ডাকাত–আতঙ্কে মসজিদে মাইকিংয়ের পর মব সৃষ্টি করে নির্মাণশ্রমিকদের মারধরের ঘটনা ঘটেছে ঝালকাঠিতে।
সোমবার (২৪ মার্চ) দিবাগত রাত একটার দিকে ঝালকাঠি পৌরসভার বাসন্ডা ঝোড়াপোল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, “এলাকায় ডাকাত পড়েছে” পড়েছে জানিয়ে সোমবার রাতে ঝালকাঠি শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি মসজিদে মাইকিং করা হয়। পরে এলাকার লোকজন দেশিয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা নিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন। পরে তারা ৯ জন নির্মাণশ্রমিককে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেন।
তবে পুলিশ জানিয়েছে, জেলার কোথাও ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি। আটক ওই ৯ জন নিরীহ নির্মাণশ্রমিক। গুজব ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্কে মানুষ ওই শ্রমিকদের মারধর করেছে।
এ বিষয়ে ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো বলেন, “প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, আটক ব্যক্তিরা নিরীহ শ্রমিক। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে প্রথম আলো জানিয়েছে, ঝোড়াপোল এলাকায় রাত একটার দিকে বাসন্ডা খালের তীরবর্তী জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য বনি আমিন বাকলাইয়ের বাংলো বাড়ির সামনের ঘাটলায় নির্মাণশ্রমিকদের মালামালবোঝাই একটি ট্রলার থামে। এ সময় আইনজীবী বনি আমিন সিসিটিভির ফুটেজে বিষয়টি দেখতে পেয়ে মোবাইল ফোনে এলাকার কয়েকজনকে জানান। এরপর কয়েকটি মসজিদ থেকে ডাকাত পড়েছে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। তখন এলাকার মানুষ রাস্তায় নেমে এসে ৯ জন শ্রমিককে আটক করে পিটুনি দেন। পরে তারা পুলিশকে বিষয়টি জানান। পুলিশ গিয়ে ওই শ্রমিকদের উদ্ধার করে থানায় আনে। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
এদিকে শ্রমিকদের আটক করার খবর শুনে স্থানীয় ঠিকাদার ফাইজুল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি এলাকার লোকজনকে জানান, ওই ৯ শ্রমিক তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। এরপরও তাকে লাঞ্ছিত করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ বিষয়ে ফাইজুল ইসলাম প্রথম আলোবে বলেন, “পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে আমার একটি সেতু নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। বিল বকেয়া থাকায় কাজ বন্ধ করে দিয়ে শ্রমিকদের এলাকায় চলে আসতে বলেছিলাম। রাত গভীর হওয়ায় আইনজীবী বনি আমিনের বাড়ির সামনের ঘাটলায় শ্রমিকদের ট্রলার ভেড়াতে বলি। এ সময় নিরীহ শ্রমিকদের ডাকাত বানিয়ে মব জাস্টিস করা হয়েছে।”
তবে বনি আমিনের দাবি, তাদের (শ্রমিক) সন্দেহজনক আচরণ ও চলাচলের কারণে এলাকাবাসী আটক করে পুলিশে দিয়েছে।