“মানসিক স্বাস্থ্য ছাড়া স্বাস্থ্য নয়” এই কথাটি এখন সর্বজন বিদিত। অর্থাৎ মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি শারীরিকভাবে সুস্থ হলেও তিনি মূলত সম্পূর্ণ সুস্থ নন। কিন্তু তারপরও মানসিক স্বাস্থ্যের সুস্থতার বিষয়টি সারবিশ্বেই বেশ অবহেলিত। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বিষয়টি নিয়ে বেশ নড়েচড়ে বসেছে। করোনাভাইরাস মহামারি বিশ্বে মানসিক স্বাস্থ্যে বড় রকম বিপর্যয় ডেকে এনেছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা নারী, পুরুষ, শিশুসহ সব বয়সী কিংবা সব শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে যেকোনো সময়ে যেকোনো কারণে দেখা দিতে পারে। তবে কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপ একটি বেশ উদ্বিগ্ন হওয়ার মতোই একটি বিষয় হিসেবে দেখছে ডব্লিউএইচও।
প্রতিদিনিই প্রায় একই রকমের রুটিন, একই সঙ্গে অনেক কাজ করা, শিফটে কাজ করা এরকম অনেক কিছুই মানসিক চাপ বাড়ায়৷
কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপের ফলে অবসন্নতা হার্ট ও পেশির অসুখের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। উত্সাহ স্তিমিত হয়, দুর্বল হয় ইমিউন সিস্টেম ।
কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপ পরিমাপ করাটা বেশ কঠিন। এক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট সীমারেখা নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বিশ্বজুড়ে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে বছরে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ২ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। আগামী ২০৩০ সালে এ ক্ষতির পরিমাণ ৬ ট্রিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে বলে ধারণা করছে সংস্থাটি। একটু কৌশলী হলে মানসিক চাপ থেকে বেরিয়ে উদ্দীপনা নিয়ে কাজ করা সম্ভব।
সীমা নির্ধারণ করুন
আপনি কাজের ক্ষেত্রে চাপে থাকলে তাকে মানিয়ে নেওয়ার জন্য সীমা নির্ধারণ করে নিতে পারেন। এটি অনেকটাই আপনার চাপ কমাতে সহায়ক হবে। নির্দিষ্ট কাজের সময় নির্ধারণ করুন এবং সেগুলো মেনে চলুন। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, আপনার কাজের সময় যদি সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হয়, নিয়মিত সেই সময়ে কাজ করা বন্ধ করার চেষ্টা করুন। এভাবে নিয়মতান্ত্রিকভাবে কাজ করলে চাপ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
আচার অনুষ্ঠান
কাজের জন্য নির্দিষ্ট কিছু আচার অনুষ্ঠানে জড়াতে পারেন। এগুলো আপনার কাজের ক্ষেত্রে চাপ কমাতে সহায়তা করতে পারে। যেমন ধরুন— কজের দিন কি পোশাক পরবেন সেটি নির্ধারণ করুন, কাজের ছুটির দিনে কি পরবেন সেটি নির্ধারণ, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ ইত্যাদি।
কাজে পরিবর্তন আনুন
আপনি টানা একই রকম কাজ করতে থাকলে তা আপনার চাপ বাড়াতে পারে। তাই আপনি কাজে কিছুটা পরিবর্তন আনার চেষ্টা করুন। এটি আপনাকে অনেকটাই চাপ কমতে সহায়তা করবে। সান দিয়েগোর মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডেভিড রেইস বলেছেন, যদি আপনার কাজ করতে চাপ মনে হয়, তা হলে এমন কিছু করুন যা আপনাকে হতাশাজনক বিষয় থেকে আপনার মনোযোগ সরিয়ে নিতে সহায়তা করবে।
সহকর্মীকে সাহায্য করুন
ভালো কিছু করা সবসময়ই ভালো অনুভূতি প্রদান করে। তাই আপনার চাপ কম হলে আপনি সহকর্মীকে সাহায্য করতে পারেন। এটি আপনাকে ভালো অনুভূতি প্রদান করবে এবং আপনার চাপ কমাতে সহায়তা করতে পারে। এমনটিই পরামর্শ দিয়েছেন 'দ্য হ্যাপিনেস প্রজেক্ট' বইয়ের লেখক গ্রেচেন রুবিন।
রিলাক্স
অনেকক্ষণ একভাবে কাজ করলে তা আপনার চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এমনটি কাটাতে আপনার শরীরকে কিছুক্ষণের জন্য প্রসারিত করতে পারেন। এ জন্য একটু হাঁটা, শরীরকে টান করা, বারান্দা বা ছাদ থাকলে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করার মতো কিছু করতে পারেন। এটি আপনার চাপ কমাবে।