আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপে জাতীয় দলের জার্সিতে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে মুখিয়ে থাকেন ক্রিকেটাররা। ২২ গজের বিশ্বমঞ্চে নিজ দেশের প্রতিনিধি হওয়ার গর্ব অনুভব করতে কে না চায়! শচীন টেন্ডুলকার, রিকি পন্টিং, গ্লেন ম্যাকগ্রা, ওয়াসিম আকরাম, স্টিভ ওয়াহ, সনাৎ জয়াসুরিয়ার মতো কিংবদন্তিরা ক্রিকেট বিশ্বকাপে কেবলমাত্র দেশকে প্রতিনিধিত্বই করেননি, এনে দিয়েছেন সাফল্যও।
কিন্তু এমন অনেক ক্রিকেটারও আছেন যারা ব্যক্তিগত পর্যায়ে অমিত প্রতিভাবান হলেও কখনো দুর্ভাগ্য, আবার কখনো অজানা কারণে ওয়ানডে বিশ্বকাপে পা রাখতে পারেননি। দ্বিপাক্ষিক সিরিজ এবং অন্যান্য টুর্নামেন্টে এসব তারকাদের মাঠ মাতিয়ে রাখতে দেখলেও আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপে জাতীয় দলের হয়ে তাদের ক্রিকেটীয় নৈপুণ্যের সাক্ষী হতে পারেননি ক্রিকেটপ্রেমীরা।
আন্তর্জাতিক অঙ্গন দাপিয়ে বেড়ালেও দেশের হয়ে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাননি, এমনও ক্রিকেটারের সংখ্যা নেহাত কম না। চলুন দেখে নিই ক্রিকেট ইতিহাসের এমন কিছু দুর্ভাগা তারকাকে, ব্যক্তিগত পর্যায়ে উজ্জ্বল থাকলেও আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপে যাদের ঔজ্জ্বল্য দেখা যায়নি-
ভিভিএস লক্ষ্মণ (ভারত)
ভিভিএস লক্ষ্মণকে আলাদাভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। তার আসল নাম ভাঙ্গিপুরাপু ভেঙ্কাটা সাই লক্ষ্মণ। কিন্তু ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে লক্ষ্মণের নামের ভিভিএসের অর্থ ভেরি ভেরি স্পেশাল। আর হবে নাই বা কেন? শচীন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড়, সৌরভ গাঙ্গুলীর মতো কিংবদন্তিদের পাশে খেলেও এই ডানহাতি ব্যাটার ছিলেন স্বীয় আলোয় উজ্জ্বল। চাপের মুখে দলের হাল ধরতে পারতেন বলে ভারতের বিখ্যাত ব্যাটিং লাইনআপে বড় ভরসার নাম ছিলেন লক্ষ্মণ।
ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দীর্ঘ ১৬ বছর টেস্ট খেলেছেন লক্ষ্মণ। ক্রিকেটের দীর্ঘতম সংস্করণে ১৩৪টি ম্যাচে ১৭টি সেঞ্চুরি এবং ৫৬টি হাফ সেঞ্চুরির মাধ্যমে ৪৫.৯৭ গড়ে ৮,৭৮১ রান করেছেন এই ভারতীয়। সাদা পোশাকে ভারতের হয়ে অনেক স্মরণীয় ইনিংস খেলেছেন লক্ষ্মণ। এর মধ্যে ২০০১ সালে ইডেন গার্ডেন্সে পরাক্রমশালী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতকে অভাবনীয়ভাবে জয় এনে দেওয়া ২৮১ রান তো টেস্টে ক্রিকেটেরই অন্যতম সেরা ইনিংস বলে বিবেচিত হয়।
ওয়ানডেতেও লক্ষ্মণ যে খুব খারাপ ছিলেন, তা বলা যাবে না। তবে সামর্থ্যের বিচারে টেস্টের তুলনায় একদিনের ক্রিকেটে তার পরিসংখ্যান কিছুটা ম্লানই বটে। ৮৬ ম্যাচের মধ্যে ৮৩ ইনিংসে ব্যাট হাতে নেমে ৬টি সেঞ্চুরি এবং ১০টি হাফ সেঞ্চুরির সাহায্যে ৩০.৭৬ গড়ে ২,৩৩৮ রান করেছেন। ওয়ানডেতে লক্ষ্মণের প্রিয় প্রতিপক্ষ ছিল অস্ট্রেলিয়া। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তার করা ছয়টি শতকের চারটিই এসেছিল অস্ট্রেলিয়ানদের বিপক্ষে।
একই সঙ্গে মেধাবী এবং পরিশ্রমী ব্যাটার হওয়া সত্ত্বেও লক্ষ্মণের কখনো ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলা হয়নি। ওয়ানডে ক্রিকেটে তার রান তোলার ধীরগতিকে অন্যতম বড় কারণ হিসেবে ধরা হয়। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে স্কোয়াডে লক্ষ্মণের জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তার পরিবর্তে ডাক পান দিনেশ মোঙ্গিয়া। ২০০৭ বিশ্বকাপ আসতে আসতে দলে অনিয়মিত হয়ে পড়েন এই ডানহাতি ভারতীয় ব্যাটার। ফলে ক্যারিয়ারে কখনো ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করা হয়নি লক্ষ্মণের।
স্যার অ্যালিস্টার কুক (ইংল্যান্ড)
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের হয়ে অ্যালিস্টার কুকের অভিষেক হয় ২০০৬ সালে। থ্রি লায়ন্সদের হয়ে এই বাঁহাতি ওপেনারের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের স্থায়িত্ব ছিল ২০১৮ সাল পর্যন্ত। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের হয়ে ২৫০ ম্যাচে প্রতিনিধিত্ব করার পাশাপাশি ব্যাট হাতে ১৫ হাজারের মতো রান করেছেন কুক। দীর্ঘ সময় ধরে কুকের কাঁধে ইংল্যান্ডের অধিনায়কত্বের ভারও ছিল।
লাল বলের ক্রিকেটে দুর্দান্ত কুক সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বেশ সাদামাটা ছিলেন। টেস্টে কুকের ব্যাটিং শৈলী দারুণ নজর কাড়লেও ওয়ানডে ক্রিকেটে তিনি খানিকটা ধীরগতির ছিলেন। ক্রিকেটের দীর্ঘতম সংস্করণে ১৬১ ম্যাচ খেলে ৪৫.৩৫ গড়ে ৩৩টি শতক এবং ৫৭টি অর্ধশতকের সুবাদে ১২,৪৭২ রান করেছেন এই ইংলিশ ব্যাটার।
ওয়ানডে ক্রিকেটে কুকের পরিসংখ্যানও আহামরি খারাপ না। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ৯২ ম্যাচে পাঁচটি শতক এবং ১৯টি অর্ধশতকের মাধ্যমে ৩৬.৪০ গড়ে ৩,২০৪ রান করেছেন এই বাঁহাতি ওপেনার। কিন্তু আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপে কখনোই খেলেননি কুক। ইংল্যান্ডের হয়ে কুক সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেন ২০১৪ সালে। ২০১৫ বিশ্বকাপের কয়েক মাস আগে ইংল্যান্ডের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন কুক, সেই সঙ্গে যতি ফেলে দেন তার ওয়ানডে ক্যারিয়ার এবং বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নেও।
জাস্টিন ল্যাঙ্গার (অস্ট্রেলিয়া)
অস্ট্রেলিয়ার তো বটেই, ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ওপেনারদের ছোট তালিকায় জাস্টিন ল্যাঙ্গারের নামটা ওপরের দিকেই থাকবে। ম্যাথু হেইডেনের সঙ্গে তার ব্যাটে অস্ট্রেলিয়া কতবার টেস্ট ক্রিকেটে উড়ন্ত সূচনা পেয়েছে, সে কথা জানেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে হেইডেনের সঙ্গে ল্যাঙ্গারের উদ্বোধনী উইকেট জুটিতে ১২২ ইনিংসে ৫১.৫৩ গড়ে ৬,০৮১ রান এসেছে।
১৯৯৩ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৪ বছরের ক্যারিয়ারে ১০৫টি টেস্টে ২৩টি সেঞ্চুরি এবং ৩০টি ফিফটির সাহায্যে ৪৫.২৭ গড়ে ৭,৬৯৬ রান করেছেন ল্যাঙ্গার। কিন্তু টেস্টে যতটা উজ্জ্বল, ল্যাঙ্গার যেন ওয়ানডেতে ততটাই ম্রিয়মান। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি যে এই বাঁহাতি ওপেনারের ওয়ানডে ক্যারিয়ার টিকেছিল মাত্র চার বছর। ১৯৯৭ সালে শেষবারের মতো ওয়ানডে খেলা ল্যাঙ্গার ৫০ ওভারের ক্রিকেটে মাত্র ৮ ম্যাচ খেলে ৩২ গড়ে ১৬০ রান করেছেন।
ল্যাঙ্গারের খেলোয়াড়ি জীবনে অস্ট্রেলিয়া টানা তিনবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হলেও তিনি কোনোবারই জয়ী দলের অংশ ছিলেন না। অস্ট্রেলিয়ার সোনালি যুগের সফল ক্রিকেটারদের মধ্যে তিনিই বিশ্বকাপের শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে পারেননি। ২০১৯ সালে আয়োজিত বিশ্বকাপের সর্বশেষ আসরে ল্যাঙ্গার ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার কোচ। ক্রিকেট ইতিহাসে ল্যাঙ্গার সেই বিরল ব্যক্তিদের মধ্যে একজন, যিনি খেলোয়াড়ি জীবনে ওয়ানডে বিশ্বকাপ না খেলেও বিশ্বকাপে জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন।
ম্যাথু হগার্ড (ইংল্যান্ড)
শূন্য দশকে ইংল্যান্ডের বোলিং লাইনআপের অন্যতম বড় স্তম্ভ ছিলেন ম্যাথু হগার্ড। ২০০৮ সাল পর্যন্ত ইংলিশদের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা এই পেসার টেস্ট আর ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই খেলে গেছেন। ২০০০ সালে অভিষেকের পর টেস্টে ৬৭টি ম্যাচে ১২২ ইনিংসে বল করে ৩.২৬ ইকোনমি রেটে ২৪৮ উইকেট পেয়ে ক্রিকেটের দীর্ঘতম সংস্করণে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় নবম অবস্থানে রয়েছেন হগার্ড।
সাদা পোশাকে বল হাতে দুর্বার হগার্ড ওয়ানডেতে ছিলেন একদমই বিবর্ণ। টেস্টে ইংল্যান্ডের পেস বোলিংয়ের বড় ভরসা হলেও ৫০ ওভারের ক্রিকেটে কখনোই দলে থিতু হতে পারেননি হগার্ড। আট বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ওয়ানডে দলে বেশিরভাগ সময়েই আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিলেন সোনালি চুলের এই ডানহাতি ফাস্ট বোলার। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে মাত্র ২৬ ম্যাচ খেলে ৫.২৯ ইকোনমি রেটে ৩২টি উইকেট নিয়েছেন হগার্ড।
কিন্তু ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে কখনোই হগার্ডের আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলা হয়নি। ২০০১ সালে অভিষেকের পর দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও কেনিয়ায় অনুষ্ঠেয় ২০০৩ বিশ্বকাপের জন্য ইংলিশদের প্রাথমিক দলে ছিলেন। তবে মূল স্কোয়াডে ডাক পাননি এই পেসার। ২০০৬ সালের এপ্রিলে ভারতের হয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে শেষবারের মতো মাঠে নামেন হগার্ড। ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজে আয়োজিত ২০০৭ বিশ্বকাপেও খেলা হয়নি তার।
ক্রিস মার্টিন (নিউজিল্যান্ড)
বল হাতে যতটা সাবলীল, ব্যাট হাতে ততটাই নড়বড়ে- ক্রিস মার্টিনকে সংজ্ঞায়িত করতে এর চেয়ে সহজ বিশ্লেষণ আর কিছু হয় না। টেস্ট ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের বোলিং লাইনআপের বড় অস্ত্র ছিলেন এই পেসার। ২০০০ সালে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে অভিষেকের পর ৭১ ম্যাচ খেলে ৩.৩৭ ইকোনমি রেটে ২৩৩ উইকেট নিয়েছেন মার্টিন। টেস্ট ক্রিকেটে কিউইদের পক্ষে ষষ্ঠ সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিও তিনি। তবে ব্যাট হাতে আবার মার্টিন ছিলেন একেবারেই আনাড়ি; ২.৩৬ গড়ে সর্বসাকুল্যে করেছেন মাত্র ১২৩ রান।
লাল বলের ক্রিকেটে দুর্দান্ত হলেও ওয়ানডেতে নিজের জায়গা পাকা করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন মার্টিন। ২০০১ সালে অভিষেকের পর ডানহাতি এই পেসারের ওয়ানডে ক্যারিয়ার স্থায়ী হয়েছিল ৮ বছর। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে এই সময়ের মধ্যে মাত্র ২০ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের হয়ে মাঠে নেমেছেন মার্টিন, ১৯ ইনিংসে বল হাতে নিয়ে ৫.০৮ ইকোনমি রেটে উইকেটও পেয়েছেন মাত্র ১৮টি। কিন্তু ব্ল্যাক ক্যাপসদের হয়ে কখনোই হগার্ডের আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলা হয়নি মার্টিনের।
শেন বন্ড,কাইল মিলস, ড্যারেল টাফির মতো পেসাররা থাকায় দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও কেনিয়ায় অনুষ্ঠিত ২০০৩ বিশ্বকাপের নিউজিল্যান্ড দলে মার্টিনের জায়গা হয়নি। তিনি ডাক পাননি ওয়েস্ট ইন্ডিজে আয়োজিত ২০০৭ বিশ্বকাপের স্কোয়াডেও। টাফির চোটের কারণে রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে দলে এলেও কোনো ম্যাচে মাঠে নামেননি মার্টিন। ২০০৮ সালের পর পুরোপুরিভাবে টেস্ট ক্রিকেটে মনোযোগ দেওয়ার পর ওয়ানডে কিংবা বিশ্বকাপ- কোনোটাই আর মার্টিনের খেলা হয়নি।
স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল (অস্ট্রেলিয়া)
স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্ভাগা খেলোয়াড় বললেও ভুল হবে না। ২২ গজে বল হাতে এই লিগ স্পিনারের প্রতিভা আর সামর্থ্যের কোনো কমতি ছিল না। কিন্তু জন্মই বলা হোক কিংবা ক্রিকেট, এই অস্ট্রেলিয়ানের আগমন হয়েছিল ভুল সময়। ম্যাকগিলের সময়ে অস্ট্রেলিয়া দলে চলত প্রয়াত কিংবদন্তি অফ স্পিনার শেন ওয়ার্নের রাজত্ব। অস্ট্রেলিয়ার সেই দলে এত দুর্দান্ত পেসার ছিল যে বাড়তি একজন স্পিনারের কোনো প্রয়োজনই হতো না।
১৯৯৮ সালে অভিষেকের পর অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ম্যাকগিল টেস্ট ক্রিকেট খেলেছেন দীর্ঘ দশ বছর। এক দশকের টেস্ট ক্যারিয়ারে ৪৪ ম্যাচে মাঠে নেমে ৮৫ ইনিংসে বল হাতে নিয়ে ৩.২২ ইকোনমি রেটে ২০৮টি উইকেট নিয়েছেন এই অস্ট্রেলিয়ান স্পিনার। টেস্ট ম্যাচে ১২ বার ফাইফারের (পাঁচ উইকেট শিকার) পাশপাশি দুবার তুলে নিয়েছেন ১০ উইকেটও। ওয়ার্নের দাপট থাকলেও সাদা পোশাকে তবুও সুযোগ মিলতো; ওয়ানডে ক্রিকেটে যে ম্যাকগিল অস্ট্রেলিয়া দলে ছিলেন ক্ষণিকের উল্কাপাতের ন্যায়।
একদিনের ক্রিকেটে ম্যাকগিলের ক্যারিয়ারের স্থায়িত্ব ছিল মাত্র তিন ম্যাচের; আরও স্পষ্টভাবে বললে এক সপ্তাহের। ২০০০ সালের ১৯ জানুয়ারি পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডেতে অভিষেক হয় এই স্পিনারের। সেই ম্যাচে ১৯ রানের খরচায় ৪ উইকেট তুলে নেন ম্যাকগিল। তখনো হয়তো এই লেগ স্পিনার ঘুণাক্ষরেও আন্দাজ করতে পারেননি যে এটাই হয়ে থাকবে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে তার সেরা বোলিং ফিগার।
ওয়ানডে অভিষেকের পর ঠিক এক সপ্তাহ পরেই ওই বছরের ২৬ জানুয়ারি ভারতের বিপক্ষে একদিনের ক্রিকেটে শেষবারের মতো মাঠে নামেন ম্যাকগিল। ওয়ানডে ক্রিকেটে মাত্র তিন ম্যাচ খেলে ৩.৫০ ইকোনমি রেটে ৬ উইকেট শিকার করেছেন এই অস্ট্রেলিয়ান স্পিনার। এরপর আর কখনো অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ তো দূর, ওয়ানডে দলেই আর কখনো ডাক পাননি ম্যাকগিল। অথচ তার ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ারে সময় অনুষ্ঠেয় দুটি বিশ্বকাপেই চ্যাম্পিয়ন হয় অস্ট্রেলিয়ানরা। মানে দুর্ভাগা আর কাকে বলে!