স্ত্রী সাঁতার জানতেন না, তারপরও নদীতে ঝাঁপ দিয়ে বেঁচে ফিরেছেন দম্পতি
লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বেঁচে ফেরা যাত্রীদের কাছে এখনও স্বপ্নের মতো লাগছে পুরো ঘটনাটি
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী লঞ্চ অভিযান ১০ এ আগুন লাগে ফেসবুক
ট্রিবিউন ডেস্ক
প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর ২০২১, ০১:০২ পিএমআপডেট : ১৪ মার্চ ২০২২, ০৩:২৭ পিএম
শুক্রবার ভোররাতে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে অগ্নিদগ্ধ “এমভি অভিযান-১০” নামের যাত্রীবাহী লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বেঁচে ফেরা যাত্রীদের কাছে এখনও স্বপ্নের মতো লাগছে পুরো ঘটনাটি।
অনেকেই স্বজন হারিয়ে শোকে পাথর প্রায়, কেউ আবার মৃত্যুর হাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়ে এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না আসলেই বেঁচে আছেন। তেমনই এক যাত্রী বরগুনার পাথরঘাটার একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক আল আমিন (২৬)। নিজে সাঁতার জানলেও জানতেন না তার স্ত্রী। তারপরও একসঙ্গে বেঁচে ফিরেছেন তারা।
সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আল আমিন জানান সেই ভয়াবহ রাতের কথা।
আল আমিন জানান, এ বছরের আগস্ট মাসে রাজধানীর একটি কলেজের শিক্ষার্থী সুমাইয়া বেগমের (১৮) সঙ্গে বিয়ে হয় তার।
বৃহস্পতিবার স্ত্রী সুমাইয়া, চাচাতো ভাই তুহিন, তার স্ত্রী এবং তুহিনের আড়াই বছরের মেয়ে তাবাসসুমকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে বাড়ি যাচ্ছিলেন আল আমিন। সে রাতেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে লঞ্চটিতে।
তিনি বলেন, “রাতের বেলা দোতলায় ডেকে তুহিন দম্পতিরা ঘুমিয়ে পড়লে আমি আর আমার স্ত্রী ডেকেই ঘুরছিলাম। আর ১ কিলোমিটার পরই ঝালকাঠি ঘাট। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর আগেই লঞ্চের মাঝের অংশে আগুন জ্বলছে। সবাই বাঁচার জন্য চিৎকার করছে। এরই মধ্যেই লঞ্চ তীরের কাছে চলে আসে। কিন্তু আমার স্ত্রী সাঁতার জানেন না তাই আমরা নিচ তলায় নেমে তীরে ওঠার সিদ্ধান্ত নিই। আমার স্ত্রী আমাকে বলেন, ‘মরলে একসঙ্গে মরবো, বাঁচলে একসঙ্গে বাঁচবো।‘
তিনি বলেন “তীরে নামার আগেই লঞ্চ আবারও মাঝ নদীতে চলে গেলে আমরা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ি। আমার স্ত্রী একটা ব্যাগ নিয়ে কোনোমতে ভেসে ছিল।”
এভাবে দেড় ঘণ্টা ভেসে থাকার পর উদ্ধারকারী নৌকা এসে ভোর ৪টার দিকে তাদের উদ্ধার করেন বলে আল আমিন জানান।
বরগুনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আল আমিন ও তার স্ত্রী সুমাইয়া জানান, একজন সাঁতার না জেনেও একসঙ্গে বেঁচে ফিরবেন ভাবেননি তারা। এখনও সব কিছু স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে।
আল আমিন জানান, তার চাচাতো ভাই তুহিন ও তার স্ত্রীও একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তবে তাদের মেয়ে তাবাসসুমের খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত ২৩ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ৩টার দিকে সুগন্ধা নদীর গাবখান ধানসিঁড়ি এলাকায় লঞ্চটিতে আগুন লাগে। লঞ্চের একাধিক যাত্রী জানান, রাত ৩টার দিকে লঞ্চের ইঞ্জিনরুমে হঠাৎ আগুন লেগে যায়। ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে পুরো লঞ্চে। এ সময় অনেক যাত্রী দগ্ধ হন। প্রাণ বাঁচাতে বেশ কয়েকজন নদীতে ঝাঁপ দেন।
লঞ্চের এমন কোনো অংশ নেই যেখানে আগুন তার তাণ্ডব দেখায়নি। পুরো লঞ্চই পুড়ে ছাই। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মরদেহ উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০০ জন। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের পরিচয় জানা যায়নি। লঞ্চটি ঢাকা থেকে বরগুনার উদ্দেশে যাচ্ছিল।
স্ত্রী সাঁতার জানতেন না, তারপরও নদীতে ঝাঁপ দিয়ে বেঁচে ফিরেছেন দম্পতি
লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বেঁচে ফেরা যাত্রীদের কাছে এখনও স্বপ্নের মতো লাগছে পুরো ঘটনাটি
শুক্রবার ভোররাতে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে অগ্নিদগ্ধ “এমভি অভিযান-১০” নামের যাত্রীবাহী লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বেঁচে ফেরা যাত্রীদের কাছে এখনও স্বপ্নের মতো লাগছে পুরো ঘটনাটি।
অনেকেই স্বজন হারিয়ে শোকে পাথর প্রায়, কেউ আবার মৃত্যুর হাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়ে এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না আসলেই বেঁচে আছেন। তেমনই এক যাত্রী বরগুনার পাথরঘাটার একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক আল আমিন (২৬)। নিজে সাঁতার জানলেও জানতেন না তার স্ত্রী। তারপরও একসঙ্গে বেঁচে ফিরেছেন তারা।
সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আল আমিন জানান সেই ভয়াবহ রাতের কথা।
আল আমিন জানান, এ বছরের আগস্ট মাসে রাজধানীর একটি কলেজের শিক্ষার্থী সুমাইয়া বেগমের (১৮) সঙ্গে বিয়ে হয় তার।
বৃহস্পতিবার স্ত্রী সুমাইয়া, চাচাতো ভাই তুহিন, তার স্ত্রী এবং তুহিনের আড়াই বছরের মেয়ে তাবাসসুমকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে বাড়ি যাচ্ছিলেন আল আমিন। সে রাতেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে লঞ্চটিতে।
তিনি বলেন, “রাতের বেলা দোতলায় ডেকে তুহিন দম্পতিরা ঘুমিয়ে পড়লে আমি আর আমার স্ত্রী ডেকেই ঘুরছিলাম। আর ১ কিলোমিটার পরই ঝালকাঠি ঘাট। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর আগেই লঞ্চের মাঝের অংশে আগুন জ্বলছে। সবাই বাঁচার জন্য চিৎকার করছে। এরই মধ্যেই লঞ্চ তীরের কাছে চলে আসে। কিন্তু আমার স্ত্রী সাঁতার জানেন না তাই আমরা নিচ তলায় নেমে তীরে ওঠার সিদ্ধান্ত নিই। আমার স্ত্রী আমাকে বলেন, ‘মরলে একসঙ্গে মরবো, বাঁচলে একসঙ্গে বাঁচবো।‘
তিনি বলেন “তীরে নামার আগেই লঞ্চ আবারও মাঝ নদীতে চলে গেলে আমরা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ি। আমার স্ত্রী একটা ব্যাগ নিয়ে কোনোমতে ভেসে ছিল।”
এভাবে দেড় ঘণ্টা ভেসে থাকার পর উদ্ধারকারী নৌকা এসে ভোর ৪টার দিকে তাদের উদ্ধার করেন বলে আল আমিন জানান।
বরগুনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আল আমিন ও তার স্ত্রী সুমাইয়া জানান, একজন সাঁতার না জেনেও একসঙ্গে বেঁচে ফিরবেন ভাবেননি তারা। এখনও সব কিছু স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে।
আল আমিন জানান, তার চাচাতো ভাই তুহিন ও তার স্ত্রীও একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তবে তাদের মেয়ে তাবাসসুমের খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত ২৩ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ৩টার দিকে সুগন্ধা নদীর গাবখান ধানসিঁড়ি এলাকায় লঞ্চটিতে আগুন লাগে। লঞ্চের একাধিক যাত্রী জানান, রাত ৩টার দিকে লঞ্চের ইঞ্জিনরুমে হঠাৎ আগুন লেগে যায়। ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে পুরো লঞ্চে। এ সময় অনেক যাত্রী দগ্ধ হন। প্রাণ বাঁচাতে বেশ কয়েকজন নদীতে ঝাঁপ দেন।
লঞ্চের এমন কোনো অংশ নেই যেখানে আগুন তার তাণ্ডব দেখায়নি। পুরো লঞ্চই পুড়ে ছাই। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মরদেহ উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০০ জন। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের পরিচয় জানা যায়নি। লঞ্চটি ঢাকা থেকে বরগুনার উদ্দেশে যাচ্ছিল।
বিষয়: