Wednesday, July 09, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

ইরানে হামলা যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে, জড়াতে পারে যুক্তরাষ্ট্রও

হামলার পর ইসরায়েলের সাধারণ জনগণসহ পুরো মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে

আপডেট : ১৩ জুন ২০২৫, ০৯:০৯ পিএম

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলার পর অঞ্চলজুড়ে ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। হামলার পাল্টা প্রতিক্রিয়া মধ্যপ্রাচ্যকে একটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়লে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হবে।

শুক্রবার (১৩ জুন) ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা ইরানের পাল্টা হামলা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এরই মধ্যে দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

এর আগে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ইসরায়েল খুব শিগগিরই ইরানে হামলার পরিকল্পনা করছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে তাদের দূতাবাস ও সামরিক ঘাঁটি থেকে বেশকিছু কর্মী ও কূটনীতিককে সরিয়ে নেয়। সম্ভাব্য ইসরায়েলি হামলার আশঙ্কায় তারা দূতাবাসগুলোতেও সতর্কতা জারি করেছিল। মূলত তখন থেকেই হামলার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল।

এই হামলার পর ইসরায়েলের সাধারণ জনগণসহ পুরো মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এই হামলা অঞ্চলটিকে একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ঠেলে দিচ্ছে।

ইরানের আঞ্চলিক প্রভাব

ইরান “অ্যাক্সিস অব রেজিস্ট্যান্স” নামে পরিচিত একটি আঞ্চলিক জোটের নেতৃত্ব রয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা এবং ইরাক-সিরিয়ায় আরও বেশ কিছু ঘনিষ্ঠ মিত্র গোষ্ঠী। এদের সক্রিয়তা এই সংঘাতকে আরও বিস্তৃত করে তুলতে পারে।

বিশ্লেষকরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, ইসরায়েল যদি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর সরাসরি হামলা চালায়, তাহলে তা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তেহরানের চলমান আলোচনা চূড়ান্তভাবে ভেস্তে যেতে পারে।

গত বছর ইসরায়েল ও ইরানের দীর্ঘ দিনের ছায়াযুদ্ধ সরাসরি সংঘাতে রূপ নেয়। এ সময় উভয়পক্ষই সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।

সেসময় ইরানের জ্বালানি বা পারমাণবিক অবকাঠামোয় যেন ইসায়েল হামলা না চালায়—সে ব্যাপারে সতর্ক করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে, ইরানও তখন নিজ অবস্থান বোঝাতে শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া দেখায়। তবে, কৌশলগত প্রতিক্রিয়া হিসেবে ক্ষয়ক্ষতি সীমিত রাখে দেশটি।

তবে এবারের হামলাটি আগের চেয়ে অনেক বেশি ভয়াবহ হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরাকের সঙ্গে যুদ্ধের পর এবারই সবচেয়ে বড় হামলার সম্মুখীন হলো ইরান।

এর আগে, শুক্রবার ভোরে ইরানের রাজধানী তেহরানসহ একাধিক স্থানে হামলা চালায় ইসরায়েল। ইসরায়েলের দাবি, হামলায় নাতাঞ্জে অবস্থিত ইরানের প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানীরা তাদের লক্ষ্যবস্তু ছিল।

এই হামলায় অন্তত ২০০টি যুদ্ধবিমান অংশ নেয়, যেগুলো দেশটির ভেতরে প্রায় ১০০টি লক্ষবস্তুতে আঘাত হানে বলে জানায় টাইমস অব ইসরায়েল।

এই হামলায় ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি নিহত হন দেশটির ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি এবং ইরানের সর্বোচ্চ সামরিক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি। এছাড়াও, ছয়জন পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন।

এ বিষয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক বেথ স্যানার বলেন, “সালামিকে হত্যা করা মানে যেন যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যানকে মেরে ফেলার সমান—এমন হলে আমেরিকানরা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাতো, ভাবুন একবার।”

তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে ইরান অস্তিত্বের হুমকিতে। এ কারণেই ইসরায়েল অনেক বড় ধরনের প্রতিশোধমূলক হামলার মুখে রয়েছে। যা ইসরায়েল গতবার ইরানের হামলার সময় দেখেছিল।” 

   
Banner

About

Popular Links

x