নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় এক বিএনপির নেতার গুদাম থেকে ৩০৪ বস্তা সরকারি চাল জব্দ করেছে সেনাবাহিনী। “মেসার্স নাহার ট্রেডার্স” নামের ওই গুদামের মালিক মো. খোকন আহমেদ। তিনি কেন্দুয়া পৌর বিএনপির সভাপতি।
শুক্রবার (২১ জুন) রাতে কেন্দুয়া পৌরসভার বাদে আঠারোবাড়ি কলেজ রোড এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মদন উপজেলার অস্থায়ী সেনাক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জামিউল ইসলাম।
অভিযানে ৩০৪ বস্তায় মোট ১৩,৫১৫ কেজি চাল জব্দ করা হয়। পরে উদ্ধার করা চাল উপজেলা প্রশাসনের হেফাজতে দেয় সেনাবাহিনী।
পুলিশ, এলাকাবাসী ও সেনাক্যাম্প সূত্রে জানা গেছে, ঈদে ভিজিএফের মাধ্যমে দরিদ্রদের মাঝে বিতরণের জন্য দেওয়া সরকারি চাল নিজের গুদামে অবৈধভাবে মজুত করেন বিএনপি নেতা খোকন আহমেদ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গুদামে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। বিষয়টি টের পেয়ে একটি হ্যান্ড ট্রলি দিয়ে কিছু চালের বস্তা গুদাম থেকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন বিএনপি নেতা। যা পরবর্তীতে বঙ্গানিয়া মোড় থেকে জব্দ করে সেনাবাহিনী। পরে গুদাম ও ট্রলি থেকে মোট ৩০৪ বস্তা চাল জব্দ করা হয়।
তবে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা খোকন আহমেদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা দায়ের করা করা হয়নি। এ নিয়ে এলাকায় নানা প্রশ্ন ও সমালোচনা দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আঠারোবাড়ি এলাকার এক বাসিন্দা সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোকে বলেন, “সরকারি ত্রাণের চাল মজুত করে রাখা ও সরিয়ে ফেলার চেষ্টা যে উদ্দেশ্যেই হোক, তা অপরাধ। অভিযুক্ত খোকন আহমেদ রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় আইনগত পদক্ষেপ নিতে গড়িমসি করা হচ্ছে কি না, খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।”
এ বিষয়ে সেনা কর্মকর্তা জামিউল ইসলাম বলেন, “এ বিষয়ে তদন্তসহ আইনি পদক্ষেপ নিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) সঙ্গে কথা হয়েছে। গুদামের মালিক খোকন আহমেদকে মোবাইল ফোনে কল করে ডাকা হলেও তিনি আসেননি। একপর্যায়ে তিনি মুঠোফোন বন্ধ করে দেন। উপস্থিত দুইজনকে আটক করা হলেও তাদের পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।”
কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, “জব্দ করা চাল উপজেলা প্রশাসনের কাছে আছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদার বলেন, “আমি ছুটিতে আছি। আজ রাতে কর্মস্থলে ফিরব। ঘটনা শুনেছি। এসে এ বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”