সমগ্র পৃথিবীর পুরুষদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে আজ শনিবার (১৯ নভেম্বর) পালিত হচ্ছে “বিশ্ব পুরুষ দিবস”। এবারের দিবসটির প্রতিপাদ্য “হেলপিং মেন অ্যান্ড বয়েজ”।
পরিবারে, সমাজে তথা সারাবিশ্বে একজন পুরুষ যে ইতিবাচক ভূমিকা রাখেন তারই স্বীকৃতি স্বরূপ আন্তর্জাতিকভাবে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এছাড়া যেসব মহাপুরুষ যুগে যুগে এই মানবসভ্যতা বিনির্মাণে আত্মত্যাগ করে গেছেন, এই দিবস তাদের স্মরণ করে।
বিশ্ব পুরুষ দিবস বিশ্বব্যাপী পুরুষদের কল্যাণার্থে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। পুরুষ এবং ছেলেদের সব ক্ষেত্রে সহযোগিতার মনোভাব পোষণ করে প্রতি বছরের মতো বাংলাদেশে এবারও যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে এইড ফর মেন ফাউন্ডেশন।
তথ্যমতে, পুরুষ দিবস পালনের প্রস্তাব প্রথম করা হয় ১৯৯৪ সালে। তবে ইতিহাস বেশ পুরোনো। ১৯২২ সাল থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নে পালন করা হতো রেড আর্মি অ্যান্ড নেভি ডে। এই দিনটি পালন করা হতো মূলত পুরুষদের বীরত্ব আর ত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে।
২০০২ সালে দিবসটির নামকরণ করা হয় “ডিফেন্ডার অব দ্য ফাদারল্যান্ড ডে”। রাশিয়া, ইউক্রেনসহ তখনকার সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে এই দিবস পালন করা হতো।
নারী দিবসের অনুরূপভাবেই দিবসটি পালিত হয়। ষাটের দশক থেকেই পুরুষ দিবস পালনের জন্য লেখালেখি চলছে। কথিত আছে, ১৯২৩ সালে অগণিত পুরুষ ৪ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মতো আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস পালনের দাবি তুলেছিলেন।
সেই সময় পুরুষরা ২৩ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস পালনের জন্য নির্দিষ্ট করেছিল। ১৯৬৮ তে আমেরিকান সাংবাদিক জন পি হ্যারিস একটি নিবন্ধে লেখেন, সোভিয়েত-রাশিয়ায় লিঙ্গ বৈষম্য মারাত্মক। সেখানে নারী দিবস পালিত হলেও পুরুষ দিবসের কোনো অস্তিত্ব নেই। এরপরেই হ্যারিস পুরুষ দিবস পালনের দাবি জানান।
নব্বই দশকের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও মাল্টায় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ফেব্রুয়ারিতে পুরুষ দিবস পালনের জন্য বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করেন। যদিও অনুষ্ঠানগুলো খুব একটা প্রচার পায়নি, অংশগ্রহণও ছিল কম।
১৯৯৯ সালের ১৯ নভেম্বর ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে প্রথম আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস উদযাপিত হয়েছিল। ড. জেরোম তিলক সিং পুরুষদের অবদানের স্বীকৃতির দানের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তার বাবার জন্মদিনে প্রথম বিশ্ব পুরুষ দিবস উদযাপিত হয়।
ধীরে ধীরে এভাবেই ১৯ নভেম্বর হয়ে ওঠে পুরুষদের মুখ। পরবর্তী সময়ে ১৯ নভেম্বর পুরো বিশ্বে পুরুষ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্বব্যাপী পুরুষদের মধ্যে লিঙ্গভিত্তিক সমতা, বালক ও পুরুষদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা ও পুরুষের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার প্রধান উপলক্ষ হিসেবে দিবসটি উদযাপন করা হয়। প্রতি বছর বিশ্বের ৮০টিরও বেশি দেশে পালন করা হয় দিবসটি।