Wednesday, June 18, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

গরমে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকিতে শিশুরা, সুস্থতায় করণীয়

শিশু বাইরে যাক বা না যাক, গরমের কারণে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে

আপডেট : ২০ মে ২০২৫, ০৬:১১ পিএম

তীব্র গরমে পুড়ছে দেশ। বিপর্যস্ত হয়ে উঠছে জনজীবন। থার্মোমিটারের পারদ চড়ছে প্রতিদিনই। এমন পরিস্থিতিতে ডায়রিয়া, হিট স্ট্রোকসহ নানা ধরনের অসুস্থতা বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে সতর্ক থাকার বিকল্প নেই।

তবে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি যে কেবল বড়দের থাকে তা নয়, ছোটদেরও অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রবল। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, তীব্র গরমের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিতে আছে নবজাতক, শিশু, গর্ভবতী নারী, গরমে সেবা দেওয়া ও শ্রমজীবী মানুষ, বয়স্ক ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি, চিকিৎসাধীন ব্যক্তি ও অতিরিক্ত ওজনের মানুষ।

চিকিৎসকেরা বলছেন, শিশু বাইরে যাক বা না যাক, গরমের কারণে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সন্তানকে যত্নে রাখতে কিছু নিয়ম মেনে চলতেই হবে অভিভাবকদের।

চিকিৎসকেরা বলছেন, গরমের সময়ে পানিশূন্যতা ভোগায় অনেক শিশুকেই। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ছোটরা ঠিকমতো পানি পান করে না। স্কুলের সময়টাতে পানি পান করছে কি-না, তা দেখার কেউ থাকে না। ফলে শরীরে পানির ঘাটতির পাশাপাশি খনিজ উপাদানগুলো, যেমন; সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইডের ঘাটতি হতে থাকে। এর থেকে বমি, পেটের গন্ডগোল হতে পারে, জ্বরও আসতে পারে। তাই পর্যাপ্ত পানি খাওয়াতে হবে শিশুকে।

স্কুলের টিফিনে বা বাসায় শিশুকে ফলের রস করে দিতে পারেন শিশুকে। গরমের সময়ে লেবুর রস, তরমুজের শরবত বা আনারসের শরবত করে দিলে ভালো হয়। 

পানির পরিমাণ বেশি, এমন ফল খাওয়াতে পারেন। ওরস্যালাইন সঙ্গে রাখতেই হবে। শিশুর শরীরে অস্বস্তি হলে বা রোদ থেকে ফিরেই বমি হলে, ওরস্যালাইন পামিতে গুলে খাইয়ে দেবেন।

হিট স্ট্রোক হলে নানা উপসর্গ দেখা দেবে। ঘাম হবে না, ত্বক শুকিয়ে যাবে, মাথা ঘুরবে, ঘন ঘন বমি করতে থাকবে শিশু। শ্বাসপ্রশ্বাসের হার অনেক বেড়ে যাবে, সেই সঙ্গে ডায়েরিয়ার লক্ষণ দেখা দিতে পারে। অনেক সময়ে হিট স্ট্রোকের কারণে খিঁচুনিও হয় শিশুদের, এমন লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

গরমের সময়ে নানা রকম জীবাণুর সংক্রমণও হয় ছোটদের। তা থেকে জ্বর, সর্দি-কাশি, অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

জ্বর হলে হালকা প্যারাসিটামল খাওয়ানো যেতে পারে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে। কোনো ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াবেন না। তিন দিনের বেশি জ্বর থাকলে, রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। এই সময়ে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গির প্রকোপও বাড়ে। কাজেই পরিচ্ছন্নতায় নজর দিতে হবে, বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখবেন।

দুপুরের দিকে সন্তানকে নিয়ে কোথাও না বেরোনোই শ্রেয়। তবে একান্তই যদি বেরোতে হয়, সেক্ষেত্রে সব রকম সুরক্ষা নিন। শিশুর মাথায় পাতলা সুতির স্কার্ফ জড়িয়ে দিন। কিংবা টুপিও পরাতে পারেন। সানস্ক্রিন মাখাতেও ভুলবেন না। স্কুল বা বাইরে থেকে ফেরার পর শিশুকে গোসল করিয়ে দিতে হবে।

খাওয়াদাওয়ায় বিশেষ নজর দিতে হবে এই সময়ে। বাইরের খাবার, ভাজাভুজি খাওয়ানো চলবে না। জাঙ্ক ফুড একেবারেই দেবেন না। এমনকি রাস্তায় যে ফলের রস, শরবত, লস্যি বিক্রি হয়, তা-ও খাওয়াবেন না শিশুকে। বাড়িতে তৈরি হালকা খাবারই খেতে হবে। ভাত, পাতলা করে ডাল, মাছের ঝোল ও বেশি করে সবুজ শাকসব্জি খাওয়াতে পারলে ভাল হয়। 

জলখাবারে খুব বেশি প্রোটিন দেবেন না। দুধ খেলে তার সঙ্গে কর্নফ্লেক্স বা ওট্‌সের পরিজ় খাওয়া যেতে পারে। না হলে দই-চিঁড়ে, দইয়ের ঘোল দিয়ে তৈরি ওট্‌স খেতে পারেন। ওট্‌সে আছে বিটা-গ্লুকান, যা হার্ট ভালো রাখবে। সারা রাত ভিজিয়ে রাখা মেথির পানি, মৌরি-মিছরি ভেজানো পানিও খাওয়াতে পারেন শিশুকে। এতে পেট ঠান্ডা থাকবে।

 

   

About

Popular Links

x