কাটতে গিয়ে চোখে জল এলেও খাবারের স্বাদে বৈচিত্র্যের জন্য পেঁয়াজ ব্যবহার সর্বজনবিদিত। এদেশের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অন্যতম পেঁয়াজ। দেশি পেঁয়াজ আকারে ছোট, তুলনামূলক বড় আকৃতির হয় ভারতীয় পেঁয়াজ। মাঝে সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে ঢাউস আকৃতির তুর্কি পেঁয়াজও দেখা গেছে বাংলাদেশে।
কিন্তু কেউ যদি কখনো শোনেন যে একটা আস্ত পেঁয়াজের ওজনই ৯ কেজি, তাহলে চোখ কপালে উঠতেই পারে! সম্প্রতি এমন এক পেঁয়াজের দেখা মিলেছে ব্রিটেনে। যুক্তরাজ্যের এক মালি প্রায় ৯ কেজি ওজনের একটি পেঁয়াজ উৎপাদন করেছেন। শিগগিরই এটি বিশ্বের সর্বোচ্চ ওজনের পেঁয়াজের স্বীকৃতি পেতে পারে।
আমিরাতের সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস জানায়, গত ১৫ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর ইংল্যান্ডের নর্থ ইয়র্কশায়ারে আয়োজিত হ্যারোগেট অটাম ফ্লাওয়ার শো নামের প্রদর্শনীতে ৯ কেজি ওজনের পেঁয়াজটি প্রদর্শিত হয়। প্রদর্শনীর প্রথম দিনে প্রদর্শিত বৃহদাকার পেঁয়াজটির ওজন ৮.৯৭ কেজি, যা নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়তে পারে।
বিরাট আকারের পেঁয়াজটি নিয়ে হ্যারোগেট অটাম ফ্লাওয়ার শো আয়োজনের দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে ছবিসহ পোস্টও দিয়েছে। সেখানে দেখা যায়, গ্যারেথ গ্রিফিন নামের একজন কৃষক তার মাথার ওপরে পেঁয়াজটি ধরে আছেন। ৯ কেজি ওজনের প্রকাণ্ড পেঁয়াজটির আকার ইংলিশ চ্যানেলের দ্বীপ গার্নসির ওই কৃষকের মাথার চেয়েও বড়।
বর্তমানে বিশ্বের সর্বোচ্চ ওজনের রেকর্ডধারী পেঁয়াজের ওজন সাড়ে আট কেজি। ২০১৪ সালে একই প্রদর্শনীতে টনি গ্লোভার নামের এক কৃষক সেটি নিয়ে এসেছিলেন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর টনি গ্লোভারের আনা পেঁয়াজটিকে বিশ্বের সর্বোচ্চ ওজনের রেকর্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেয় গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস।
গ্যারেথের পেঁয়াজের ব্যাপারে গিনেস কর্তৃপক্ষ এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি। তবে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে খুব শিগগিরই এটি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ওজনের পেঁয়াজের স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে। প্রদর্শনী চলাকালে পেঁয়াজের ওজন পরিমাপ করেছিল ন্যাশনাল ইংলিশ অনার সোসাইটি (এনইএইচএস)।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে গ্যারেথ গ্রিফিন জানিয়েছেন, বাবার কাছ থেকেই তিনি ব্যতিক্রমী বড় পেঁয়াজ উৎপাদনের অনুপ্রেরণা নিয়েছেন। এক যুগ আগে সবচেয়ে বেশি ওজনের পেঁয়াজ উৎপাদনের বিশ্বরেকর্ড প্রায় গড়েও ফেলেছিলেন গ্যারেথ। কিন্তু অল্পের জন্য তিনি বিশ্বরেকর্ডটিকে বগলদাবা করতে পারেননি।
গ্যারেথ গ্রিফিন বলেন, “২০১৪ সালে আমি বিশ্বরেকর্ড প্রায় গড়েই ফেলছিলাম। কিন্তু কয়েক আউন্সের জন্য রেকর্ডটি নিজের করে নিতে পারিনি। আমি তখন থেকে চেষ্টা করছি এবং এই বছর সাফল্যের দেখা পেয়েছি। আমি মনে করি এটি (৯ কেজি ওজনের পেঁয়াজ) একটি ফুটবলের চেয়ে বেশ কিছুটা বড় এবং আকৃতিতে রাগবি বলের মতো।”
গ্রিফিন জানান, সবজি চাষে তিনি দুটি ভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করেন। দুটি পদ্ধতিতেই ২৪ ঘণ্টার সূর্যালোক এবং স্বয়ংক্রিয় সেচ ব্যবস্থা রয়েছে। জমি থেকে তুলে ফেলার উপযোগী হলে তিনি পেঁয়াজগুলোকে একটি বাক্সে ভালভাবে সংরক্ষণ করে সাবধানে পরিবহন করে থাকেন।