সিনেমায় তুমুল জনপ্রিয়তার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কর্মকাণ্ডের জন্যও বেশ আলোচিত জয়া আহসান। পশুপাখির জন্য মমতাবোধের কারণে পেয়েছেন “প্রাণবিক বন্ধু” তকমাও। বিভিন্ন ইস্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সরব জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। সেই ধারাবাহিকতায় এবার কওমি মাদ্রাসার এতিম শিশুদের নিয়ে নিজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়ে ভক্ত-অনুসারীদের প্রশংসা কুড়াচ্ছেন জয়া আহসান।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) নিজের ফেসবুকে অন্যকারো একটি লেখা পোস্ট করেছেন জয়া। যে পোস্টে তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান আসন্ন ঈদে কওমি মাদ্রাসার এতিম শিশুদের পাশে মমতার হাত বাঁড়িয়ে দিতে।
জয়ার সেই “কালেক্টেড” ফেসবুক পোস্টে লেখা হয়েছে, “রোজার শেষ দিকে বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোতে এক করুণ দৃশ্য দেখা যায়। সাধারণত ২৫ রোজা থেকে মাদ্রাসাগুলো ছুটি হতে থাকে। বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীর অভিভাবক এসে বাচ্চাদের বাসায় নিয়ে যায়। কিন্তু একদল বাচ্চাকে কেউ নিতে আসে না। এদের কারও বাবা-মা নেই, কারও বাবা নেই মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয়ে গেছে। অনেকের মা নেই, বাবা বাচ্চার খোঁজ রাখে না। খুব বেশি ভাগ্যবান হলে কারও কারও মামা-খালা-চাচা এসে কাউকে কাউকে নিয়ে যায়। বাকীরা সারাদিন কান্না করে।”
“তারা জানে তাদের কেউ নিতে আসবে না। তারা সারাবছর কাঁদে না। কিন্তু যখন সহপাঠীদের সবাই বাসায় নিয়ে যায় অথচ তাদের কেউ নিতে আসে না তখন তাদের দুঃখ শুরু হয়ে যায়। মৃত মা-বাবার ওপর তাদের অভিমান সৃষ্টি হয়- কেন তারা তাদের দুনিয়ায় রেখে এই বয়সে মারা গেলেন? তারা কি আর কিছুটা দিন বেঁচে থাকতে পারতেন না? মা বাবা বেঁচে নাই তো কী হইছে? মামা চাচারা কেউ তাদেরকে নিতে আসল না কেন? মা বেঁচে থাকতে মামারা কত আদর করত! বাবা বেঁচে থাকতে চাচারা কত আদর করত! এই বয়সেই তারা দুনিয়ার একটা নিষ্ঠুর চেহারা দেখেছে।”
সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে ওই পোস্টে আরও লেখা হয়েছে, “একটা অনুরোধ-এই ঈদে আপনার কাছাকাছি এতিমখানায় যান। কয়জন বাচ্চা ঈদে বাড়ি যায়নি খোঁজ নিন। তাদের জন্য আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী যা পারেন তা নিয়ে যান। এই গরমে তাদের আইসক্রিম খাওয়াতে পারেন। নিদেন পক্ষে একটা চকলেট খাওয়ান। মনে রাখবেন, আজ আপনি বেঁচে না থাকলে আপনার ছোট সন্তান এতিম হয়ে যাবে! আমি ইনশাআল্লাহ চেষ্টা করব যদি আল্লাহ সহায়ক হয়।”
জয়ার এমন পোস্টকে ভক্তরা সাধুবাদ জানিয়েছেন। অনেকেই মাদ্রাসার এসব শিক্ষার্থীদের সাহায্যে এগিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।