প্রেমের ফাঁদ পাতা এই ভুবনে মানুষ অহরহ প্রেমে পড়ে; কখনও জেনেশুনে, কখনও নিজের অজান্তে। ভালোবাসার অনুভূতি ঠিক যতটাই সরল, ততটাই আবার জটিলও। মানুষের মনের অলিগলির থৈ পায়নি মানুষ নিজেই। কখন মন কার প্রেমে পড়ে সে নিজেও জানে না। তবে কে কখন কার প্রেমে পড়ে সেটা না জানলেও প্রেমের পড়ার ক্ষেত্রে "প্রথম দেখা" বেশ প্রচলিত।
অর্থাৎ, "লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট" বাক্যটির সঙ্গে কমবেশি সবাই পরিচিত। যার অর্থ হলো কাউকে প্রথম দেখেই তার প্রেমে পড়া।
কিন্তু, প্রশ্ন হলো- প্রথম দেখাতে আসলেই কী প্রেমে পড়া সম্ভব?
এক কথায়, এ প্রশ্নের জবাব দেওয়া বেশ কঠিন।
কারো কারো মতে, প্রথম দেখায় প্রেম এমন একটি তীব্র অনুভূতি, যা দুজন মানুষের মধ্যকার পোশাক-আশাক, তাদের চলাফেরা, কথা বলা, এমনকি তাকানোর ভঙ্গির ওপরও নির্ভর করে হতে পারে।
এক্ষেত্রে বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞের মতামত হলো, আপনি তখনই প্রথম দেখায় কারো প্রেমে পড়তে পারেন; যখন আপনি তার বাহ্যিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হবেন। তবে এক্ষেত্রে সেটি সত্যিকারের ভালোবাসা হবে কি-না, কিংবা সেটি কতটা স্থায়ী, তা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেন।
এদিকে এক গবেষণায় অবশ্য প্রথম দেখায় প্রেমের বিষয়টির জৈবিক ভিত্তির কথা উঠে এসেছে। গবেষকরা বলছেন, কোনো এক শারীরবৃত্তীয় উপাদানের উপস্থিতিতে এ ধরনের গাঢ় অনুভূতির মুখোমুখি হয় মানুষ। তাৎক্ষণিক ওই আকর্ষণ থেকে ভালো লাগার হরমোন, অর্থাৎ ডোপামিন আর অক্সিটোসিন নিঃসরণও হতে পারে।
২০২৩ সালে একটি ডেটিং সংস্থার এক সমীক্ষা বলছে, বর্তমান প্রায় ৭৩% মানুষ প্রথম দেখায় প্রেমের আকর্ষণ অনুভব করেন।
তবে প্রথম দেখাতে কারো প্রতি অদম্য এই আকর্ষণকে প্রকৃত ভালোবাসা বললে নারাজ কেউ কেউ। ওই গবেষণায় অংশ নেওয়া বেশিরভাগ মানুষ জানিয়েছেন, কাউকে দেখে প্রেমে পড়ার কারণ হলো তার দৈহিক সৌন্দর্য, ব্যক্তিত্ব কিংবা তাদের ব্যবহার ও গুণের প্রতি আকস্মিক মোহ।
প্রায় ৮১% মানুষ জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে একে অপরকে চেনা-জানার মাধ্যমেই প্রকৃত প্রেম গড়ে ওঠে।
সর্বোপরি, এই জটিল বিষয়টি নিয়ে বেশিরভাগ মানুষের মতামত হলো- কোনো মানুষের সঙ্গে আপনি কতটা একাত্মবোধ করছেন বা কতটা সময় একসঙ্গে থাকতে ইচ্ছে করছে, এসব কিছুই ধীরে ধীরে বোঝা যায়। এরপর গড়ে ওঠে প্রকৃত ভালোবাসা।