অবৈধভাবে কাজ করার অভিযোগে জানুয়ারিতে ৬০০ জনেরও বেশি অবৈধ অভিবাসীকে আটক করেছে যুক্তরাজ্য সরকার। যা এক বছর আগের একই সময়ের তুলনায় ৭৩% বেশি।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) লন্ডন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ তথ্য জানিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন লেবার সরকারের অবৈধ অভিবাসন এবং মানবপাচারকারী চক্র মোকাবেলা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তাদের আটক করা হয়।
সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ৬০৯ জনকে আটক করা হয়েছে। যে সংখ্যা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ছিল ৩৫২ জন। নেইল বার, রেস্টুরেন্ট, কার ওয়াস এবং দোকানসহ ৮০০টিরও বেশি জায়গায় এই অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
২০২৪ সালে কিয়ার স্টারমার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর তাৎক্ষণিকভাবে তার রক্ষণশীল পূর্বসূরী ঋষি সুনাকের যুক্তরাজ্যে অনথিভুক্ত অভিবাসন রোধ করার পরিকল্পনা বাতিল করে নতুন আগতদের রুয়ান্ডায় নির্বাসিত করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার বলেন, “নিয়োগকর্তারা অনেক দিন ধরেই অবৈধ অভিবাসীদের শোষণ করছেন। অনেক লোক অবৈধভাবে এসে কাজ করছেন। তাদের বিরুদ্বে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমাদের সীমান্ত নিরাপত্তাকে দুর্বল করে দেওয়া এবং দীর্ঘদিন ধরে পার পেয়ে যাওয়া অপরাধী চক্রগুলোকে ধ্বংস করার জন্য আমরা নতুন কঠোর আইনের পাশাপাশি রেকর্ড মাত্রায় আইনের প্রয়োগ বৃদ্ধি করছি।”
ছোট নৌকায় করে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে উত্তর ফ্রান্স থেকে দক্ষিণ ইংল্যান্ডে আসেন অবৈধ অভিবাসীরা। তারা গত সাধারণ নির্বাচনের একটি প্রধান ইস্যু ছিল। এই ইস্যু স্টারমারের লেবার পার্টিকে ক্ষমতায় এনেছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অস্থায়ী পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৪ সালে চ্যানেলে প্রায় ৩৬,৮১৬ জনকে শনাক্ত করা হয়েছিল, যা ২০২৩ সালে আসা ২৯,৪৩৭ জনের তুলনায় ২৫% বেশি।
অবৈধ অভিবাসী কমানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, স্টারমার একটি নতুন সীমান্ত নিরাপত্তা কমান্ডও প্রতিষ্ঠা করেছেন। ইউরোপোলসহ ইউরোপীয় অংশীদারদের সঙ্গে এ বিষয়ে সহযোগিতা জোরদার করেছেন।
চোরাচালানকারী চক্র মোকাবেলার লক্ষ্যে জার্মানি ও ইরাকের সঙ্গে যৌথ কর্মপরিকল্পনায় স্বাক্ষর করেছে ব্রিটেন। দেশগুলো পূর্ববর্তী রক্ষণশীল সরকারের অধীনে স্বাক্ষরিত পূর্ববর্তী চুক্তিগুলোর ওপর ভিত্তি করে তৈরি, যার মধ্যে ফ্রান্স এবং আলবেনিয়াও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
সরকার অনিয়মিত অভিবাসীদের তাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার হার বৃদ্ধির দিকেও ইঙ্গিত করছে, যা ২০১৭ সালের পর সর্বোচ্চ।