিপে সংসদ সদস্যকে বলতে শোনা যায়, “মনে রাখবেন, আমার নাম শামীম ওসমান।”
ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলায় বাদল মির্জার বাড়িতে হামলা চালায় একদল দুর্বৃত্ত।
হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে শামীম ওসমান ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “আমি নারায়ণগঞ্জের একজন এমপি, যেটি রাজধানী ঢাকার পাশে। নারায়ণগঞ্জ থেকে অনেক দূরে চট্টগ্রাম বিভাগের প্রত্যন্ত জেলা নোয়াখালীতে হামলার জন্য আমাকে কিভাবে দায়ী করা যায়?”
“আসলে, নারায়ণগঞ্জে আমার কিছু সমর্থক বিএনপির লোকজনের ভিডিও রেকর্ড করা ও ছড়িয়ে পড়া দেখে বিরোধী দল বিএনপির ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু আমি তাদের বলে শান্ত করেছিলাম, আমরা আওয়ামী লীগের নেতারা সহিংসতায় বিশ্বাস করি না। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে শান্তি ও গণতন্ত্র চাই।”
নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশে আমার সমর্থকদের বলেছি, “এখন যেহেতু ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে, জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে কোন দল কোন অনুশীলনে বিশ্বাস করে। আওয়ামী লীগ যখন দেশ পরিচালনা করছে, উন্নয়ন করছে, বিএনপি যুক্তরাষ্ট্রের রাজপথেও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছে।”
নোয়াখালীর ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে সাংসদ বলেন, “যারা হামলা করেছে তাদের সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই।”
তিনি বলেন, “আমি স্বীকার করছি নিউইয়র্কে যখন আমি চিকিৎসার জন্য ছিলাম তখন তারা আমার সাথে দুর্ব্যবহার করেছে, কিন্তু এর মানে এই নয় যে আমার সমর্থকরা নোয়াখালীতে তাদের বাড়িতে হামলা করেছে। এটা বাংলাদেশ সরকারের সুনাম ক্ষুন্ন করার লক্ষ্যে বিএনপির একটি চক্রান্ত হতে পারে। বাংলাদেশের একজন আইনপ্রণেতা হিসেবে আমরা সবসময় চাই সারাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকুক।”
এদিকে হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার সোমবার এক ব্রিফিংয়ে বলেন, “কোনো গণতন্ত্রে সহিংসতার কোনো স্থান নেই।”