জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগে গাবতলী লিংক (প্রাঃ) লিমিটেডের ১০টি বাস ক্যাম্পাসে নিয়ে এসে আটকে করে রেখেছে শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৯ মার্চ) সকালে যাত্রাবাড়ী থেকে বাসগুলো নিয়ে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইন্স ফ্যাকাল্টির সামনে আটকে রেখে দেয় তারা। ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ সেশনের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী।
জানা যায়, গুলিস্থান থেকে কল্যাণপুর বাসস্টান্ড যাওয়ার জন্যে ৮ নাম্বার গাবতলী বাসে ওঠেন রবিদাস। কিন্তু যথাসময়ে বাস না ছাড়া এবং ইফতারের সময় হয়ে আসায় বাস কন্ডাক্টর ও হেলপারের সঙ্গে বাকবিতন্ডা হয় একাধিক যাত্রীর। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গেও একপর্যায়ে হাতাহাতি হয় বাস ড্রাইভারের। পরবর্তী সময়ে বাস ছেড়ে দিলে একে একে সবাই নেমে গেলেও কল্যাণপুরে নামতে দেওয়া হয়না রবিদাসকে। বাসে তাকে আটকে রেখে গালিগালাজ, ডাবলভাড়া নেওয়া ও বাস স্টাফদের জড়ো করে মারধর করা হয়েছে বলে ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন। প্রাণ বাঁচানোর জন্য একটা মোটরসাইকেলে করে সেখান থেকে পালিয়ে আসেন তিনি।
শিক্ষার্থীরা জানান, দুইদিন আগে জগন্নাথের এক নারী শিক্ষার্থীকে ভিক্টর ক্লাসিকের বাসে হেনস্থা করা হলো। দিন পার না হতেই আরেক বাসে মারধর করা হলো আরেক জবি শিক্ষার্থীকে। ভিক্টর ক্লাসিককে জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে কিন্তু গাবতলী বাসের লোকজন সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে। আমাদের ভাই বোনদের সঙ্গে যাতে অন্তত কোনো বাস চোখ তুলে তাকাতে না পারে তার ব্যবস্থা করবো। বিচার না করা পর্যন্ত এই বাসগুলো এখান থেকে এক পা সরবে না।
এই বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী কিরণ কুমার রবিদাস বলেন, “আমি অন্যান্য যাত্রীদের মতোই শুধুমাত্র যথাসময়ে বাস ছাড়ার কথা বলেছি। কিন্তু আমকে আলাদাভাবে আটকে রেখে মারধর করে। আমি নির্দোষ হওয়া সত্ত্বেও আমাকে তারা মারলো আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদন তারা যেনো সুষ্ঠু বিচার করে।”
এই বিষয়ে গাবতলী লিংক (প্রাঃ) লিমিটেডের বাসের এক হেলপার বলেন, “আমরা সবসময় শিক্ষার্থীদের সুযোগ সুবিধা দেখি। আমাদের স্টাফদের মধ্যে যারা এই কাজ করেছে তারা বড় ধরনের অপরাধ করেছে। তাদের মোটেও এটা করা উচিত হয়নি। আমাদের বাস মালিক পক্ষ আসছে। তারা এসেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবে। আমরাও এর সুষ্ঠু সমাধান চাই।”
গাবতলী লিংক (প্রাঃ) লিমিটেডের এমডি রুবেল জানান, আমরা গতকাল রাতেই এ বিষয়ে অবগত হয়েছি। এমন একটি অনাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যাবে আমরা আসলে বুঝিনি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বসে যতদ্রুত সম্ভব এটির সুষ্ঠু সমাধান করবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. এ কে এম রিফাত হাসান বলেন, “ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এখনো আমাদের কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রশাসন থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।