ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়ার পর গাজার কয়েকটি লক্ষবস্তুতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ২০০ জন।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা এসব হতাহতের কথা নিশ্চিত করেছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে আলোচনায় অগ্রগতি না হওয়ায় তিনি এসব হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
গাজার উত্তরাঞ্চল, গাজা সিটি, দেইর আল বালাহ, খান ইউনিস, রাফাসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, নিহত মানুষের অনেকেই শিশু।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অভিযানটি উন্মুক্ত ছিল এবং এটি বাড়বে হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, “এখন থেকে ইসরায়েল সামরিক শক্তি বাড়িয়ে হামাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’’
এই অতর্কিত হামলা মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাসে তুলনামূলকভাবে শান্ত সময়কে অস্থির করেছে। ফলে ১৭ মাস ধরে চলা যুদ্ধ পুরোপুরি আবার শুরুর সম্ভাবনা বাড়িয়েছে। বিগত ১৭ মাসের যুদ্ধে ৪৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই সময়ে গোটা গাজায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার পর হামাসের হাতে জিম্মি থাকা ইসরায়েলি দুই ডজনের বেশি নাগরিকে বেঁচে থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যাদেরকে এখনো জীবিত বলে মনে করা হচ্ছে।
হামাস এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের বিনা উস্কানিতে উত্তেজনা বৃদ্ধির নিন্দা জানিয়ে বলেছে, তারা জিম্মিদের ভাগ্যকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।
তাৎক্ষণিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে মিশর ও কাতারের সঙ্গে মধ্যস্থতা প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দেওয়া মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ সতর্ক করে বলেছেন যে, হামাসকে অবশ্যই জীবিত জিম্মিদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে অন্যথায় কঠোর মূল্য দিতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা অভিযানের বিষয়ে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেন, “হামাসের সামরিক, নেতা ও অবকাঠামোতে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এছাড়া বিমান হামলা ছাড়াও অভিযানের পরিসর বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। হামাসের বিরুদ্ধে নতুন করে হামলার পরিকল্পনা ও পুনর্গঠনের চেষ্টা করা হচ্ছে।”
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে হামাস যোদ্ধা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ফিরে আসে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, “জিম্মিদের মুক্তি না দিলে গাজাকে নরকে পরিণত করা হবে। যতক্ষণ না আমাদের সব জিম্মি ঘরে ফিরছে এবং আমরা যুদ্ধের সব লক্ষ্য অর্জন না করছি, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা লড়াই থামাবো না।’’
গাজাজুড়ে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং সকালের বিমান হামলায় কমপক্ষে ২০০ জনের অধিক নিহত হয়েছে বলে লাশ গ্রহণকারী বিভিন্ন হাসপাতাল জানিয়েছে।
অঞ্চলটির বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, তাদের কর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা চালাতে কঠিন সময় পার করছেন। কারণ, একইসঙ্গে বিভিন্ন এলাকাকে হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হচ্ছে।