উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সেমিফাইনালের প্রথম লেগে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের কাছে ১-০ গোলে হেরেছে প্যারিস সেইন্ট-জার্মেই (পিএসজি)। তবে তাদের কোচ লুইস এনরিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে খেলার ব্যাপারে আশাবাদী।
নিকলাস ফুয়েলক্রুগের প্রথমার্ধের একমাত্র গোলে বুধবার (১ মে) ঘরের মাঠে জয় নিশ্চিত করে ডর্টমুন্ড।
ম্যাচ শেষে ব্রডকাস্টার ক্যানাল প্লাসকে পিএসজি বস এনরিকে বলেছেন, ‘‘এটাই ফুটবল। খুব কম সময়ই এটা দুর্দান্তভাবে শেষ হয়। বেশিরভাগ সময়ই ম্যাচের চিত্র ঠিক আজকের মতোই হয়। আমরা হয়তো ভিন্ন একটি পরিস্থিতি নিয়ে ম্যাচটি শেষ করতে পারতাম। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় পুরো ম্যাচের দিকে তাকালে দেখা যাবে লড়াইটা প্রায় সমান হয়েছে।’’
ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা ম্যাচে প্রায় বেশিরভাগ সময়ই নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কাছে রেখেছিল। অন টার্গেট শটও বেশি ছিল তাদেরই। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে গোল আসেনি। কিলিয়ান এমবাপ্পে ও আচরাফ হাকিমির পরপর দুটি শট পোস্টে লেগে ফেরত আসে।
লুইস এনরিকে আরও বলেন, ‘‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল ম্যাচ কখনোই সহজ হয় না। ড্রেসিংরুমে ছেলেরা কিছুটা হতাশ ছিল। আমরা কিছু সুযোগ পেয়েছি তবে শটগুলো পোস্টে লেগেছে। এই স্টেডিয়ামটি কিছুটা ব্যতিক্রম। কিন্তু আমি নিশ্চিত প্যারিসে আমরা শক্তিশালীভাবেই ফিরে আসব। কারণ আমাদের হারানোর আর কিছু নেই। নির্ভার হয়ে খেলাটাই গুরুত্বপূর্ণ।’’
এবারের মৌসুমে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় এ নিয়ে পিএসজি পঞ্চম ম্যাচে পরাজয়ের স্বাদ পেল। এই প্রথম এনরিকের অধীনে কোনো গোল না করে ম্যাচে হারের স্বাদ পেল পিএসজি। এই মৌসুমেই গ্রুপপর্বে ঘরের মাঠে ডর্টমুন্ডকে ২-০ গোলে হারানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে প্যারিসের জায়ান্টদের। সেপ্টেম্বরে গ্রুপপর্বের ম্যাচটিতে অনেকটাই দাপুটে জয় পেয়েছিল এনরিকের দল।
কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সেলোনার সঙ্গে প্রথম লেগে ৩-২ গোলে হেরেও দ্বিতীয় লেগে ৪-১ গোলে জয়ী হয়ে সেমিফাইনালের টিকেট পায়। এসবই পিএসজিকে বাড়তি অনুপ্রেরণা দিচ্ছে।
২০২০ সালে শেষ ষোলতে জার্মান ক্লাবটির বিপক্ষে প্রথম লেগে ২-১ গোলে পরাজিত হলেও দ্বিতীয় লেগে ঘরের মাঠে ২-০ গোলে জয়ী হয়েছিল।
পিএসজি অধিনায়ক মারকুইনহোস বলেছেন, ‘‘আমরা এমন দুটি দল যারা আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে পছন্দ করি। যে কারণে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে লড়াইটা বেশি হয়। ম্যাচটি শারিরীকভাবেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। ফলাফল বিবেচনায় আমরা সুযোগ বেশি পেয়েছি। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে সুষ্পষ্ট সুযোগগুলো আমরাই তৈরি করেছি। এখন ফাইনালে খেলার জন্য মুখিয়ে আছি। ঘরের মাঠে আমাদের সুযোগগুলো শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। এই স্টেডিয়ামে খেলা সবসময়ই কঠিন। আমরা এখানে বারবার আসতে চাই এবং জিততে চাই। এবার হয়তো পারিনি, কিন্তু পার্থক্যও খুব বেশি নয়, মাত্র ১-০। অতীতে এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। বিশেষ করে ঘরের মাঠে স্বাগতিক সমর্থকদের শক্তি আমাদের বাড়তি অনুপ্রেরণা দেয়। আমি নিশ্চিত প্যারিসে সবাই একটি ভিন্ন চিত্র দেখতে পাবে।’’
এদিকে লুইস এনরিকে স্বীকার করেছেন প্রথমার্ধের শেষভাগে ডিফেন্ডার লুকাস হার্নান্দেজের ইনজুরি নিয়ে তিনি এখনো নিশ্চিত করে কিছু জানেন না। তবে ধরন দেখে মনে হয়েছে চোট গুরুতর। ফুয়েলক্রুগের গোল আটকাতে গিয়ে হাঁটুতে আঘাত পান হার্নান্দেজ। এরপর বেশিক্ষণ আর মাঠে থাকতে পারেননি। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগেই তার বদলি নামেন লুকাস বেরালডো।