আফগানিস্তানের জাতীয় উদ্যান বন্দ-ই-আমিরে নারীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির ক্ষমতাসীন কট্টোর ইসলামপন্থি গোষ্ঠী তালেবান।
২০২১ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর তালেবানরা সমাজে থেকে নারীদের অদৃশ্য করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তারা ব্যাপকভাবে নারী ও মেয়েদের স্বাধীনতা খর্ব করেছে। মেয়েদের স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করেছে। নারীদের চলাফেরা, উপার্জন প্রভৃতি কার্যকলাপের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেয় দেশটি।
গত মার্চে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আফগানিস্তানে জাতিসংঘ মিশনের প্রধান রোজা ওতুনবায়েভা এক বিবৃতিতে জানান, আফগানিস্তানে নারীদের পার্ক, বিনোদনকেন্দ্র, ব্যায়ামাগার, সরকারি গোসলখানায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি নারীদের প্রকাশ্যে আসতে হলে বোরকা পরে আসা বাধ্যতামূলক করা হয়। কিশোরী ও নারীদের জন্য স্কুল ও উচ্চশিক্ষা নিষিদ্ধ করে তাদের ওপর সবচেয়ে বড় দমন-পীড়ন চালায়। সর্বশেষ নারীদের জাতীয় উদ্যানে ঘুরতে যাওয়ার ওপর এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো।
রবিবার (২৭ আগস্ট) তালেবানের পাপ ও পুণ্যবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী মোহাম্মদ খালেদ হানাফির বরাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণ হিসেবে মোহাম্মদ খালেদ হানাফি বলেছেন, “নারীরা উদ্যানের ভেতরে হিজাব পরছেন না।” এই বিষয়ে একটি সমাধান না পাওয়া পর্যন্ত নারীদের জাতীয় উদ্যানে প্রবেশ নিষিদ্ধে ধর্মীয় আলেম ও নিরাপত্তা সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
উদ্যানের দর্শনীয় স্থান দেখতে যাওয়া কারও জন্য “বাধ্যতামূলক” নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আফগানিস্তানের বামিয়ান প্রদেশে এই উদ্যানের অবস্থান। ২০০৯ সালে দেশটির প্রথম জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয় এ উদ্যানকে। ইউনেস্কো বন্দ-ই-আমির উদ্যানকে ‘বিশেষ ভূতাত্ত্বিক গঠন কাঠামোর পাশাপাশি প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট অনন্য সৌন্দর্যমণ্ডিত হ্রদের সমষ্টি’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
তালেবান সরকারের এই সিদ্ধান্তকে নারীদের জন্য অসম্মানজনক বলে বর্ণনা করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
আফগানিস্তানে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত রিচার্ড বেনেট প্রশ্ন তুলেছেন, “নারীদের বন্দ-ই-আমিরে যাওয়ার সঙ্গে শরিয়াহ আইন ও আফগান সংস্কৃতির সম্পর্ক কিসের?”