বিগত বছরগুলোর মতো এবার বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে বের হবে “মঙ্গল শোভাযাত্রা”।
এবারের নববর্ষ উদ্যাপনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে “নববর্ষে ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান”। বরাবরের মতো এ বছরও নববর্ষের শোভাযাত্রার মূল আয়োজন করবে ঢাবির চারুকলা অনুষদ । এবার শোভাযাত্রা হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক। এতে দেশের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব থাকবে। তারা তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপাদানগুলো নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেবে। শিল্পকলা একাডেমির তত্ত্বাবধানে তারা শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
এদিকে, এ বছর শোভাযাত্রায় থাকবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহিদ আবু সাঈদের ভাস্কর্য। দুই হাত প্রসারিত বুক টান করে দাঁড়ানোর অকুতোভয় দৃশ্যটি ভাস্কর্যে তুলে আনা হবে। আর এই ভাস্কর্যটি হবে ২০ ফুট দীর্ঘ।
শোভাযাত্রার আয়োজক ঢাবির চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজাহারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েঝে সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো।
চারুকলা অনুষদের ডিন প্রথম আলোকে জানান, এবার প্রাথমিকভাবে বড় আকারের চারটি ভাস্কর্য রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি থাকবে শহিদ আবু সাঈদের ২০ ফুট দীর্ঘ ভাস্কর্য। আরও থাকবে স্বৈরাচারের প্রতীকী ভাস্কর্য।
এছাড়াও শোভাযাত্রায় বড় আকারে রাজা-রানির অন্তত চারটি মুখোশ, বাঘ, প্যাঁচা, পাখি, ফুল—এসবের শতাধিক মুখোশ থাকবে বলে জানা গেছে।
এদিকে, এ বছর মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তনের বিষয়ে আলোচনা শোনা গেলেও সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।
বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন কর্মসূচি নিয়ে সোমবার (২৪ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে অংশীজনদের নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খান। সভায় সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন করা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
উল্লেখ্য, ঢাবির চারুকলা অনুষদ ১৯৮৯ সাল থেকে পহেলা বৈশাখে শোভাযাত্রা করে আসছে। শুরুতে এটির নাম ছিল আনন্দ শোভাযাত্রা। নব্বইয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের পটভূমিতে অমঙ্গলকে দূর করে মঙ্গলের আহ্বান জানিয়ে শোভাযাত্রার নামকরণ হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা।
জাতিসংঘের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্বের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করে।