বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ “এমভি আব্দুল্লাহ” জিম্মি করার দুই দিনেও জাহাজটির মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি জলদস্যুরা। যে কারণে এখনও জানা যায়নি জলদস্যুদের দাবি-দাওয়া।
জাহাজসহ জিম্মি নাবিকদের ফিরিয়ে আনতে জাহাজটির বিমাকারী যুক্তরাজ্যের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে “এমভি আব্দুল্লাহ”র মালিকপক্ষ। তবে এতে কত দিন সময় লাগতে পারে সেটি অনিশ্চিত।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ভোর ৬টা পর্যন্ত জাহাজটি সোমালিয়ার উপকূল থেকে ৭২ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছিল। দুপুর নাগাদ জাহাজটি সোমালিয়ায় পৌঁছে যাবে বলে ধারণা করছেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) সাধারণ সম্পাদক মো. শাখাওয়াত হোসেন।
তিনি বলেন, “সোমালিয়ায় যাওয়ার পর জলদস্যুরা তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে মালিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত তারা কোনো দাবি জানায়নি।”
জাহাজটির মালিকানা প্রতিষ্ঠান কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, “এখন পর্যন্ত জলদস্যুদের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। জাহাজের নাবিকরা ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী জলদস্যুরা নাবিকদের কোনো ক্ষতি করেনি। তাদের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, আমরা সেই চেষ্টা করছি। জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।”
সংবাদমাধ্যমে জলদস্যুদের মুক্তিপণ দাবির বিষয়টিকে গুজব দাবি করে মিজানুল ইসলাম বলেন, “এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কোনো দাবি-দাওয়া জানায়নি জলদস্যুরা। হয়তো জাহাজটিকে তাদের সেফ জোনে নেওয়ার পর তখন তারা তাদের দাবির বিষয়টি বলতে পারে।”
তিনি বলেন, “এর আগে ২০১০ সালে কবির গ্রুপের মালিকানার আরও একটি জাহাজ একই জলদস্যু বাহিনীর কবলে পড়েছিল। সে সময় ১০০ দিন পর জাহাজসহ সব নাবিককে অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছিল। আমরা অতীত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবারও নাবিকদের সুস্থভাবে ফিরিয়ে আনতে পারব বলে আশা করছি।”
এর আগে, ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর আরব সাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল একই প্রতিষ্ঠানের জাহাজ “এমভি জাহান মণি”। ওই জাহাজের ২৫ বাংলাদেশি নাবিকের পাশাপাশি এক ক্যাপ্টেনের স্ত্রীসহ ২৬ জনকে ১০০ দিন জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। সরকারি উদ্যোগসহ নানা প্রক্রিয়ায় ২০১১ সালের ১৪ মার্চ জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হয়। ১৫ মার্চ তারা বাংলাদেশে ফিরে আসেন।
গত মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে কবির গ্রুপের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ার খবর জানতে পারেন গ্রুপের কমকর্তারা।