ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশের লাখো ঘরবাড়ি। পানিতে ভেসে গেছে কৃষিজমি। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বহু এলাকা। এর মাঝে বেশ কয়েকজনের প্রাণহানির খবরও পাওয়া গেছে।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতির নানা দৃশ্য দেখা যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি-ভিডিওতে। এসবের ভিড়ে একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, যেটি দেখে অনেকে আঁতকে উঠছেন।
ছবিটিতে দেখা গেছে, কর্দমাক্ত স্থানে এক মা তার শিশু সন্তানকে নিয়ে ভেঙে পড়া একটি টিনের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিয়েছেন। মানবিক আবেদনধর্মী এই ছবিটি আসলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে বলছেন, ছবিটি ভোলার চরফ্যাশনের।
বাংলাদেশের তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার বলছে, ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি। যেটি এর আগেও ইন্টারনেটে প্রচারিত হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার বলছে, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে ভোলার চরফ্যাশনে কদমাক্ত স্থানে মা ও সন্তানের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত এই ছবিটি বাস্তব নয়, বরং অন্তত গত মার্চ থেকেই ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে ছবিটি; যা এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি।
রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, এই ছবিটি অন্তত আড়াই মাস ধরে ইন্টারনেটে রয়েছে। গত মার্চ থেকে প্রচার হওয়া ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে তায়েফ রাব্বানী নামে বাংলাদেশি এক ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্টে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। তবে ছবির ক্যাপশনে ছবিটির বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। আরও অনুসন্ধান করে গত ৩ থেকে ৭ মার্চ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের (ইউটিউব, এক্স, ফেসবুক) একাধিক অ্যাকাউন্টে ছবিটি পোস্ট হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।
এসব পোস্টে ছবিটির বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া না হলেও এটা নিশ্চিত যে, ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। ছবিটি ভালোভাবে লক্ষ্য করলে এতে কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়ে। যেমন, নারীটির হাতের আঙুল অস্বাভাবিক লম্বা, পায়ে ছয়টি আঙুলের অস্তিত্ব। এসব দেখে প্রাথমিক অবস্থায় ছবিটি এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি বলে প্রতীয়মান হয়।
এক প্রতিবেদনে রিউমর স্ক্যানার বলেছে, ছবিটি বাস্তব কি-না সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি ছবি শনাক্তকরণ ওয়েবসাইটের সহায়তা নেওয়া হয়। ওয়েবসাইটটি থেকে জানা যায়, ছবিটি বাস্তব নয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি। তাছাড়া, গত মার্চে ভারতের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান “নিউজমোবাইল” ছবিটিকে এআই দিয়ে তৈরি বলে জানায়।