Friday, April 18, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

নেপালের ক্ষমতাচ্যুত রাজাকে পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ

দেশজুড়ে তুমুল প্রতিবাদ-বিক্ষোভের মুখে রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহ ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন

আপডেট : ১০ মার্চ ২০২৫, ০৭:২১ পিএম

নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডুতে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহকে স্বাগত জানিয়ে দেশটির ক্ষমতায় তাকে পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন তার সমর্থকরা। রাজাকে স্বাগত জানাতে কাঠমাণ্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রায় ১০ হাজার মানুষের জমায়েত হয়। সাবেক এই রাজা দেশটির পশ্চিমাঞ্চল সফর শেষে রাজধানীতে ফেরায় তাকে স্বাগত জানানো হয়।

রবিবার (৯ মার্চ) কাঠমান্ডুর জনসমাবেশে উপস্থিত জনতা “রাজার জন্য রাজপ্রাসাদ খালি করুন। রাজা ফিরে আসুন, দেশকে বাঁচান। আমাদের প্রিয় রাজা দীর্ঘজীবী হোক। আমরা রাজতন্ত্র চাই”-সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

রাজাতে স্বাগত জানাতে আসারা জানিয়েছেন, তারা দেশের আরও অবনতি রোধ করতে রাজনৈতিক ব্যবস্থায় পরিবর্তন চাচ্ছেন। ৭২ বছর বয়সী থির বাহাদুর ভাণ্ডারি বার্তাসংস্থা এপিকে বলেন, “আমরা এখানে রাজাকে আমাদের পূর্ণ সমর্থন দিতে এসেছি এবং তাকে রাজসিংহাসনে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য তার পক্ষে সমাবেশ করছি।”

২০০৬ সালে তৎকালীন রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহর বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন ৫০ বছর বয়সি রং মিস্ত্রি কুলরাজ শ্রেষ্ঠ। নেপালের বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি হতাশ হয়ে তিনি বলেন, “আমি রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করার আন্দোলনে ছিলাম। বিশ্বাস করেছিলাম এটি দেশের উপকারে আসবে। কিন্তু আমি ভুল ছিলাম এবং এখন দেশ আরও খারাপ হয়ে গেছে। তাই আমি আমার মনোভাব বদলেছি।”

সাবেক রাজা জ্ঞানেন্দ্রকে কাঠমান্ডুতে তার সমর্থকেরা স্বাগত জানান/রয়টার্স

৭৭ বছর বয়সী জ্ঞানেন্দ্র ২০০১ সালে বড় ভাই বীরেন্দ্র বীর বিক্রম শাহর মৃত্যুর পর সিংহাসনে বসেন। তিনি ২০০৫ সাল পর্যন্ত সাংবিধানিক রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে শাসন করেছিলেন। তবে তার কোনো নির্বাহী বা রাজনৈতিক ক্ষমতা ছিল না। ২০০৫ সালে তিনি পুরো ক্ষমতা দখল করেন। এরপর রাজা সরকার ও সংসদ ভেঙে দেন, রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকদের কারাবন্দি করেন। জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে সেনাবাহিনী দিয়ে দেশ শাসন শুরু করেন।

এই পদক্ষেপগুলোর ফলে নেপালে বিক্ষোভের সূচনা হয়। ২০০৬ সালে দেশজুড়ে তুমুল প্রতিবাদ-বিক্ষোভের মুখে রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহ ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন। সরকার মাওবাদীদের সঙ্গে একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করে, যা দশকের দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটায় এবং হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি রোধ করে।

২০০৮ সালে জ্ঞানেন্দ্র সংসদের ভোটে সিংহাসন ত্যাগ করেন। এর ফলে নেপালের ২৪০ বছরের পুরোনো হিন্দু রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয়ে দেশটি ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।

তবে এরপর থেকে নেপালে ১৩টি সরকার গঠিত হয়েছে এবং অনেকেই প্রজাতন্ত্র নিয়ে হতাশ। তারা মনে করেন, প্রজাতন্ত্র রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে ব্যর্থ হয়েছে এবং এটি অর্থনৈতিক সংকট ও ব্যাপক দুর্নীতির জন্য দায়ী।

   

About

Popular Links

x