চলমান সংঘাতের মধ্যে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যসহ ৩৩০ জনকে বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বুধবার বিজিবির সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানী উপকুলের নৌবাহিনীর জেটি ঘাট এলাকা দিয়ে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৩৩০ সদস্যকে দেশটির কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
গত ৪ থেকে ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশে আসে মিয়ানমারের সেনাসহ বিভিন্ন বাহিনীর ৩৩০ জন সদস্য। তাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে দুই দেশের সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে আলোচনা চলছিল।
এই হস্তান্তর প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা। তবে দুপক্ষের আলোচনার ভিত্তিতে ওই বিজিপি সদস্যদের কক্সবাজার থেকে সমুদ্রপথে মিয়ানমারে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে আগেই জানিয়েছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ৩৩০ জনের মধ্যে ১০০ জনকে গত ৮ ফেব্রুয়ারি বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্ত এলাকা থেকে টেকনাফে স্থানান্তর করা হয়েছিল।
বিজিবির তথ্যমতে, মিয়ানমারের নৌ বাহিনীর একটি জাহাজ বাংলাদেশের সীমানায় এসে গভীর সাগরে অবস্থান করবে। পালিয়ে আসা বিজিপি সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের ওই জাহাজে নিয়ে গিয়ে হস্তান্তর করা হবে। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ প্রক্রিয়া শুরু হবে।
সম্প্রতি আরাকান আর্মিসহ বেশ কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী বাংলাদেশের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় যুদ্ধ জোরালো করেছে। তারা সম্মিলিতভাবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে।
এর মধ্যে তারা কোনো কোনো সীমান্ত শহর দখল করে নিয়েছে। এ অবস্থায় বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধে টিকতে না পেরে ৪ থেকে ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ঘুমধুম সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন বিজিপির এই সদস্যরা। তাদের বিজিবির তত্ত্বাবধানে রাখা হয়।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবরের শেষ দিক থেকে মিয়ানমারের তিনটি জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী একজোট হয়ে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো হলো- তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি-টিএনএলএ, আরাকান আর্মি-এএ এবং মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি-এমএনডিএএ।