ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি সার্ভিস (ওসেক) চালু হয়েছে।
হাসপাতালটিতে যেসব রোগীরা জরুরি চিকিৎসা নিতে আসবেন তাদের রোগ গুরুতর না হলে এখানেই সেবা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হবে।
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) এই সার্ভিসের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
এসময় মন্ত্রী বলেন, এই ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি সার্ভিস চালুর মাধ্যমে রোগীরা জরুরি সেবা পাবে। যার যে সেবা প্রয়োজন, সেই সেবা নিতে পারবেন। এখানে রোগ অনুযায়ী জরুরি চিকিৎসা দেওয়া হবে, রোগ গুরুতর হলে সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এর আগে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ আরও কয়েকটি বড় হাসপাতালে এই সেবা চালু করা হয়েছে। সকল হাসপাতালে ওসেক চালুর পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। আরও উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, যেসব রোগীরা জরুরি চিকিৎসা নিতে আসবেন তাদের রোগ অনুযায়ী ওসেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গুরুতর না হলে এখানে সেবা দিয়ে বাড়িতে ফিরতে পারবেন রোগীরা। আর গুরুতর হলে রোগ বিবেচনায় চিকিৎসা চলবে। এই সেবার মাধ্যমে হাসপাতালের ওয়ার্ডের ওপর চাপ কমবে।
শনিবার (১৪ জানুয়ারি) থেকে ওসেক সার্ভিসটিতে প্রাথমিকভাবে রোগীদের সেবাদান শুরু হয়। এই সার্ভিস উদ্বোধনের মাধ্যমে পুরোদমে সেবাদান শুরু করলো সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
যেসব সেবা মিলবে ওয়ান স্টপ সার্ভিসে-
১. যেকোনো রোগী জরুরি ভিত্তিতে দিন রাত ২৪ ঘণ্টাই চিকিৎসা নিতে পারবেন।
২. রোগীর জরুরি প্রয়োজনে যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা এখানে রয়েছে ফলে রোগীকে জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য অন্য কোথাও যেতে হয় না।
৩. এখানে জরুরি রোগীর সেবায় অত্যাধুনিক ল্যাব সাপোর্ট, বেড়া সাইড আল্ট্রাসাউন্ড (ইউএসজি), ইসিজি, পোর্টেবল এক্স-রে সহ প্রায় সকল ধরনের ডায়াগনস্টিক সুবিধা রয়েছে।
৪. মেডিকেল অফিসার ছাড়াও এখানে সার্বক্ষণিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এর সেবা থাকবে।
৫. চিকিৎসকদের পাশাপাশি জরুরি রোগীর সুষ্ঠু ও মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে এখানে রয়েছে নার্স, প্যারামেডিকস, ওয়ার্ডবয়, আয়া ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী, সেবা প্রদান করবে।
৬. জরুরি রোগীর প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখানে জরুরি অপারেশনেরও সুবিধাও পাওয়া যাবে।
৭. গুরুতর রোগীর প্রয়োজনে এখানে রয়েছে মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশন ও চার শয্যার আইসিইউ সাপোর্ট।
৮. কর্তব্যরত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জরুরি রোগী ভর্তি অথবা অবজারভেশনে রেখে চিকিৎসা করার ব্যবস্থা এখানে থাকবে।
৯. জরুরি রোগীর উন্নত এবং বিশেষায়িত চিকিৎসার জন্য রেফারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করার জন্য এখানে রয়েছে ২৪ ঘণ্টা অ্যাম্বুলেন্স সেবা।
১০. জরুরি রোগীর প্রয়োজনে ব্যবহৃত বেশির ভাগ ঔষধপত্র এখানে থাকবে।
১১. রোগী ৪৮ ঘণ্টার বেশি ভর্তি থাকা লাগলে, অন্তঃবিভাগে বিভিন্ন ওয়ার্ডে রুটিন রোগী হিসেবে ভর্তির ব্যবস্থা করা হবে এবং আইসিইউ সহায়তা প্রয়োজন হলে হাসপাতালের অন্তঃবিভাগে আইসিইউতে স্থানান্তরের ব্যবস্থা থাকবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক প্রমুখ।