স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা এবং পরিবার কল্যাণ খাতে আগামী অর্থবছরে (২০২৪-২০২৫) ৩,৩৫৬ কোটি টাকা বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রস্তুাব রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে বাংলাদেশের ৫৪তম বাজেটে প্রস্তাব উপস্থাপনা করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুযায়ী আগামী অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতের জন্য প্রস্তাবিত বরাদ্দ দাঁড়িয়েছে ৪১,৪০৭ কোটি টাকা।
বিকেল ৩টায় সংসদের অধিবেশন শুরু হওয়ার পর অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী “টেকসই উন্নয়নের পরিক্রমায় স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রা” শীর্ষক বাজেট বক্তৃতা শুরু করেন। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে রাজস্ব আয়সহ মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। বাকি ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হবে। ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) এরই মধ্যে অনুমোদন করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, “সর্বজনীন স্বাস্থ্য ও পুষ্টিসেবা নিশ্চিত করা সরকারের মূলনীতি। সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এমডিজি অর্জনে সফলতা দেখিয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) ও প্রেক্ষিত পরিকল্পনা-২০৪১ লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছে সরকার।”
গত দেড় দশকে স্বাস্থ্য খাতের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যু, নবজাতকের মৃত্যু হ্রাস পেয়েছে। একই সঙ্গে গড় আয়ুতে উন্নতি হয়েছে। টিকাদান কার্যক্রমে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতের অর্জন জোরদার করতে গত বছরে সাড়ে ১০,০০০ চিকিৎসক, ১৫,০০০ নার্স, ১,০০০ মিডওয়াইফ ও ৬৫০ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ করা হয়েছে। আরও ১০,০০০ নার্স নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের অবদানও তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী।
স্বাস্থ্য ঝুঁকি মোকাবিলায় করোনাভাইরাস মহামারির সময় থেকে সরকার বিশেষ বরাদ্দ দিচ্ছে। আগামী অর্থবছরের জন্য এ বিশেষ বরাদ্দ ২,০০০ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। দেশে উৎপাদিত ওষুধ স্থানীয় চাহিদার ৯৮% পূরণ করছে। এরপর ইউরোপ-আমেরিকাসহ দেড় শতাধিক দেশে রপ্তানি করছে বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে দেশ হতে ৯,৮৮০ কোটি টাকার ওষুধ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সমন্বিত স্বাস্থ্য বিজ্ঞান গবেষণা ও উন্নয়ন তহবিলের জন্য আগামী অর্থবছরে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, “চিকিৎসা শিক্ষার জন্য মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ ও মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মান উন্নয়নকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে। মা ও শিশু স্বাস্থ্যের অগ্রগতি ধরে প্রাতিষ্ঠানিক স্বাস্থ্যসেবার গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবার গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা ডিজিটালাইজড করতে কাজ শুরু করেছে সরকার।”