বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় রিমাল প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। এটি বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। এর অগ্রভাগের প্রভাব ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে বাংলাদেশের উপকূলে। পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এই পরিস্থিতিতে রবিবার (২৬ মে) সকাল ৯টার দিকে মোংলা নদীর ঘাটে ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। জানা গেছে, অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে নদী পার হচ্ছিল ট্রলারটি। কমপক্ষে ৮০ জন যাত্রী নিয়ে নদীর ওপার থেকে এপারে ভিড়তেই ডুবে যায়।
এদিকে, ট্রলারটি ডুবে যাওয়ার পর অধিকাংশ যাত্রী তীরে উঠে আসতে পারলেও অনেককে নিখোঁজের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাদের উদ্ধারে নদীতে তল্লাশি চালাচ্ছে নৌপুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও কোস্টগার্ডের ডুবুরি দল।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রবিবার ভোর থেকেই প্রত্যেকটি ট্রলার ৭০ থেকে ৮০ জন যাত্রী নিয়ে নদী পার হচ্ছিল। এর মধ্যে সকাল ৯টার দিকে একটি ট্রলার ডুবে যায়। ট্রলারডুবি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন যাত্রীদের স্বজনেরা। এ সময় তারা পৌরসভার নিয়ন্ত্রণে থাকা টোল আদায়ের কাউন্টারে ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনার পর থেকে মোংলা নদীতে ট্রলার চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ঝড়ের মধ্যে ট্রলারে অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাইয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে মোংলা নদী পারাপার ট্রলারমালিক ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুর ইসলাম বাবুল বলেন, “যাত্রীরা লাফিয়ে লাফিয়ে ট্রলারে উঠে পড়লে আমাদের কী করার আছে।” এ কথা বলেই ফোন কেটে দেন তিনি।
ডুবে যাওয়া ট্রলারে থাকা যাত্রীদের অধিকাংশই মোংলা ইপিজেডের ভিআইপি কারখানার শ্রমিক। মহাবিপৎসংকেতের মধ্যেও কারখানা খুলে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান বলেন, “সাত নম্বর বিপদসংকেত জারি হওয়ার পরই কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়।”
তাহলে সকালে কেন শ্রমিক পার হচ্ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি মিটিংয়ে আছি। আপনারা যা লেখার লেখেন।” তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শ্রমিক জানিয়েছেন, ভিআইপির মিজান তাদের ফোন দিয়ে জোর করে কারখানায় নিয়েছেন।
মোংলা উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিশাত তামান্না বলেন, “ট্রলারডুবির পরপরই খোঁজখবর রাখছি। কোনো যাত্রী নিখোঁজ আছেন কি-না, সে বিষয়ে পৌরসভার সিসি ক্যামেরায় দেখা হচ্ছে।”