ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল আজিম আনারের মরদেহ উদ্ধারের খবরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তার ভক্ত সমর্থকরা।
মরদেহ উদ্ধারের কালীগঞ্জে পৌঁছানোর পর এমপির বাড়ি ও দলীয় কার্যালয়ের সামনে আত্মীয়স্বজন, নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা ভিড় করেন। এ সময় তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাদের আহাজারিতে পুরো এলাকায় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।
এমপি আনারের এ ধরনের মৃত্যু তারা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না স্থানীয়রা। দলীয় নেতাকর্মীরা এমপি আনারের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের দাবি জানান।
গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার দর্শনা-গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান। সেখানে গিয়ে তিনি তার ভারতীয় ঘনিষ্ঠ বন্ধু পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বরানগর থানার মলপাড়া লেনের বাসিন্দা স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন বলে জানা গেছে।
পরদিন ১৩ মে দুপুরে চিকিৎসককে দেখানোর উদ্দেশে বেরিয়ে যান। কিন্তু সন্ধ্যায় ফেরার কথা থাকলেও তিনি আর ফিরে আসেননি। উল্টো দিল্লি গিয়ে সেখান থেকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠিয়ে জানান, তাকে আর ফোন করতে হবে না। দরকার হলে তিনি তাকে (গোপাল বিশ্বাস) ফোন করবেন। কিন্তু এরপর থেকে আর কোনোভাবেই তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিকভাবে উৎকণ্ঠা ছড়ায় তার বাংলাদেশের বাসায়। পাশাপাশি গোপাল বিশ্বাসও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এরপর গত ১৮ মে শনিবার বরানগর থানায় একটি নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেন গোপাল বিশ্বাস। অভিযোগ পেয়ে বরানগর থানা তদন্তে নামে। ঘটনার ৮ দিন পর কলকাতার নিউটাউন থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ভারতীয় পুলিশ।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু বলেন, “এমপির এমন মৃত্যু মর্মান্তিক। আমরা শোকাহত। তার মত্যুর রহস্য উদঘাটন করে ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।”
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু আজিফ জানান, মিডিয়ার মাধ্যমে তিনি এমপি আনারের মৃত্যুর খবর জানতে পেরেছেন।
উল্লেখ্য, আনোয়ারুল আজিম আনার ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে একটানা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।