Tuesday, April 22, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

বিনোদন কেন্দ্রে শিক্ষার্থী-কর্মচারীদের সংঘর্ষ, আহত অন্তত ৫০

শিক্ষার্থীরা পার্কে ভাঙচুর করেছে, আর পার্কের কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের বাস ভাঙচুর করেছে

আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৯ পিএম

ঢাকার ধামরাইয়ে একটি বিনোদন কেন্দ্রে পিকনিকে আসা শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন হারানোকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী ও পার্ক কর্মচারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিনোদন কেন্দ্রের স্থাপনায় ভাঙচুর চালিয়েছে। আর পার্ক কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের বহনকারী বাস ভাঙচুর করেছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার কুল্লা ইউনিয়নের সিতি এলাকায় আলাদীন্’স পার্কে এই ঘটনা ঘটে। এদিন সকাল ১০টার দিকে মিরপুরের বনফুল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিনোদন কেন্দ্রটিতে পিকনিক করতে আসেন।

শিক্ষক, আলাদীন্’স পার্ক কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১০টার দিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ৬৫০ জন ১২টি বাসে করে বিনোদন কেন্দ্রটিতে আসেন। দুপুরের দিকে শিক্ষার্থীরা নিজেদের মোবাইল ফোনসহ মালামাল লকারে রেখে ওয়াটার পার্কে নামেন। তবে পানি থেকে উঠে কয়েকজন শিক্ষার্থী লকার খোলা ও সেখানে মোবাইল ফোন  খুঁজে পাননি। শিক্ষার্থীরা এজন্য পার্ক কর্মচারীদের দায়ী করলে উভয়পক্ষের মধ্যে বাগ্বিবতণ্ডা হয়। বিষয়টি কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকদের মধ্যস্ততায় মীমাংসা হয়, তবে মোবাইল ফোন খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে বিকেল ৫টার দিকে বিনোদন কেন্দ্র ছেড়ে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোন না পাওয়া পর্যন্ত বিনোদন কেন্দ্র ছেড়ে যেতে আপত্তি জানান। একপর্যায়ে তারা বিনোদন কেন্দ্রের স্থাপনায় ভাঙচুর করেন। এ সময় বিনোদন কেন্দ্রের কর্মচারীরা তাদের ওপর চড়াও হন। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পার্ক কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের পরিবহনের অন্তত ৮টি বাসে ভাঙচুর করে। সংঘর্ষে অন্তত ২৫-৩০ জন শিক্ষার্থী ও ১০-১৫ জন পার্ক কর্মচারী রক্তাক্ত জখমসহ আহত হন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের উদ্ধার করে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে শিক্ষক নাসির আফজাল বলেন, "সকাল ১০টার দিকে আমরা ৬৫০ জন এসেছিলাম ১২টি বাসে করে। বিকেল ৫টার দিকে ঘটনাটা ঘটে। ছোট থেকে শুরু। কয়েকটি মোবাইল খোয়া যায়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি। তখন বাচ্চারা বলেছে, মোবাইল ছাড়া বাসায় গেলে সমস্যা, যাতে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। তখন আমরা বললাম, তারা যদি না দেয় আমরা দেখবো। এরইমধ্যে তারা (শিক্ষার্থীরা) ভাঙচুর করেছে। এটি দেখে হয়তো আশপাশের লোকজন ডেকেছে। তারাও ভাঙচুর করেছে। এতে আহত ৬ জনকে এনাম মেডিকেলে নেওয়া হয়েছে। অনেকে সাধারণ চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। সবমিলিয়ে অন্তত ২০-২৫ জন আহত হয়েছে। আমরা মামলা করবো। বাকিরা থানায় গিয়েছে। এটার ক্ষতিপূরণের বিষয় রয়েছে।"

এ বিষয়ে আলাদীন্'স পার্কের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা নকিবুল হাসান রনি বলেন, "স্কুল থেকে সকালে পিকনিকে এসেছিল। ঘটনা দুইবার ঘটেছে, দুপুরে একবার, বিকেলে একবার। দুপুরে মীমাংসা হওয়ার পরে বিকেলে যাওয়ার সময় সব কিছু ভাঙচুর করে গেছে। মোবাইল হারানোর মতো কিছুই হয়নি। এইখানে লকার রাখছিল, লকার থেকে বের হওয়ার সময়, হতো বা আর একটা লকারে চাবি দিয়ে খুলেছে, সেখানে ১০০টি লকার আছে। এটা নিয়ে আমাদের স্ট্রাফকে প্রথমে মারধর করছে, পরে ওনাদের শিক্ষকদের ডেকে এনে বিষয়টা মীমাংসা করেছি। শিক্ষকরা বলছে, যে ছেলেকে মারছে তাকে স্বান্তনা দিয়ে চলে গেছে। পরে বের হওয়ার সময় ওরা এমন ভাঙচুর করছে ও স্টাফদের  মারধর করছে। মারধরে স্টাফরা নিরুপায় হয়ে যায়। তখন এলাকার মানুষজনও ছিল, তারাও এসেছে, পরে ধাওয়া পাল্টা দেওয়া হয়েছে। আমাদের ১৫-১৬ জন আহত হয়েছে, এর মধ্যে সবাই রক্তাক্ত জখম। আহত সবাই সরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

এ বিষয়ে ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, "বেড়াতে আসা শিক্ষার্থীরা বিনোদন কেন্দ্রটির লকারে তাদের মোবাইলসহ অন্যান্য জিনিসপত্র রেখে গোসলে নামেন। পরে কয়েকজন শিক্ষার্থী লকার থেকে মোবাইল হারানোর অভিযোগ তুলেন। এ নিয়ে বিনোদন কেন্দ্রর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। শিক্ষার্থীদের বাগ্বিতণ্ডা ঘটে। একপর্যায় হাতাহাতিতে জড়ায় উভয় পক্ষ।"

দুইপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান ওসি।

 

   

About

Popular Links

x