স্যোশাল মিডিয়ার যুগে রাজ জাগা স্বাভাবিক ঘটনা। অসংখ্য ব্যবহারকারী তাদের রাত কোনদিক দিয়ে ভোর হয় তা বলতেও পারেন না। বেশিরভাগ মানুষের চোখে দিনের বেলা ঘুম ঢলে পড়ে। মনে হয় হয়তো কোনো জরুরি কাজে রাত জেগেছেন তারা।
তারপরও রাত জাগার জন্য একটা দিবস আছে। রাতের সৌন্দর্য আর মাদকতা উপভোগ করার জন্যই দিবসটি পালন করা হয়। আজ ১৩ মে সেই দিবস। সারা রাত জাগা দিবস। আমেরিকায় পালিত হয় এটি। ন্যাশনাল টুডের এক প্রতিবেদনে দিবসটি সম্পর্কে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
কোনো মাধ্যমে বা অনলাইনে না থেকে পুরো একটি রাতকে পর্যবেক্ষণ করতে পারেন আজ। রাতের আকাশ, তারা, মেঘমালা, নক্ষত্র আর প্যাঁচার ডাক শুনতে পারেন। যারা শহরে থাকেন তারা সুনসান নিস্তব্ধতায় দ্রুত বেগে ছুটে চলা গাড়ির শব্দ থেকে ছুটে চলার উপলব্ধি করতে পারেন।
যারা ঘরের বাইরে বের হতে পারবেন না, তারা জানালা খুলে বা বাসার ছাদে চা-কফির সঙ্গে রাতটাকে স্মরণীয় করে রাখতে পারেন। প্রিয়জনের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পারেন অনেক স্মৃতি। নিশাচরেরা রাতকে পাহারা দেন। যখন পুরো পৃথিবী ঘুমায়ে যায় তখন পৃথিবীকে পাহারা দেন নিশাচরেরা। আপনি সেই নিশাচর হতে পারেন আজ।
যখন মানুষ কেবলই পৃথিবীকে বসবাসযোগ্য করে তুলতে সংগ্রাম শুরু করেছে। পশু শিকারই তাদের জীবিকার প্রধান উপায় তখন থেকেই রাত জাগা শুরু। শিকারিরা যখন শিকারে যেতেন তার পরিবারের সদস্যরা না ঘুমিয়ে অপেক্ষা করতেন। এছাড়া আধুনিক সময়ে অনেক পেশার মানুষকে না চাইলেও রাত জেগে থাকতে হয়। বিশেষ করে চিকিৎসাপেশার সঙ্গে যারা যুক্ত। যারা ফার্মেসি সেবা দেন তাদের। এই মানুষদের রাত জাগার ক্লান্তি, অবসাদ ভুলে কাজ করেযেতে হয়। আজ রাতটি তাদের কাজের কষ্ট উপলব্ধিরও দিন।
অন্যদিকে পৃথিবীজুড়ে সভ্যতা যত বিকাশ লাভ করছে মানুষের কাজের চাপ ও কর্মঘণ্টা তত বেড়েছে। ন্যাশনাল টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে রাতের শিফটে কাজ করেন প্রায় ২৬% মানুষ। এই মানুষেরা সভ্যতার বিকাশে, মানুষের জন্য বিভিন্ন সেবা আরও বেশি সহজ ও আরামদায়ক করতে কাজ করেন। দেশে দেশে যারা রাতের শিফটে কাজ করেন তাদের কাজকে মূল্যয়নের সুযোগও তৈরি করতে পারে এই একটা রাত জেগে থাকার মাধ্যমে। সব পেশার মানুষকে তার সম্মান জানানোর জন্যই দিবসটি পালন করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সংবাদ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কিংবা কল সেন্টারের মতো প্রতিষ্ঠানের কর্মীদেরও নিয়ম করে পালাক্রমে রাত জেগে দায়িত্ব পালন করতে হয়। সারা রাত মাছ ধরে সকালে জেলেরা ঘরে ফেরেন। নৈশপ্রহরী রাত জেগে পাহারা দেন বলেই আমরা নিশ্চিন্তে ঘুমাই। আজকে জেগে থেকে তাদের কাজকে সম্মান জানাতে পারেন।
অন্যদিকে রাত জাগা অনেকের কাছে শখের কাজও। কেউ কেউ নিজের ভেতরে ডুবে যাওয়ার জন্য রাতের নিস্তব্ধতার জন্য অপেক্ষা করেন। কেউ কেউ গভীর চিন্তায় মনোনিবেশ করতে রাত জাগেন। কেউ কেউ ইনসমনিয়ায় ভুগে রাত জাগেন। যে কারণেই রাত জাগা হোক না কেন, একটা প্রাকৃতিক নিয়মকে পাত্তা না দিয়ে, ঘুমকে বিদায় জানিয়ে তাদের এই রাতজাগার উপলব্ধি বা যন্ত্রণাকে নিজের জীবন দিয়ে বুঝতে পারেন আজ।