আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে “আনসাইলেন্সড: স্টোরিজ অব সারভাইভাল, হোপ এবং অ্যাক্টিভিজম” শীর্ষক ডকুসিরিজ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ঢাকার গুলশানে।
সোমবার (১১ মার্চ) গুলশানের ইএমকে সেন্টারে এর আয়োজন করে ইউএন উইমেন।
আয়োজকরা জানান, সিরিজটি নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধের বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করবে। ২৩ মিনিটের পর্বে বাংলাদেশ, ইকুয়েডর, সার্বিয়া, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ এবং উগান্ডার গল্প দেখানো হয়েছে।
কানাডা সরকারের সমর্থনে, ইউএন উইমেনের সহায়তায়, সুশীল সমাজের সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে পলিসি অ্যাডভোকেসির একটি সফল প্রয়াসকে ডকুমেন্টারির বাংলাদেশ অংশে তুলে ধরা হয়েছে। এই অ্যাডভোকেসির একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে, প্রমাণ আইন ১৮৭২ এর ধারা ১৫৫ (৪) এর বৈষম্যমূলক ধারাগুলো বাতিল করে ২০২২ সালে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ (সংশোধন) বিল ২০২২ পাস করে। সংশোধিত বিলটির মাধ্যমে, বিচার চলাকালীন জেরায় ধর্ষিত ব্যক্তির চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন করা নিষিদ্ধ করা হয় এবং ডিজিটাল প্রমাণের গ্রহণযোগ্যতা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এটি লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের ক্ষমতায়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইউএন উইমেনের এ ডকুসিরিজ নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে ও সচেতনতা বাড়াতে বিশ্বব্যাপী প্রচারণার একটি অংশ। পৃথিবীর ১৬টি দেশের গল্প নিয়ে তিন পর্বে নির্মিত সিরিজটি তুলে ধরেছে সহিংসতার মূল কারণ, এর মানবিক প্রভাব এবং কীভাবে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করার পদক্ষেপগুলো বিশ্বব্যাপী নারীদের জীবনে পরিবর্তন আনতে পারে।
নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে ইউ এন উইমেনের প্রতিনিধি গীতাঞ্জলি সিং বলেন, “নারীর ক্ষমতায়ন এবং জেন্ডার সমতায় সারাবিশ্বের সাথে সাথে বাংলাদেশে ও এগিয়েছে। কিন্তু এখনো নারী ও মেয়েদের প্রতি সহিংসতা নির্মূলে অনেক কাজ বাকি এবং আমরা এগোচ্ছি ও অনেক ধীরগতিতে। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন করার পাশাপাশি, আমি আশা করি ডকুসিরিজটি আমাদের মনে করিয়ে দেবে যে নারীর প্রতি সহিংসতা নির্মূলে আমরা সবাই দায়বদ্ধ।”
স্ক্রিনিংয়ের পর বাংলাদেশি নারীদের রেসিলিয়েন্স ও শক্তির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে “ইনভেস্ট ইন উইমেন: এসিলারেট প্রোগ্রেস” শিরোনামে একটি ফটো এক্সিবিশন উন্মুক্ত করা হয় ইএমকে সেন্টারে। দেশব্যাপী ইউএন উইমেনের কার্যক্রম থেকে তুলে আনা বিভিন্ন ছবি দিয়ে এক্সিবশনটি কিউরেট করেছেন শিল্পী এবং ফেমিনিস্ট অ্যাক্টিভিস্ট মনোন মুনতাকা, যা চলবে ২৩ শে মার্চ পর্যন্ত।
ইউএন উইমেনের এই আয়োজনকে সাধুবাদ দিয়ে সুইডেন দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন এবং হেড অব কো-অপারেশন মারিয়া স্ট্রিডসম্যান বলেন, “নারী ও মেয়েদের প্রতি সহিংসতার যে বিভিন্ন রূপ ও ভয়ঙ্কর পরিসংখ্যান উঠে এসেছে এই ডকুসিরিজে, তা বিশ্বব্যাপী বিদ্যমান ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতার এক জটিল চিত্র তুলে ধরে। তার পাশাপাশি আজকের এক্সিবিশনের ছবিগুলোর মতো, নারীদের শক্তি, ক্ষমতা, অবস্থার পরিবর্তনে তাদের ভূমিকা এবং পরিস্থিতি সংশোধনে পুরুষদের ভূমিকার কথাও উঠে এসেছে এই সিরিজে।”
সারাদেশে উন্নয়ন সহযোগী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, নারীবাদী, মানবাধিকার কর্মীসহ প্রায় ৫০ জন এই স্ক্রীনিং এবং এই এক্সিবিশনে অংশ নেন।