ঐতিহাসিক ৭ মার্চ আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন রমনার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যে ভাষণকে বাঙালির স্বাধীনতা-মুক্তি ও জাতীয়তাবোধ জাগরণের প্রেরণা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
লক্ষাধিক স্বাধীনতাকামী জনতার সামনে বঙ্গবন্ধু তার ১৯ মিনিটের অসামান্য ভাষণে শোষক পাকিস্তানি শাসন থেকে দেশকে মুক্ত করতে জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হওয়ার জন্য অসহযোগ আন্দোলনের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
বিশাল জনসভায় বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয় বাংলা।”
তার এই ভাষণকে প্রায়ই মার্কিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের ঐতিহাসিক গেটিসবার্গের ভাষণের সঙ্গে তুলনা করা হয়।
তৎকালীন রেসকোর্সের জনসমুদ্রে ২৩ বছরের বঞ্চনার ইতিহাস তুলে ধরে সেদিন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, “আমরা যখন মরতে শিখেছি; কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না।
“রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।”
সেদিন বঙ্গবন্ধুর দেওয়া সেই ভাষণ জাদুমন্ত্রের মতো কাজ করেছিল, যা সমগ্র জাতিকে তৎকালীন পাকিস্তানি সামরিক জান্তার স্বৈরাচারী ও দমনমূলক শাসন থেকে স্বাধীনতার সংগ্রামে যোগ দিতে অনুপ্রাণিত করেছিল।
২০১৭ সালে জাতিসংঘের শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (ইউনেস্কো) বঙ্গবন্ধুর এই ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০২০ সালের ৭ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ ৭ মার্চকে “জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস”-এর পরিবর্তে “ঐতিহাসিক দিবস” হিসেবে ঘোষণা করে।
পরে গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পতন ঘটে আওয়ামী সরকারের। পতনের পর ১৭ অক্টোবর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ৭ মার্চসহ আটটি দিবস উদযাপন বাতিল করে আদেশ জারি করে।