Wednesday, June 18, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ গঠনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলো তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা

তিতুমীরের শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘তিতুমীর ঐক্য’ ব্যানারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়

আপডেট : ১৯ মে ২০২৫, ০৮:১৫ পিএম

সাত কলেজকে নিয়ে ‘‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’’ গঠনের প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।

তাদের দাবি, সাত কলেজ থেকে তিতুমীরকে আলাদা করে স্বতন্ত্র কাঠামো গঠনের মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করতে হবে।

সোমবার (১৯ মে) দুপুরে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘‘তিতুমীর ঐক্য’’ ব্যানারে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী রফিক উদ্দীন রায়হান।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি উপেক্ষা করে শিক্ষা সিন্ডিকেটের প্রেসক্রিপশনে চাপিয়ে দেওয়া কথিত সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির প্রস্তাব সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন। একইসঙ্গে রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে, তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের যে ৬ দফা দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে, তা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিন।’’

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, “গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর তিতুমীরের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৯৪ পৃষ্ঠার একটি লিখিত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছিল। সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের পক্ষে তার একান্ত সচিব এম আমিনুল ইসলাম সেটা গ্রহণ করেন। একইদিনে প্রধান উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রপতির কার্যালয়েও প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। পরদিন ২২ সেপ্টেম্বর আইন মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদনটি জমা দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের যৌক্তিকতা এবং এর মাধ্যমে বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে সম্ভাব্য ইতিবাচক প্রভাব বিশ্লেষণ করে তুলে ধরা হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও কোনো সাড়া না পেয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে একটি ‘শিশুসুলভ’ উত্তর জানা যায়- প্রতিবেদনটি নাকি মন্ত্রণালয় থেকে হারিয়ে গেছে।”

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, “গত ৩ ডিসেম্বর ‘সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের যৌক্তিকতা ও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের নিমিত্তে কমিটি গঠন’ শিরোনামে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। যদিও সেই কমিটির প্রতিবেদন আজও প্রকাশ করা হয়নি। কোনো নির্দিষ্ট কারণ না দেখিয়ে গত ২৯ ডিসেম্বর বাকি ছয়টি কলেজের সঙ্গে মিলিয়ে সাত কলেজের জন্য আরেকটি প্রহসনমূলক কমিটি গঠন করা হয়। রাষ্ট্রের প্রতি সম্মান জানিয়ে ওই প্রহসনের কমিটির ডাকে সাড়া দিলেও গত ৯ জানুয়ারি ২২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ইউজিসিতে উপস্থিত হয়ে আবার তাদের দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরে। তাদের নিঃশর্ত অবস্থান স্পষ্ট করে। তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত সাত দফার মধ্যে ছয়টি দফা মেনে নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে কার্যক্রম শুরুর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি আজও বাস্তবায়ন হয়নি; বরং সেই প্রহসনের কমিটির মাধ্যমেই তথাকথিত ‘সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ (ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়) গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিতুমীর কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আলী আহমেদ বলেন, “ঢাকার সাত কলেজ নিয়ে সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যেমন অন্তর্বর্তী প্রশাসন করা হয়েছে, সেভাবে তিতুমীর কলেজকে সেখান থেকে আলাদা করে প্রশাসন গঠন করে নতুন শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো সম্ভব। প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে এখনো ঐক্যবদ্ধ রয়েছে।”

সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- তিতুমীরের জন্য স্বতন্ত্র কাঠামো গঠন করে ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম দ্রুত শুরু করা; কলেজের জন্য জমি বরাদ্দ; শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসন; শিক্ষক-সংকট সমাধান; আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার-গ্রন্থাগার নির্মাণ এবং সহশিক্ষা-গবেষণা কার্যক্রমে বাজেট বরাদ্দ দেওয়া।

দ্রুত এসব দাবি পূরণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে অতীতের যেকোনো কর্মসূচির চেয়ে কঠোর কর্মসূচি নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় লিখিত বক্তব্যে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নতুন বিশ্ববিদ্যালয় না হওয়া পর্যন্ত ইউজিসির তত্ত্বাবধানে সমন্বিত কাঠামোর অধীন চলবে ঢাকার সরকারি সাত কলেজের কার্যক্রম। অন্তর্বর্তী এই ব্যবস্থায় প্রশাসকের দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন ঢাকা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস। এ লক্ষে তাকে আগামী ২ বছরের জন্য ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে চুক্তিভিত্তিতে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। এখন তাকেই প্রশাসক করা হবে। আর অন্তর্বর্তী প্রশাসনের প্রধান দপ্তর হবে ঢাকা কলেজে।

ঢাকার এই সাত কলেজ হলো- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।

   

About

Popular Links

x