তিব্বতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৬ জনে এবং আহত ১৮৮ জন। চীনের সরকারি ব্রডকাস্টার সিসিটিভি জানিয়েছে, এত শক্তিশালী ভূমিকম্প তিব্বতে সাম্প্রতিক সময়ে হয়নি। মঙ্গলবারের (৭ জানুয়ারি) এই ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল এভারেস্টের ৮০ কিলোমিটার দূরে টিংরি। ভূমিকম্পের পর ৩০ হাজার মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
চারশ মানুষ উদ্ধার
ভূমিকম্পের পর একের পর এক আফটারশকও আসে। প্রচুর বাড়ি ভেঙে পড়ে যায়। ভেঙে পড়া বাড়ির তলায় প্রচুর মানুষ চাপা পড়েন। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া চারশ মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে।
তিব্বতে এমনিতেই প্রবল ঠান্ডা। তার উপর রাতে তাপমাত্রা শূন্যের ১৬ ডিগ্রি নিচে নেমে যায়। ফলে যারা চাপা পড়েছিলেন বা আছেন তাদের হাইপোথার্মিয়া ও ডিহাইড্রেশন হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এই পরিস্থিতিতে সারা রাত ধরে মানুষকে উদ্ধারের কাজ চলেছে। সিসিটিভি-র ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, উদ্ধারকারীরা ভেঙে পড়া বাড়িতে মানুষের খোঁজ করছেন। তারা স্থানীয় মানুষকে মোটা কম্বল দিচ্ছেন। বিপজ্জনক বাড়িও ভেঙে ফেলা হচ্ছে।
টিংরিতে একটি সুপারমার্কেটের মালিক সাংঘজি ডাংরি বার্তাসংস্থা এএফপি-কে ফোনে বলেছেন, “প্রচুর বাড়ি ভেঙে পড়েছে। এখানে ভূমিকম্পের কথা মাথায় রেখে মাটি দিয়ে বাড়ি বানানো হয়। ফলে ভুমিকম্প হলে তা ভেঙে পড়ে। বারবার অ্যাম্বুলেন্স এসে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে।”
ধ্বংসের খতিয়ান
প্রাথমিক সমীক্ষা অনুসারে ৩,৬০৯টি বাড়ি ভেঙে পড়েছে। সেখানে পাঁচশরও বেশি উদ্ধারকারী ও ১২৬টি অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকায় তাবু, খাবার, ইলেকট্রিক জেনারেটর পৌঁছে গেছে। ত্রাণ ও পুনর্বাসনের স্বার্থে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা খুলে দেওয়া হয়েছে বলে সিসিটিভি জানিয়েছে।
ভূমিকম্প-প্রবণ এলাকা
দক্ষিণপশ্চিম চীন, নেপাল ও উত্তর ভারত ভূমিকম্প-প্রবণ এলাকা বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। কারণ, ইন্ডিয়ান ও টেকটোনিক প্লেটের ধাক্কায় এখানে ভূমিকম্প হয়। অতীতে এই ধাক্কার ফলেই তিব্বত তৈরি হয়েছিল। চীনের ভূমিকম্প নেটওয়ার্কস সেন্টার জানিয়েছে, মঙ্গলবারের ভূমিকম্পের পর পাঁচশটিরও বেশি আফটারশক হয়েছে। তার পরিমাপ ছিল চার দশমিক চার বা তার কাছাকাছি।