বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের নিয়ে আশঙ্কার কারণ রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি জানান, রোহিঙ্গাদের নিয়ে আশঙ্কার কিছু কিছু আলামত দেখা যাচ্ছে; যা আমরা আগে থেকেই আঁচ করা হয়েছিল।
শুক্রবার (৩১ মে) দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত এসব রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। আমরা আগে থেকে বলে আসছিলাম এদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্বদেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো না গেলে এখানে অস্তিরতা তৈরি হতে পারে।”
মন্ত্রী বলেন, “এখানে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের হাব তৈরি হতে পারে। অস্ত্রের ঝনঝনানি হতে পারে। অনেক কিছুই হতে পারে। এই হতে পারার মধ্যে কিছু কিছু আলামত আমরা দেখতে পাচ্ছি।”
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, “মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যারা যুদ্ধ করছে তাদের কয়েকজনের আনাগোনা এখানে (রোহিঙ্গা ক্যাম্পে) দেখা যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় ভয়ের বিষয় হচ্ছে আমাদের দেশ কোনো মাদক উৎপাদন করে না। কিন্তু মিয়ানমার থেকে মাদক আসছে অনেক আগে থেকে।”
তিনি বলেন, “এখন ক্যাম্পের কিছু সংখ্যক লোক মাদকের সাথে জড়িয়ে গেছে। আমরা তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। একই সঙ্গে অস্ত্র ও খুনে জড়িতদেরও চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। এদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নেওয়া আমাদের মূল কাজ।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বেলা ১১টায় উখিয়ার ১৯ নম্বর ঘোনারপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন-এপিবিএন কার্যালয়ে যান। সেখানে এপিবিএন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুপুর সোয়া ১২টা পর্যন্ত সভা করেন। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, “রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এসে নিরাপত্তায় নিয়োজিত এপিবিএনের সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে তাদের চ্যালেঞ্জসমূহ জেনেছি। জেনেছি তাদের সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে। তাদের বলেছি বাংলাদেশ একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছে জঙ্গি-সন্ত্রাস দমনের মধ্য দিয়ে। এপিবিএন তাদের দায়িত্ব পালন করছে বলেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ এবং নিয়ন্ত্রিত।”
মিয়ানমারের কথা ও কাজে মিল নেই উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, “আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো নিয়ে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। মিয়ানমার একটি অস্থিতিশীল দেশ। ওখানে যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলা। বিভিন্ন সময় মিয়ানমারের সাথে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো নিয়ে নানা চুক্তি বা সমঝোতায় স্বাক্ষর হলেও তা মিয়ানমারের কারণে অগ্রগতি হয়নি। আশা করি, মিয়ানমার দ্রুত সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে।”
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা ক্যাম্পটির এ-৭ ব্লকের পাহাডড়ি এলাকা পরিদর্শন করেন। সেখান থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যান টেকনাফে। সেখানে বিজিবির সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি।