লেবাননে গত এক দশকে তিনগুণেরও বেশি দারিদ্র্যতা বেড়েছে বেড়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক। ফলে দেশের জনসংখ্যার মধ্যে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের হার বেড়েছে ৪৪% এর বেশি।
সম্প্রতি দেশটির আটটি গভর্নরেটের মধ্যে পাঁচটিতে এক জরিপ পরিচালনা করা হয়।
এতে দেখা যায়, ২০১২ সালে দারিদ্র্যতা ১২% থেকে ২০২২ সালে ৪৪% এ উঠে এসেছে।
বৈরুতে এক দশকে জনসংখ্যার ২% থেকে ৪% দারিদ্র্যতায় উঠে এসেছে। উত্তরে ব্যাপকভাবে অবহেলিত আক্কর অঞ্চলে এই হার ২২% থেকে ৬২%-এ উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে লেবাননের নাগরিকদের সঙ্গে সিরিয়ার শরণার্থীদের বিশাল জনসংখ্যার মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্যও প্রকাশ করা হয়েছে।
যেখানে বলা হচ্ছে, ২০২২ সালে লেবানিজদের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ছিল ৩৩%, একই বছর সিরিয়ানদের মধ্যে তা ৮৭%-এ পৌঁছেছে।
গবেষকরা দেখেছেন, লেবাননের ৭৩% ও অ-লেবানিজ বাসিন্দাদের ১০০% নাগরিকই দারিদ্র্যতার মধ্যে বাস করছেন।
যেখানে তারা বিদ্যুৎ, শিক্ষাসহ নাগরিক সুবিধার কোনোটাই ব্যবস্থা করতে পারছেন না।
২০১৯ সালে অর্থনৈতিক সঙ্কট শুরুর পর থেকে মুদ্রার পতন হতে দেখেছে দেশটি। এরমধ্যে আকাশচুম্বী হয়েছে মুদ্রাস্ফীতি, দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) হ্রাস পেয়েছে।
অনেক লেবানিজ দেখেছে, তাদের জীবনের সব সঞ্চয় একরকম হাওয়ার মতো ফুরিয়ে যাচ্ছে। দিন দিন পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। দেশটির মুদ্রা প্রায় ৯৫% মূল্য হারিয়েছে। ব্যাংকগুলো বেশিরভাগ আমানতকারীর সঞ্চয় দিতে পারছে না।
অনেকেই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বেলআউটকে সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র পথ হিসেবে দেখেন। তবে ২০২২ সালে আইএমএফের সঙ্গে একটি প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছানোর পর থেকে, লেবাননের কর্মকর্তারা চুক্তিটি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সংস্কারে খুব কমই অগ্রগতি দেখিয়েছেন।
এই সপ্তাহে বৈরুত পরিদর্শন করে আইএমএফের একটি দল। তাদের ভাষ্য, ‘‘আর্থিক ও আর্থিক সংস্কারে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। তবে সঙ্কট থেকে পুনরুদ্ধারে যে পরিমাণ দরকার, তা থেকে এটি কম।’’
পরিদর্শনকারী আইএমএফ মিশনের প্রধান আর্নেস্টো রামিরেজ রিগো বলেন, ‘‘লেবাননের চলমান শরণার্থী সঙ্কট, তার দক্ষিণ সীমান্তে ইসরায়েলের সাথে লড়াই ও গাজা যুদ্ধ থেকে ছড়িয়ে পড়া ইতিমধ্যেই ভয়াবহ অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।’’