ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, “বাংলাদেশে কীভাবে নির্বাচন হবে, তা সেই দেশের মানুষই নির্ধারণ করবে। ভারত চায় বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা থাকুক ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্র পরিচালিত হোক।”
সোমবার (১৬ অক্টোবর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দিল্লি সফররত বাংলাদেশের সাংবাদিক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (বাংলাদেশ-মিয়ানমার বিভাগ) নবনীতা চক্রবর্তী, শিলাদিত্য হালদার (ফাস্ট সেক্রেটারি, ইন্ডিয়া হাইকমিশন অব বাংলাদেশ) এবং ভারতে সফরত বাংলাদেশ থেকে সাংবাদিক প্রতিনিধি দল।
বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর তৎপরতার প্রেক্ষাপটে ভারতের ভূমিকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অরিন্দম বাগচি বলেন, “দেশটির স্বাধীনতা জয়ে ভারত পাশে ছিল, বর্তমানেও আছে, আগামীতেও থাকবে। আমাদের কাজ বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কোন্নয়ন করা। দুদেশের সরকারই তা করে চলেছে। দুদেশের সম্পর্ক চমৎকার। আমাদের সম্পর্ক বাংলাদেশের সঙ্গে, সে দেশের জনগণের সঙ্গে। কোনো নির্দিষ্ট দলের সঙ্গে নয়।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ভারতের সংবিধানে এমন কিছু নেই, ভারতে এমন কিছু হয় না। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সংবিধানে যা বলা আছে, হয়তো সেটাই হবে। ওটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। যেটা গণতন্ত্রের জন্য ভালো, নিশ্চয় বাংলাদেশ তা করবে। বাংলাদেশের জনগণ তা করবে।”
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ককে ভারত কীভাবে দেখে এমন প্রশ্নের জবাবে বাগচি বলেন, “বাংলাদেশ একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশ কার সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে সেটা তাদের বিষয়। এ ব্যাপারে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। যদি তারা মনে করেন তাদের ভালো, তবে তারা সেটাই বেছে নেবেন। কিন্তু ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অন্য কোনো দেশের সঙ্গে তুলনা চলে না। ভারত বাংলাদেশ সম্পর্ক সবচেয়ে উঁচুতে।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব স্মিতা পান্ত বলেন, “ভারত বাংলাদেশের জনগণের সস্পর্ক কীভাবে আরও সহজ করা যায় সেটা নিয়েও কাজ করছে ভারত। দুদেশের বন্ধুত্ব সম্পর্ক বহু বছর আগে থেকেই। সম্প্রতি ভারতের ভিসা নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তা সাময়িক। শিগগির এই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। আপনারা ভ্রমণ করলে ভারতই লাভবান হয়। সুতরাং এ সমস্যা কেটে যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “দুই দেশের যোগাযোগ খাতে ভারত বেশকিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে এবং করছে। চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেল যোগাযোগ, ত্রিপুরার সঙ্গে রেল ও নদীপথের যোগাযোগ উল্লেখযোগ্য। সবশেষ দুই বছর উন্নয়ন খাতে ভারত অনেক কাজ করেছে। ট্রানজিট ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে বাণিজ্য ও রপ্তানির সুযোগ দিচ্ছে ভারত। রপ্তানিকারকরা এতে লাভবান হচ্ছেন।”
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, “ভারত এখন নিত্যনতুন উদ্ভাবন, সবুজ জ্বালানি, প্রযুক্তি প্রভৃতি দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের কানেকটিভিটি এবং উন্নয়ন সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ। কোভিড মহারিতেও বাংলাদেশে ভারতের উন্নয়ন সহায়তা কার্যক্রম থেমে থাকেনি। তৃতীয় দেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ভারতের কলকাতা ও দিল্লি বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারছেন।”