আগামী রোজার আগে নির্বাচন আয়োজন করতে হলে তিনটি “বাধ্যতামূলক” শর্ত পূরণ করতে হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। এগুলো হলো- সংস্কার, ফ্যাসিস্টদের বিচার এবং সঠিক নির্বাচন পদ্ধতি।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকার হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত “মিট দ্য প্রেস” অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ইউরোপ ও যুক্তরাজ্য সফরের খুঁটিনাটি জানিয়ে জামায়াত আমির বলেন, “তারা (বিদেশিরা) নির্বাচন নিয়ে জানতে চেয়েছেন যে, এই নির্বাচন কখন-কীভাবে হবে? আমরা বলেছি, অনেক ত্যাগ এবং চেষ্টার বিনিময়ে যে পরিবেশ এসেছে, সেই পরিবেশ তিনটি ম্যান্ডেটরি জিনিস দাবি করছে। প্রথম হলো, দৃশ্যমান, গ্রহণযোগ্য, মৌলিক সংস্কার। আমরা বলেছি, সংস্কারগুলো সাধন না করে যেই নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচন গণতন্ত্রের কোনো ভিত্তি রচনা করতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “এই সংস্কার কারা করবে? সংস্কারের প্রধান অংশীজন হলো রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলো যত তাড়াতাড়ি ও আন্তরিকতার সঙ্গে সংস্কারে সহযোগিতা করবে, তত তাড়াতাড়ি নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হবে।”
জামায়াতের আমির বলেন, “দ্বিতীয় দাবি হলো, যারা নিহত ও আহত হয়েছেন, এই খুনের দায় যাদের, তাদের বিচারের আওতায় এনে দৃশ্যমান বিচার এই জাতিকে দেখাতে হবে। যাতে খুনিদের বিচারের বিষয়ে জাতির আস্থা ফিরে আসে।”
শফিকুর রহমান বলেন, “ফ্যাসিস্টদের বিচার এমনভাবে হওয়া উচিত, যাতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়। নির্বাচনকে এমনভাবে পরিচালনা করতে হবে, যাতে কেউ সহজে প্রক্রিয়াটি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে। এ বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে আরও সংলাপ ও আলোচনা প্রয়োজন।”
তৃতীয় দাবির বিষয়টি জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, “এটি হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোকে পরস্পরকে সম্মান করার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। জিতে গেলে নির্বাচন সুষ্ঠু, আর হেরে গেলে দুষ্ট- এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তবে সেই নির্বাচনটা এমন হতে হবে, যে নির্বাচন নিয়ে কেউ সহজে প্রশ্ন তুলতে না পারে। এ জন্য অনেক ডায়ালগ ও এনগেজমেন্টের প্রয়োজন।”
সম্প্রতি ইউরোপের কয়েকটি দেশ সফর প্রসঙ্গে শফিকুর রহমানের ভাষ্য, সফরের সময় তারা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তবে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। তারা কেবল খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন।
জামায়াতের আমির আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সফরের সময় তারা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য দূতাবাস খোলার আহ্বান জানিয়েছেন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনে সম্মিলিত সহযোগিতা চেয়েছেন।