সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ “আওয়ামী লীগের লোক নন” বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, “বেনজীর আমাদের দলের লোক নয়। সিনিয়রিটি ও মেধা নিয়ে সে আইজিপি হয়েছে। আজিজও আমাদের দলের লোক নয়। তার যোগ্যতা ও সিনিয়রিটির ভিত্তিতেই সেনাপ্রধান হয়েছে। এখন ভেতরে তারা যদি কোনো অপকর্ম করে, এটা যখন সরকারের কাছে আসে তখন এদের বিচার করার সৎ-সাহস শেখ হাসিনার আছে।”
মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ছয়দফা দিবস এবং ২৩ জুন আওয়ামী লীগের “প্লাটিনাম জয়ন্তী” উদযাপন উপলক্ষে এক প্রতিনিধি সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আপনাদের সময় কেউ শাস্তি পায়নি। আপনাদের দলের নেতা নিজেই দুর্নীতিবাজ। সিঙ্গাপুর থেকে কোকোর (আরাফাত রহমান কোকো) টাকার একটা অংশ আনতে পেরেছি। এফবিআই ঢাকায় এসে তারেকের (তারেক রহমান) বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে লক্ষ্য করেছি, বিরোধীদল বিএনপি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলছে, অর্থপাচারের বিরুদ্ধে কথা বলছে। তাদের দলের প্রধান দুর্নীতির অভিযোগে সাজা ভোগ করছে। প্রধানমন্ত্রীর উদারতায় বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী নিজেই এটা করেছেন। বিএনপি আন্দোলন করতে পারেনি, তাদের আন্দোলনে জনগণ সম্পৃক্ত হয়নি। হেরে যাওয়ার ভয়ে নির্বাচনেও অংশ নেয়নি।”
ওবায়দুল কাদের বলেন, “৮ জনকে পাশ কাটিয়ে ৯ নম্বর ব্যক্তি মঈন ইউ আহমেদকে সেনাপ্রধান করা হয়েছিল, কে করেছে? বেগম খালেদা জিয়া। আশরাফুল, রকিবুল হুদা, কোহিনূর কার সৃষ্টি? মির্জা ফখরুল অন্ধকারে ঢিল ছুড়ছেন। ভুলে গেছেন, আপনার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অস্ত্র চোরাচালান, মানি লন্ডারিংয়ের মামলায়, দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশে-বিদেশে সর্বত্রই একজন সৎ পলিটিশিয়ান হিসেবে পরিচিত। তার সততা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো অবকাশ নেই।”
তিনি বলেন, “আমাদের প্রধান প্রধান নেতাদের কে দুর্নীতিবাজ? সাক্ষ্যপ্রমাণ নিয়ে আসেন। দুর্নীতিবাজ আপনাদের দলের চোরের রাজা, চোরের মহারাজা সবই বিএনপি। বিএনপি দুর্নীতিবাজদের জন্মদাতা।”
এসময় দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা টিআইবি ও সুজনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “আজ টিআইবি একটা আছে, সুজন আছে... সুজন না কুজন জানি না। ফখরুল, গয়েশ্বর যে সুরে কথা বলে, তারাও একই সুরে কথা বলে। আজ মানুষের প্রশ্ন, টিআইবি সুজন কি বিএনপির ‘বি’ টিম? যে সুরে কথা বলে, কোনো পার্থক্য নাই, একই সুরে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে।”
তিনি বলেন, “দলের বদনাম করে কেউ কোন অপকর্ম করবেন না। সত্য সত্যই। বাইরে থেকে বেনজীরকে আমরা যেভাবে দেখেছি, তিনি যে আরেক বেনজীর ভেতর থেকে সেটা তো এখন সত্য হয়ে দেখা দিচ্ছে। একজন মানুষের চলতে-ফিরতে কত টাকা লাগে? দলের নেতা যদি দলের কর্মীদের কাছে টাকা-পয়সা চায়, এটা খুব লজ্জার বিষয়।”